কলকাতা: "তুমি রাষ্ট্র চালাচ্ছ মানে, নিজের ইচ্ছামত কোনও নির্দেশ চাপিয়ে দিত পার না", রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বিসর্জন নির্দেশিকাকে ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, "একই দিনে হবে মহরমের তাজিয়া আর বিসর্জনের শোভাযাত্রা"। একই সঙ্গে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানাল, "কোনও বিভেদ রেখা না টেনে, হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই সম্প্রীতির মধ্যে থাকতে দেওয়া হোক।" আক্ষরিক অর্থে আদালতের এই রায়ে সরকারের মুখ পুড়ল বলেই মত বিরোধীদের। তবে অনেকের দাবি, এই রায় আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই গিয়েছে।  "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই রাজ্যে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষই সম্প্রীতির মধ্যে রয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কথা শুনুন। পুলিস আধিকারিক যা বলছে সেটা নয়", আদালতের এই কথাতেই নাকি আদতে জয় হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, দাবি তৃণমূলের একাংশের। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 
এক নজরে দেখে নিন, দুর্গা পুজোর বিসর্জন নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় ঠিক কী কী বললেন কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি- 


* ৪৮ ঘণ্টার টানা বাক-বিতণ্ডার পর রাজ্যের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় এদিন বিসর্জন সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার রায়দানের সময় জানায়, "শান্তি এবং শৃঙ্খলায় সমস্যা হতে পারে, কেবল আশঙ্কার উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র, নাগরিকের ধর্মের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না।" 


* বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি বলেন, বিসর্জন নিয়ে রাষ্ট্র কর্তৃক নেওয়া সিদ্ধান্তের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে একটি সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে হবে। "কেবল বিশৃঙ্খলার স্বপ্ন দেখে কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া যায় না।" 


* পাঁচ দিনের দুর্গা পুজো নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিসর্জন নির্দেশের বিরুদ্ধে ৩টি পিটিশন জমা পড়েছে।  


* "মানুষের বিশ্বাসে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করা যাবে না, দুই সম্প্রদায়ের (হিন্দু-মুসলমান) মানুষের মধ্যেই সাম্য রাখা হোক", স্পষ্ট জানান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি।


* রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই রাজ্যে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষই সম্প্রীতির মধ্যে রয়েছে। একই সঙ্গে আদালত জানায়, "রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কথা শুনুন। পুলিস আধিকারিক যা বলছে সেটা নয়।"       


* "যে ধর্মের মানুষই হোক না কেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্র তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না", জানিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।  


* মহরমের তাজিয়া আর বিসর্জনের শোভাযাত্রা, রুট আলাদা আলাদা করার নির্দেশ হাইকোর্টের। 


* বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থেকে রাজ্য চেয়েছিল একটি নির্দিষ্ট প্রতিষেধক তৈরি রাখা। এটা নিয়েই তরজা চলে। 


* আদালত সরকারের কাছেই প্রশ্ন করে, "রাষ্ট্র প্রধান যখন বলছেই রাজ্যে সম্প্রীতি রয়েছে, তাহলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ রেখা কেন টানা হচ্ছে?"