নিজস্ব প্রতিবেদন: পারিবারিক আপত্তির জেরে আলিমুদ্দিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দেহ। হাসপাতাল থেকে সোমবার সরাসরি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর দীর্ঘকালের কর্মভূমি কলকাতা হাইকোর্টে। যে দলের আদর্শের প্রতি তাঁর আনুগত্যে কখনও হেরফের হয়নি, সেই দলই তাঁকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করেছিল প্রায় এক দশক আগে। সম্ভবত সেই অভিমান থেকেই আলিমুদ্দিনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে প্রয়াত রাজনীতিকের পরিবার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: ‘খেয়া’ শূন্য করে চলে গেলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়...দেখুন তাঁর ব্যক্তিগত মুহূর্তের কিছু ছবি


পরমাণু চুক্তির অন্তর্গত ওয়ান-টু-থ্রি অংশ নিয়ে বিরোধের কারণে ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে সিপিআই(এম)। সে সময় লোকসভার অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর দল ভোটাভুটিতে অংশ নিয়ে সরকারের বিপক্ষে ভোট দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু, অধ্যক্ষ পদের সাংবিধানিক নিরপেক্ষতায় অটল সোমনাথ জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে ভোটে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। দলের অন্দের তিনি ইউপিএ(এক) সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করেন দশবার লোকসভা ভোটে জেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। এরপরই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এক দশক আগে তাঁকে বহিষ্কার করে প্রকাশ কারাতের নেতৃত্বাধীন সিপিআই(এম)।


৪০ বছর যে দলের সঙ্গে সম্পর্ক, সেই দলের সিদ্ধান্তের একেবারে বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সময়টা এক দশক পেরিয়ে গেলেও, ক্ষতে প্রলেপ পড়েনি। বরং বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আইনজ্ঞ সোমনাথবাবুর মনে অভিমান জমে থেকেছে। মাঝে মধ্যেই স্ত্রী রেণু চট্টোপাধ্যায় ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথাবার্তায় নিজের অভিমান, শ্লেষ প্রকাশ করে ফেলতেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও, দলের একটা বড় অংশের নেতারা ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ রেখে চলেছেন প্রিয় সোমনাথ দা'র সঙ্গে।


সিপিএম-এর মতো 'শৃঙ্খলাপরায়ণ' দল থেকে একবার বহিষ্কৃত হলে তো, দল সহসা কারওকে ফিরিয়ে নেয় না। ফলে, উপায় একটাই, নিজের ভুল স্বীকার করে দলের কাছে ফের আবেদন করতে হয়। কিন্তু, তিনি কি এই পথে দলে ফিরবেন? অভিমানী নেতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, "না"। মনে করা হচ্ছে, সেই অভিমান থেকেই সোমনাথের শব আলিমুদ্দিনে নিয়ে যেতে আপত্তি পরিবারের।


বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কাছে ৮৯ বছর বয়সে সোমবার আত্মসমর্পণ করেন লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।  হাসপাতাল থেকে প্রথমে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হবে কলকাতা হাইকোর্টে, তারপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে আসা হবে বিধানসভা ভবনে। সেখান থেকে তাঁকে গান স্যালুট দেওয়া হবে। পরে নিজের বাসভবনে, এবং শেষে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে প্রয়াত লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। তিনি যেহেতু দেহ দান করে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহ এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হবে।