জিডি বিড়লা স্কুলে ৪ বছরের ছাত্রীকে `যৌন নির্যাতন`, অভিযুক্ত পিটি টিচার
`পিটি টিচার প্রথমে স্কুলের বাথরুমে নিয়ে যায় আমার মেয়েকে। তারপর মেয়ের অন্তর্বাস খুলে গোপনাঙ্গে হাত দেয় ওই শিক্ষক`। এরপর নির্যাতিতার বাবার বিস্ফোরক দাবি, `বাথরুমের মধ্যেই শিশুর গোপনাঙ্গে আঙুল ঢুকিয়ে দেন শিক্ষক।`
নিজস্ব প্রতিবেদন: লজ্জায় মুখ ঢাকল কলকাতা! শহরের এক অভিজাত স্কুলে নার্সারির ছাত্রীকে 'যৌন নির্যাতন' করল স্কুলেরই পিটি টিচার। নারকীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া ৪ বছর বয়সী ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, "যে ধরনের ক্ষত তৈরি হয়েছে তা স্বাভাবিকভাবে হয় না। শারীরিক নির্যাতনের কারণেই এমন ক্ষত হয়েছে।"
বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার পর যখন মেয়ের পোশাক পরিবর্তন করা হচ্ছিল, তখনই প্রথম মায়ের নজরে আসে গোপনাঙ্গের ক্ষত। শিশুর গোপনাঙ্গ থেকে অনর্গল রক্তক্ষরণ হচ্ছিল বলে দাবি নির্যাতিতা শিশুর মায়ের। হতভম্ব মা তৎক্ষণাত্ ফোন করেন শিশুর বাবাকে। শিশুর বাবা বাড়ি ফিরলেই মেয়েকে নিয়ে নেতাজি নগর থানায় যায় পরিবার। পরে সেখান থেকে যাদবপুর থানায় যায় নির্যাতিতা শিশুর পরিবার। পুলিসের তৎপরতায় রাতেই নির্যাতিতা শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। রাতে নির্যাতিতা শিশুর শারীরিক পরীক্ষা না হলেও, সকালে মেডিক্যাল টিম গঠন করে শিশুর শারীরিক পরীক্ষা করার কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এই মেডিক্যাল টিমে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও একজন মনোবিদ রাখা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন- জিডি বিড়লা স্কুলের ঘটনায় দোষীকে কড়া শাস্তির আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর
পরিবারের দাবি, স্কুলের পিটি টিচারের হাতেই যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে তাঁদের মেয়ে। নির্যাতিতার পরিবারের এই অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল রাত থেকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্ত শিক্ষক অভিষেক রায়কে। যেহেতু মেডিক্যাল টেস্ট হয়নি, রিপোর্টও আসেনি, তাই অভিযুক্ত শারীরিক শিক্ষার শিক্ষককে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি পুলিস।
নির্যাতিতা শিশুর বাবার দাবি, মেয়ের সঙ্গে কথা বলেই তিনি জানতে পারেন স্কুলের পুরুষ পিটি টিচার তাঁর মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালায়। শিশুর বাবার অভিযোগ, "পিটি টিচার প্রথমে স্কুলের বাথরুমে নিয়ে যায় আমার মেয়েকে। তারপর মেয়ের অন্তর্বাস খুলে গোপনাঙ্গে হাত দেয় ওই শিক্ষক"। এরপর নির্যাতিতার বাবার বিস্ফোরক দাবি, "বাথরুমের মধ্যেই শিশুর গোপনাঙ্গে আঙুল ঢুকিয়ে দেন শিক্ষক।"
স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, "এমন ঘটনাকে কড়া হাতে দমন করা হবে।" একই সঙ্গে জিডি বিড়লা স্কুলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, "কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন কোনও ঘটনার কথা শোনেননি তিনি। সংবাদমধ্যামেই প্রথম এই ঘটনার কথা জানেন তাঁরা।" স্কুল প্রিন্সিপালের সাফাই, "গতকাল ওদের (নির্যাতিতা ছাত্রীর) কোনও পিটি ক্লাসই ছিল না।"
আরও পড়ুন- জিডি বিড়লা স্কুলে আর যাবে না নাতনি!
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত পিটি টিচার অভিষেক রায় বোলপুরের বাসিন্দা। তিনি গত কয়েকবছর ধরে কলকাতায় রয়েছেন। কবি নজরুল লাগোয়া একটি বাড়িতেই পেইং গেস্ট হিসেবে থাকছেন তিনি।
জিডি বিড়লা স্কুলের এই নারকীয় ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, "বারং বার একই ঘটনা ঘটছে। কিন্তু শাস্তি হচ্ছে কোথায়?" মানসিক পরিবর্তনের প্রয়োজন বলেও জানান পবিত্র সরকার।