মৌমিতা চক্রবর্তী: দুষ্ট গরু চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল – এই প্রবাদে দলের খলনলচে পাল্টাতে চলেছে আলিমুদ্দিন। শৃঙ্খলবদ্ধ সংগঠনের উর্ধ্বে গিয়ে এবার ‘দরদী’ সিপিএম কর্মীদের দলের সদস্য করতে উদ্যোগী হল আলিমুদ্দিন। এর জন্য লোকাল কমিটি পর্যন্ত পৌঁছতে গেলে যে সিঁড়ি উতরানো বা সময় ব্যয় হয়, তার আর প্রয়োজন নেই। মোদ্দা কথা, পার্টিকে মন থেকে ভালবাসলেই, সদস্য হওয়া যাবে। এমনটাই বার্তা দেওয়া হল আলিমুদ্দিন তরফে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বর্তমান রাজ্য রাজনীতিতে অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে সিপিএম। ২০১১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে গঙ্গার জল যত গড়িয়েছে, সিপিএম-ও ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বাংলায়। ‘কমরেডদের ঝুলিতে’ মাত্র ৬ শতাংশ ভোট ছিল গত লোকসভা নির্বাচনে। কারণ খুঁজতে একাধিকবার আত্মসমীক্ষায় বসেছে আলিমুদ্দিন। আর ওই সমীক্ষায় উঠে এসেছে একটাই তত্ত্ব: বৃদ্ধতন্ত্র সরিয়ে তারুণ্যের ভিড়  বাড়ানো।



পার্টির জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে এই তত্ত্বই বৃহস্পতিবার আরও জোরালো হয়ে ওঠে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। খোদ সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, যেখানে দেশে গড় বয়স চল্লিশের আশপাশে, সিপিএম-এর গড় বয়স ৬৫ হতে পারে না। নিচুতলা থেকে রদবদল করতে এবার বদ্ধপরিকর আলিমুদ্দিন।  সিপিএম-এর রাজ্য কমিটিতে তরুণ নেতাদের আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে জায়গা পেয়েছেন পরেশ পাল, সৈয়দ হোসেন, অলকেশ দাস, ময়ুখ বিশ্বাসরা। তেমনই স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন গৌতম দেব, মানব মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতারা।


আরও পড়ুন- শতবর্ষেও 'হাত-হাতুড়ি' নিয়ে লাইন ঠিক করে উঠতে পারল না সিপিএম


তবে, এবার নিষ্ক্রিয় সদস্যদের দলে রাখতে গররাজি সিপিএম নেতৃত্ব। বরাবরই নিষ্ক্রিয় অংশের নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএম নেতৃত্বের যুক্তি, ‘ভেন্টিলেশনে’ চলে যাওয়া দলটির জন্য আজও যাঁরা নিঃস্বার্থ এবং নির্দ্বিধায় কাজ করে চলেছেন এবার তাঁদেরই সামনের সারিতে নিয়ে আসা হবে। ছাত্র যুবদের আরও অংশগ্রহণের উপর জোর দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, সিপিএম-এ এজি মেম্বার হতে গেলে যে  দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হত সিপিএম কর্মীকে, এবার সহজেই সদস্যপদ পেতে পারেন তাঁরা। পোর্টফোলিওতে থাকতে হবে দলের প্রতি আনুগত্য এবং সক্রিয়তা। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের রাখার আর বিলাসিতা করবে না সিপিএম। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তরুণদের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। সক্রিয় অংশকে সামনের সারিতে আগেও রেখেছে সিপিএম। এটা প্রথম নয়। তবে, একটু নতুন তো বটেই। সিপিএম-ই এই সাহস দেখাতে পারে।”