JU Student Death: স্বপ্নদীপের অপমৃত্যুতে শিশু সুরক্ষা ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জোড়া চাপে যাদবপুর!

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর অপমৃত্যুর ঘটনায় জোড়া চাপে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করল শিশু সুরক্ষা কমিশন। র‍্যাগিং নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও ইউজিসি গাইডলাইন ঠিকমতো না মানার অভিযোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করেছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। একইসঙ্গে অভিযোগ, এই কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা ট্রমার শিকার হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার সঙ্গে আপোষ করা হয়েছে। দুদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। নিয়ম ভেঙে র‍্যাগিং করার কারণে কেন তাদের বিরুদ্ধে এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? জানতে চেয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। কমিশনের সাফ বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে হস্টেল চত্বরে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে একটি পড়ুয়ার। একইসঙ্গে এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নোটিস ধরিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও।

প্রসঙ্গত, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ঘুরে দেখেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সুদেষ্ণা রায়। পুলিসের উপস্থিতিতে হস্টেলের সেই বারান্দা, স্বপ্নদীপ যে ঘরে থাকত, সেই ঘর পরিদর্শন করেন তাঁরা। কথা বলেন আবাসিকদের সঙ্গেও। সুদেষ্ণা রায়ের সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায়। রানাঘাটে স্বপ্নদীপের মামাবাড়িতে গিয়েও বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায়। শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য, 'এটা অমার্জনীয়, কোনও মার্জনা হয় না।  আমরা শেষ দেখে ছাড়ব'। মারধর, মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি স্বপ্নদীপের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় সিগারেটে ছ্য়াঁকা দেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। হস্টেল ঘুরে অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, 'ছেলেদের হস্টেলে দাদাগিরি চলে। প্রাক্তনীদের দাদাগিরি চলে। বহিরাগতরা আসে। যা ইচ্ছে করে। ওদের কাউকে কিছু বলার সাহসই নেই।' এমনকি এই ঘটনায় পকসো আইনে মামলা করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। কারণ, স্বপ্নদীপের বয়স এখনও আঠেরো হয়নি। তার বয়স ১৭ বছর ১ মাস, সে নাবালক।

স্বপ্নদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সৌরভ চৌধুরী, মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্ত- মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২ (খুন) ও ৩৪ (কমন ইনটেনশন), এই দুই ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ওদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে ইউজিসি-ও। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে ইউজিসি-র প্রতিনিধি দল। এর পাশাপাশি, এদিন হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিং নিয়ে ব্যবস্থা নিক ইউজিসি বা ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশন। এই মর্মে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে। আর কে রাঘবনের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বর্ষের ছাত্রদের উপর র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা কি গ্রহণ করা হচ্ছে? সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্য়বস্থা গ্রহণ করুক ইউজিসি। এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক ইউজিসি। এই মর্মেই জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়ে এদিন হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। যারপরই মামলার করার অনুমতি দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।