বিক্রম দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে টানা জেরার পর গ্রেফতার করেছিল পুলিস। আজ তাকে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করে পুলিস। শেষপর্যন্ত আগামী ১০ দিন অর্থাত্ ২২ আগস্ট পর্যন্ত তাকে পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। প্রসঙ্গত, নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সৌরভের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-'রক্তের খেলা হয়েছে', বাংলার পঞ্চায়েত ভোট তৃণমূলকে আক্রমণ মোদীর


আদালতে এদিন সৌরভ চৌধুরীকে ১৪ দিনে পুলিস হেফাজতের আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। তিনি বলেন, তিনজনের বয়ান রেক্রড করা হয়েছে। সেই বয়ানের ভিত্তিতেই মনে করা হচ্ছে বেশকিছু তথ্য হাতে এসেছে। ওই ঘছনায় কতজন জড়িত রয়েছে তা জানা প্রয়োজন। পাশাপাশি ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার জন্য সৌরভ চৌধুরীকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন।


অন্যদিকে, সৌরভ চৌধুরীর আইনজীবী বলেন, সৌরভ চৌধুরী ও মনোতোষ মণ্ডলের মাধ্যমে হস্টেলে থাকার সুযোগ পায় স্বপ্নদীপ। যেসব ফোন থেকে স্বপ্নদীপের বাবা-মাকে ফোন করা হয়েছিল সেইসব ফোনও সৌরভের নয়। এখন স্বপ্নদীপে বাবা কখনও যাদবপুরে আসেননি। তাই তিনি নাম শুনেই সৌরভের নামে এফআইআর করে দেন। তবে বিচারক দুপক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর ২২ আগস্ট পর্যন্ত সৌরভকে পুলিসে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।


সৌরভের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সরকারি আইনজীবী বলেন, প্রাথামিকভাবে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় সৌরভের নাম উঠে আসছে। নিহত পড়ুয়ারা বাবা সৌরভের নাম বলেছেন। আদালতে আবেদন করেছি, ঘটনার পুনর্নির্মান করা হোক। আর কারা এই ঘটনায় জড়িত তা দেখা হোক। যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের কথামতো ঘটনায় সৌরভের ভূমিকা রয়েছে।


উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলের তিনতলা থেকে নীচে পড়ে যায় বাংলা ফার্স ইয়ারের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডু। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটে গেল তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে তদন্তে উঠে আসছে, ঘটনার দিন রাত রাত ৮টার পরই স্বপ্নদীপের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা শুরু হয়। টানা এক ঘণ্টার সেই পর্বে অসহায় হয়ে পড়ে স্বপ্নদীপ। জিবি মিটিংয়ের পর ফের শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। অশালীন কথাবার্তার সঙ্গে অঙ্গভঙ্গিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সে। সৌরভ চৌধুরী ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন আবাসিক ছিলেন সেখানে। নাম উঠে আসছে আরিফ নামে এক আবাসিকেরও। সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই পর্ব চলার পর, রাত ১০টা নাগাদ স্বপ্নদীপের কাউন্সেলিং করা শুরু করে। কাউন্সেলিং করতে শুরু করে তার রুমমেট। তখন সেখানে রুমমেটের সঙ্গে সৌরভ চৌধুরীও উপস্থিত ছিল।


ওইদিন রাত ১১টা ৪৫ নাগাদ বেশ কয়েকজন আবাসিকের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। প্রশ্ন উঠছে, সেইসময় আদৌ কি কেউ তাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিল? উত্তর খুঁজছে পুলিস। সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি আরিফ নামে অন্য এক ছাত্রকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। কাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিসের স্ক্যানারে রয়েছে স্বপ্নদীপের রুমমেটও। এখন স্বপ্নদীপ পড়ে যাওয়ার পর, তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলে সৌরভ ও আরিফ। বেশ সহানুভূতির সঙ্গেই যদিও তখন কথা বলেছিল সৌরভ। স্বপ্নদীপের মায়ের কাছে নিজেকে 'সাহায্যকারী' বলেও দাবি করে সৌরভ চৌধুরী! কিন্তু আসলে স্বপ্নদীপের মায়ের কাছে সৌরভের দাবির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল ছিল না।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)