ওয়েব ডেস্ক : বিমানসেবিকার মৃত্যু ঘিরে ক্রমশ দানা বাঁধছে রহস্য। তাঁর অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন নিয়ে ক্ষোভ ছিল প্রতিবেশীদেরও। উঠে আসছে একাধিক প্রশ্নও। জট কাটাতে তত্পর পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ক্লারা বংশরাই কংশিক। বছর তেইশের ঝকঝকে তরুণী। শিলংয়ের নামী স্কুল সেন্ট জনস ও  উত্তর পূর্বের সেরা কলেজ লেডিকেনির ছাত্রী ছিলেন ক্লারা। বিমানসেবিকার চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার পর কেষ্টপুরে বাবার ফ্ল্যাটেই চলে আসেন তিনি। তাঁর বন্ধুত্বও ছিল মূলত উত্তর-পূর্ব ভারতের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গেই। ক্লারার ঘনিষ্ঠ বন্ধু  ইভলিন নংখ্রামও শিলংয়ের বাসিন্দা।  ইভলিনের জন্মদিন পালনের পরই রহস্যময় মৃত্যু ক্লারার।


প্রতিবেশীদের বয়ান অনুযায়ী বিমানসেবিকার কাজের যেমন নির্দিষ্ট টাইম-টেবিল নেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিত ছিল। প্রায়শই বন্ধুরা আসত তাঁর ফ্ল্যাটে। গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপান করা ছিল প্রায় রোজকার বিষয়। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন প্রতিবেশীরা। ফ্ল্যাটের সেক্রেটারির কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতেও খালি ইভলিন নন, তাঁর সঙ্গে এক পুরুষ বন্ধুও ছিলেন।


যখন ক্লারার মৃত্যু হয়, বন্ধুদের দাবি, তাঁরা কিছুই টের পাননি। যেটা স্বাভাবিক নয়। ফ্ল্যাটের খোলা জানলা থেকে যে দূরত্বে দেহ পড়েছিল, ফ্ল্যাটের দেওয়াল থেকে ৫ ফুট দূরে ছিল ক্লারার মাথা। জানালা থেকে প্রায় ৪ ফুট কোনাকুনি। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, জানালা দিয়ে কেউ পড়ে গেলে বা ঝাঁপ দিলে এমনভাবে পড়ার কথা নয়। তাহলে কোনাকুনি তাঁর দেহ গেল কী করে?


এখানেই উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন ১- দুর্ঘটনাই যদি হবে, অত রাতে খোলা জানলার ওপরে উঠে কী করছিলেন ক্লারা? প্রশ্ন ২- খুনের তত্ত্বেও রয়েছে যথেষ্ট ধন্দ। তাঁর বাড়িতে আসা বন্ধুদের ক্লারার মৃত্যুর সঙ্গে কোনও যোগ থাকলে সকাল পর্যন্ত ওই ফ্ল্যাটেই তাঁরা রয়ে গেলেন কেন? তাঁদের বেরিয়ে যাওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ ছিল। তবে সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকেও। আর সেখানেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার সম্ভাবনাও সরাসরি ওড়াতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।


সম্ভাবনা ওড়াতে না পারলেও খুনের মোটিভ ও তত্ত্ব কোথাও যেন আলগা হচ্ছে। আর সেখানেই জোরাল হচ্ছে দুর্ঘটনার তত্ত্ব। ক্লারা মত্ত ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি যে বেশি পরিমাণে মদ্যপান করেছিলেন, তা স্বীকার করেছেন বন্ধুরাও। তখনই কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি পড়ে যান। পড়ার সময় ধাক্কা খেয়ে থাকতে পারেন নীচের কোনও কার্নিশে। এবং দেহের অভিমুখ সোজার বদলে হয়ে যায় কোনাকুনি। এমন সম্ভাবনার কথাও মাথায় রেখে এগোচ্ছেন তদন্তকারীরা।


আরও পড়ুন, কেষ্টপুরে বিমানসেবিকার রহস্যমৃত্যু, এখনও স্পষ্ট নয় মৃত্যুর কারণ