JU Student Death: স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুতে খুনের মামলা রুজু পুলিসের! কাদের নামে অভিযোগ?
Jadavpur University Student Death: জুটার জেনারেল সেক্রেটারি পার্থপ্রতিম রায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, `১০০ বার চিঠি লিখেছি এর আগে। কিন্তু তারপরও কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর কাছ থেকে।`
পিয়ালি মিত্র: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করল পুলিস। স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ৩৪ (সম্মিলিত অভিসন্ধি) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। হস্টেলের অজ্ঞাতপরিচয় আবাসিকদের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুতে Ragging-এর শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভর্তির ২ দিনের মাথাতেই, বুধবার রাতে হস্টেলের ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বপ্নদীপের। তার গায়ে কোনও পোশাক ছিল না। এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার। ওদিকে পুলিসের একটি দল নদিয়ার বগুলায় গিয়ে স্বপ্নদীপের ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গেও কথা বলবে।
অন্যদিকে, ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রদের ইতিমধ্যেই মেইন হস্টেল থেকে শিফট করানো হয়েছে বলে জানালেন জুটার জেনারেল সেক্রেটারি পার্থপ্রতিম রায়। একইসঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, '১০০ বার চিঠি লিখেছি এর আগে। কিন্তু তারপরও কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর কাছ থেকে। এখন টুইটারে দুঃখ প্রকাশ করে কী লাভ?' প্রশ্ন তোলেন পার্থ প্রতিম। নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকার বগুলা কলেজ পাড়ায় বাড়ি স্বপ্নদীপের। বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু কো-অপারেটিভ ব্যাংকের গাজনা শাখার কর্মী। মা স্বপ্না কুণ্ডু আইসিডিএস কর্মী। দুই ছেলের মধ্যে স্বপ্নদীপ বড় ছেলে। ছোট ছেলে রত্নদীপ স্কুলে পড়ে, মাধ্যমিক দেবে। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল স্বপ্নদীপ। জয়েন্টে চান্স পেয়েছিল। কিন্তু সেদিকে যায়নি। বাংলা ভালোবাসে বলে যাদবপুরে বাংলা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল স্বপ্নদীপ।
স্বপ্নদীপের বাবা জানিয়েছেন, মায়ের সঙ্গে শেষবার যখন স্বপ্নদীপের কথা হয়, তখন সে বলেছিল, 'মা আমার ভীষণ ভয় করছে, আমায় বাড়ি নিয়ে যাও।' এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, কীসের ভয় পেয়েছিল স্বপ্নদীপ? ফোনে স্বপ্নদীপ মাকে আরও বলেছিল যে, হস্টেলে থাকতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। হস্টেলে থাকতে তার ভালো লাগছে না। ভয় লাগছে। জানা গিয়েছে, সোম, মঙ্গল, বুধ হাজিরা খাতায় স্বপ্নদীপের নাম থাকলেও, ক্লাসে খুব মনমরা ও চুপচাপ ছিল। বন্ধুরা কারণ জানতে চাইলে উত্তর এড়িয়ে যায় স্বপ্নদীপ। ফেসবুক অ্যাকাউন্টও ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছিল স্বপ্নদীপ। ঘটনার দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মাকে একাধিকবার ফোন করে। সাড়ে ৯টা নাগাদ শেষবার মায়ের সঙ্গে কথা হয় স্বপ্নদীপের। ছেলের ভয় পাওয়ার কথা মাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারপর থেকে বহুবার ছেলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন মা। কিন্তু ছেলে আর ফোন রিসিভ করেনি।
বৃহস্পতিবারই প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যাদবপুর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে গতকাল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শোকাহত সকলে। স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর দ্রুত কিনারা হোক চাইছেল সকলে।
আরও পড়ুন, Raigunj: বিজেপি প্রধান হতেই ভোটাভুটির নথি-ই খেয়ে নিলেন তৃণমূল প্রার্থী!