Dengue: ডেঙ্গিতে মস্তিষ্কে `বিরল` রক্তক্ষরণ, মিরাকল ঘটিয়ে জীবন ফেরালেন চিকিৎসকরা!
ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে ১ শতাংশেরও কম মানুষের এভাবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। সেক্ষেত্রে যাদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়, তাদের মৃত্যু হার অত্যন্ত বেশি। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষকে এক্ষেত্রে প্রাণে বাঁচানো যায় না।
মৈত্রেয়ী ভট্টাতার্য: ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই চিকিৎসায় সাফল্য। সাফল্যের নজির ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে। ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে জ্বরে ভুগছিলেন তপন বিশ্বাস। তাঁর ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন তিনি। আচমকাই তাঁর প্লেটলেট কাউন্ট নামতে শুরু করে। ডেঙ্গির জেরে মস্তিষ্কের ভিতর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কোমায় চলে যান ৬১ বছরের তপন বিশ্বাস। এরপরই মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে জমাট বাঁধা রক্ত বের করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরেও ৭ দিন কোমায় ছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
সাধারণভাবে ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভারের ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। কখনও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তক্ষরণ। কখনও মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ। কিন্তু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়া অত্যন্ত বিরল। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে ১ শতাংশেরও কম মানুষের এভাবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। সেক্ষেত্রে যাদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়, তাদের মৃত্যু হার অত্যন্ত বেশি। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষকে এক্ষেত্রে প্রাণে বাঁচানো যায় না।
এক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মী তপন বিশ্বাস। ডেঙ্গির জেরে তাঁর প্লেটলেট কমতে শুরু করলে, প্রাথমিকভাবে প্লেটলেট দিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু তারমধ্যেই হঠাৎ করে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন ও কোমায় চলে যান। তখনই সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে যে, মস্তিষ্কের মধ্যে তাঁর বিপুল রক্তক্ষরণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তাররা আর দেরি না করে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থাতেই রাতেই ব্রেন সার্জারি করেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচার করে জমাট বাঁধা রক্ত, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় সাবডুরাল হেমাটোমা, তাকে বাদ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে যাতে চাপ বেশি না হয়, তাই খুলির একটা অংশ কেটে পেটের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও তাঁর কোমা স্কোর ছিল ৪। অর্থাৎ তিনি গভীর কোমাচ্ছন্ন ছিলেন।
৭ দিন এভাবে কোমায় থাকেন। তারপর ধীরে ধীরে তাঁর স্বাস্থ্যন্নোতি হয়। ডানদিকে মস্তিষ্কে বিপুল রক্তক্ষরণ হওয়ায়, চিকিৎসকরা আশঙ্কা করেছিলেন শরীরে বাঁদিক পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারে। যেমন হয়ে থাকে ব্রেন স্ট্রোকের ক্ষেত্রে। কিন্তু তপন বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি। ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে পেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন তপন বিশ্বাস। হাঁটাচলা শুরু করেন। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িও ফিরে গিয়েছেন।