চিকিত্সককে চড় মারলেন ফেসবুকে `সমাজবন্ধু` প্রচারের হোতা কলকাতা পুলিসের ওসি
হাসপাতালের মধ্যেই চিকিত্সককে সপাটে চড় মারায় অভিযুক্ত যাদবপুরের ওসি পুলক দত্ত।
সন্দীপ সরকার
কলকাতা পুলিসের ফেসবুক পেজে জোরকদমে প্রচার চলছে 'চিকিত্সকরা সমাজবন্ধু, বিপদে আপদে আমাদের সহায়'। একটি স্বপ্লদৈর্ঘ্যের ভিডিও আপলোড করে চিকিত্সদের দরদী ছবি তুলে ধরেছেন আইনরক্ষকরা। তা শেয়ারও হয়েছে বেশ ভাল। পুলিসের এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা। সেই কলকাতা পুলিসের ওসির বিরুদ্ধেই চিকিত্সকে চড় মারার অভিযোগ উঠল।
হাসপাতালের মধ্যেই চিকিত্সককে সপাটে চড় মারায় অভিযুক্ত যাদবপুরের ওসি পুলক দত্ত। মঙ্গলবার চোট পেয়ে সিএমআরআই-এ ভর্তি হন তিনি। চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিত্সক শ্রীনিবাসনকে পুলকবাবু থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন হাসপাতালের চিকিত্সকরা। সাময়িক কাজ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বাড়ির শৌচালয়ে পড়ে যান পুলক দত্ত। চোট লাগে হাতে। রাতে সিএমআরআই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বিকেলে পুলক দত্তের মনে হয়, তাঁর ভালমত চিকিত্সা হচ্ছে না। কর্তব্যরত চিকিত্সক শ্রীনিবাসের সঙ্গে শুরু হয় তাঁর কথা কাটাকাটি। এরপরই চিকিত্সকে চড় মারেন তিনি। ওসির দাবি, তাঁর সঙ্গে চিকিত্সক দুর্ব্যবহার করেছিলেন।
পুলকবাবুর দাবি, প্রেসক্রিপশন নিয়ে চিকিত্সককে দেখান তাঁর স্ত্রী। তখন চিকিত্সক পথ্যের নাম জানতে চান। প্রেসক্রিপশনটি শ্রীনিবাসকে পড়ে দেখতে বলেন পুলকবাবু। চিকিত্সক তখন বলেন, 'ফার্মাসিতে গিয়ে নাম জেনে আসুন'। এটা আমার কাজ নয় বলে পাল্টা জবাব দেন তিনি। তখন চিকিত্সক বলেন, 'আপনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান'। তারপর চড় মারেন তিনি (যাদবপুরের ওসি)। পুলক দত্তের সাফাই, 'পরিবারের সামনে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি'।
চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিত্সকদের গায়ে হাত তোলার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। এই প্রবণতা ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছে কলকাতা পুলিস। বিভিন্ন হাসপাতালেও চিকিত্সকরা সমাজবন্ধুর ফলাও পোস্টার সাঁটা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে সিএমআরআই-এর ঘটনায় কাঠগড়ায় খোদ পুলিস কর্মীই। যা কলকাতা পুলিসের সচেতনতা অভিযানের পক্ষে মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয় বলে মনে করছে চিকিত্সকমহলই। তাদের খোঁচা, আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও।