Mamata On Singur: `মিথ্যাশ্রী বা মিথ্যা ডক্টরেট বলে কিছু থাকলে সেটা ওনার প্রাপ্য`
রাজ্য রাজনীতিতে ফের সিঙ্গুর-প্রসঙ্গ। `টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম`, শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীতে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'মিথ্যাশ্রী বা মিথ্যা ডক্টরেট বলে কিছু থাকলে সে ওনার প্রাপ্য'। সিঙ্গুর-মন্তব্যের জবাবে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, 'সিঙ্গুরেও কিন্তু জমি এখনও ফেরত পায়নি। চাষী চাষ করতে পারছে না। শিল্প নেই, চাষও নেই। বাংলার সর্বনাশের মহানায়িকার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়'। টুইট করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
রাজ্যে তখন বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় বামেরা। স্লোগান উঠেছিল, 'কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ'। কিন্তু সিঙ্গুরের টাটাদের ন্যানো কারখানা তৈরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবল আন্দোলনের মুখে একলাখি গাড়ির কারখানা চলে গিয়েছিল গুজরাটে। সিঙ্গুর-মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল ঘটে। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিঙ্গুরে 'অনিচ্ছুক' কৃষকরা জমি ফেরত দেন তিনি। এখন কী পরিস্থিতি? নবান্ন সূত্রে খবর, সিঙ্গুরে ন্যানো হারানো ৬.৩২ একর জমিতে তৈরি করা হবে শিল্প তালুক। সেখানে শিল্প গড়তে চেয়ে রাজ্যের কাছে ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাছে আবেদন করেছেন ১০ নতুন সংস্থা।
৪ দিনের সফরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে। এদিন শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে বিজয়া সম্মিলনীতে সিঙ্গুর-প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বলেন, 'কেউ কেউ বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে, আমি টাটাকে তাড়িয়ে দিয়েছি, টাটারা চাকরি দিচ্ছে। টাটাকে আমি তাড়ায়নি, সিপিএম তাড়িয়েছে। ওরা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। আমরা জমি ফেরত দিয়েছি'। আর তাতেই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।
এদিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, 'মানুষ হয়তো ভুলে গিয়েছেন, উনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তখন টাটাদের প্রকল্প খারিজ করার জন্য ধরনায় বসেছিল যে লোক, তার নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়। তখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ-সহ গোটা বামফ্রন্ট সরকার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে দিয়েছিল। এত অসত্য বলেন কেন'! তাঁর আরও বক্তব্য, 'পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা দায়িত্ব বামপন্থীরা নিয়েছে। আজকে গোটা বাংলা জ্বলছে। কৃষক আত্মহত্যা করছে। সিঙ্গুরেও কিন্তু জমি এখনও ফেরত পায়নি। চাষী চাষ করতে পারছে না। শিল্প নেই, চাষও নেই। বাংলার সর্বনাশের মহানায়িকার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়'।
সিঙ্গুর ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। টুইট করেছেন, 'সত্যি কথা আপনার কাছে অপ্রিয় হলেও, আমি কিন্তু বলতে অভ্যস্ত। টাটা মোটরসকে আপনি তাড়িয়েছেন'।
এদিকে শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে অখণ্ড বাংলার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন সেই অনুষ্ঠানে বিস্ফোরক পৃথক কোচবিহারের প্রবক্তা অনন্ত মহারাজ। তিনি বলেন, আমরা তো বঙ্গকে ভঙ্গ করতে চাই না। আমাদের কোচবিহারটাকে রিফরমেশন করতে চাই। আপনারা এখন চিন্তা করুন কোচবিহার কোথায় আর ওয়েস্ট বেঙ্গল কোথায়। জিওগ্রাফিক্যালি দেখুন। তারপর বলবেন। কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নয়। কোচবিহার আলাদা'। এর আগে, একাধিকবার উত্তরবঙ্গে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠেছে।