নিজস্ব প্রতিবেদন: নরেন্দ্রপুর থানায় চিকিৎসক ও মডেল স্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁদের বছর সাতেকের মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করলেন এক চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর অঞ্চলে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অভিযোগকারীর নাম তুষার চৌধুরী। এখন তিনি উত্তরবঙ্গে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, তার মেয়ে ৬০ শতাংশ বার্ন ইনজুরি নিয়ে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। মেয়ের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। 


তুষারবাবু অবশ্য ঘটনাটি কবে ঘটেছে, তা সঠিক জানতে পারেননি। ২২ সেপ্টেম্বর এক পরিচিতের মাধ্যমে তিনি খবরটি পান। সঙ্গে সঙ্গে সড়কপথে কলকাতায় আসেন এবং প্রথমেই যে বেসরকারি হাসপাতালে মেয়ে ভর্তি সেখানে যান। অল্প সময়ের জন্য দেখতে পান। কিন্তু ডাক্তারের সঙ্গে দেখা বা পরামর্শ করার কোনও সুযোগ পান না। এর পর তিনি নরেন্দ্রপুর পুলিশ স্টেশনে এসে স্ত্রী এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তুষারবাবুর থেকেই জানা গেল, পরের দিনই তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর স্ত্রীও।


থানার অফিসারকে উদ্দেশ্য করে যে দীর্ঘ অভিযোগপত্রটি তিনি লেখেন সেখানে তিনি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ সব অভিযোগ আনেন। তাঁদের বছরসাতেকের মেয়ে তার মায়ের কাছেই থাকত। তবে দাম্পত্য জীবনের অশান্তির জেরে তুষারবাবু ইদানীং উত্তরবঙ্গে থাকতেন। সেই চিঠি থেকেই জানা যাচ্ছে, বোড়ালের বাসিন্দা তুষারবাবু পেশায় একজন শিশু চিকিৎসক। স্ত্রী সায়ন্তনী সেনগুপ্তের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিল না তাঁর। তাঁর দাবি, তাঁর স্ত্রীর জীবনযাপন পদ্ধতি তাঁদের সংসারের পক্ষে সুখকর হচ্ছিল না। তিনি এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে একাধিকবার তাঁদের মত বিনিময়ও হয়েছে। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। তাঁর অভিযোগ, এর জেরে স্ত্রীর দিক থেকে নানারকম প্রতিকূল ব্যবহার পাচ্ছিলেন তিনি। তিনি মনে করছিলেন, স্ত্রীর সঙ্গে আর তাঁর সুস্থ দাম্পত্যজীবন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কেননা, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ তাঁর স্ত্রী মডেলিংয়েও যুক্ত ছিলেন। তুষারবাবুর দাবি, এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী জীবনের দিকে আকৃষ্ট হয়ে সংসারে অবহেলা করছিলেন স্ত্রী। তাঁর অনুমান, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই স্ত্রী এরকম আচরণ করছিলেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি তাঁর স্ত্রীর পক্ষের লোকজনের কাছ থেকে নানা সময়ে নানা রকম হুমকিও পাচ্ছিলেন। এরকম চলতে থাকলে তাঁর জীবনসংশয়ও ঘটতে পারে, মনে হয়েছিল তাঁর। ফলে তিনি আলাদা থাকতে শুরু করেন। গত বছর অগস্ট থেকে তিনি আলাদা থাকতে শুরু করেন। বোড়াল ছেড়ে তিনি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে তাঁর গ্রামের বাড়ি চলে যান। সেখানে চিকিৎসাও শুরু করেন।


তুষারবাবু জানিয়েছেন, মেয়ের বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মতবিনিময় হত। স্ত্রীকে তিনি অনুরোধও করেন, যাতে তিনি নিয়মিত মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। কিন্তু স্ত্রীর অসহযোগিতায় সেটা সম্ভব হয় না। এ নিয়েও তিনি ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত ছিলেন। তাঁর দাবি, তাঁর স্ত্রী মেয়ের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা করে চলেছেন। তার স্বাস্থ্যের প্রতি যথোচিত নজর দেননি। যা মেনে নেওয়া তুষারবাবুর পক্ষে কঠিন হচ্ছিল। চলতি মাসের ৫ তারিখে এই মর্মে তিনি স্ত্রীকে একটি চিঠিও হোয়াটসঅ্যাপও করেছিলেন।


সায়ন্তনীদেবীর  সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। এখন অপেক্ষা তুষারের অভিযোগ মোতাবেক পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়। বা আদৌ নেয় কিনা! শেষ পর্যন্ত ঘটনা কোনদিকে মোড় নেয়, সেটাও দেখার।