নিজস্ব প্রতিবেদন : বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে এক সুন্দর সংসারের স্বপ্ন বুনেছিল সাতাশ বছরের তরুণী। কিন্তু মাত্র নয় মাসের বিবাহিত জীবনেই ভেঙেচুরে চুরমার সেই স্বপ্ন। চাকরি করতেই হবে। নইলে মিলবে না মা হওয়ার অনুমতি। দিনের পর দিন স্বামীর সঙ্গে এই নিয়েই বাড়তে থাকে দূরত্ব। প্রতিদিনের এই লাঞ্ছনা, অপমান সহ্য করতে না পেরে শেষে আত্মঘাতী তরুণী। শুক্রবার বাঁশদ্রোণী এলাকার গড়িয়া-সারদা পার্কে উদ্ধার করা হয় ২৭ বছরের অনন্যা কোঙারের ঝুলন্ত দেহ। গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী অর্ণব সাঁইকে। উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চলতি বছরের মার্চে বেসরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত অর্ণবের সঙ্গে বিয়ে হয় অনন্যার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই চাকরি করার জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয় অনন্যাকে। চাকরি করতে না পারলে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়া, বাড়ি লিখে দেওয়ার নামেও শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা সীমা ছাড়াচ্ছিল বলে অভিযোগ। এরপর শুক্রবার রাতে শ্বশুরবাড়ির ঘরের ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় অনন্যার ঝুলন্ত দেহ।


স্বামী অর্ণবের দাবি, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা দু'জনে একসঙ্গেই টিভি দেখেন। এরপর ঘুমোতে চলে যান। শুক্রবার সকালে উঠে আর অনন্যাকে পাশে দেখতে পাননি। খোঁজাখুঁজির পর পাশের ঘরে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তিনি। নিজেই ওড়না কেটে দেহটি নীচে নামান। অনন্যার বাপের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, খবর পেয়ে তাঁরা যখন অনন্যার শ্বশুরবাড়িতে আসেন, তখনও গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় বিছানায় শোয়ানো ছিল দেহটি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা অনন্যাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ,  টাকার জন্য বিয়ের পর থেকেই অনন্যার উপর অত্যাচার শুরু করেছিল স্বামী অর্ণব ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা। সারদা পার্কের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটেও একই অভিযোগ করেছেন অনন্যা। শেষ চিঠিতে অনন্যা লিখেছেন, প্রতিদিন তাঁকে অপমানিত হতে হত। শুনতে হত তাঁর কোনও যোগ্যতা নেই। চাকরি করতে হবে তাঁকে। মা-কে লেখা চিঠিতে অনন্যা অভিযোগ করেছেন, স্বামী অর্ণবের সঙ্গে তাঁর কোনও শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। চাকরি না করলে বাচ্চা হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছিল অর্ণব।


আরও পড়ুন, লকগেট ভেঙে জলশূন্য দুর্গাপুর ব্যারাজের জলাধার


প্রসঙ্গত মাসখানেক আগে একইরকভাবে চাকরির জন্য শ্বশুরবাড়ির মানসিক চাপ, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয় উত্তরপাড়ার তরুণী পারমিতা। পুনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে পারমিতা চেয়েছিল বেঙ্গালুরুতে স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে। কিন্তু অভিযোগ, তাকে সেই কাজে বাধা দেয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।