পিয়ালি মিত্র: মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সব জানেন। জানেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। বিজেপি তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে। দল সঙ্গে আছে। তিনিও দলের সঙ্গেই ছিলেন, আছেন ও থাকবেনও। কমান্ড হাসপাতালে যাওয়ার পথে দাবি জ্যোতিপ্রিয়র। হেভিওয়েটের স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক ইডি। একদিন অন্তর তাই আজ ফের মেডিক্যাল মন্ত্রীর। সেই কারণেই তাঁকে সিজিও থেকে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কমান্ড হাসপাতালে যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠার পথেই সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ খোলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী দাবি করেন, "মমতাদি-অভিষেক সব জানেন। আমি নির্দোষ। বিজেপি আমাকে ফাঁসিয়েছে। দল আমার সঙ্গে আছে। আমি দলে ছিলাম, আছি, থাকব। খুব তাড়াতাড়ি আমি ছাড়া পাব। আপনারা জেনে রেখে দিন, অলরেডি এরমধ্যে আমি মুক্ত হয়ে গিয়েছি।" 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রেশন দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দুর্নীতিতে মিলেছে বাকিবুর রহমানের সঙ্গে মন্ত্রীর যোগও! কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্পষ্ট দাবি,"আমাকে ফাঁসানো হয়েছে বিজেপিকে দিয়ে। মমতাদি ব্যাপারটা পুরোটাই জানে। দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। বিজেপি আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমি মুক্ত। অলরেডি জেনে নিন, আমি এর মধ্যে মুক্ত হয়ে গিয়েছি। আর ৪ দিনের মধ্যে মুক্ত হয়ে যাব। বিজেপি ফাঁসিয়েছে। মমতা দিয়ে সব জানেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে আমি আছি। অবশ্যই দল আছে আমার সঙ্গে। আমি দলের সঙ্গে আছি।" উল্লেখ্য, শিক্ষা দুর্নীতিতে গ্রেফতারির পর পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ও দাবি করেছিলেন যে তিনি দলের সঙ্গে আছেন! দল তাঁর পাশে আছে!


এখন বিজেপির তাঁকে ফাঁসানো নিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "আসলে ফাঁসানো বক্তব্যটা অন্য কোনও দিকে নির্দেশ করা আছে। এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। এই দুর্নীতিতে প্রান্তিক মানুষের চাল, গম, চিনি লুঠ হয়ে গিয়েছে। কৃষককে কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনও জায়গায় কেউ ন্যূনতম সাহায্যমূল্য পায়নি। ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য থেকে কৃষকদের বঞ্চিত করে চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিস্ট্রিবিউটর মিল মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বছরের পর বছর ভুয়ো রেশন কার্ডের মধ্যে দিয়ে একটা লুঠ সংঘটিত হয়েছে। এই লুঠ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু। বায়োমেট্রিকসে দেখা গিয়েছে, ১ কোটির বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড।"


প্রসঙ্গত ইডি তদন্তে উঠে এসেছে, বাকিবুরের সঙ্গে দিনের পর দিন বালুর বৈঠক হয়। দুজনের বৈঠক হত খাদ্য দফতরে। সল্টলেকেও একটি জায়গায় বৈঠক হত। প্রভাবশালী বাকিবুরের গাড়ি থাকত মন্ত্রীর কনভয়েই। রেশন ডিলারদের সঙ্গে মন্ত্রীর কথাতেই যোগাযোগ রাখত বাকিবুর। অমিত দে-র বয়ানে উঠে এসেছে, তাঁর মোবাইল থেকেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে কথা হত বাকিবুরের। ইডির নজরে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টও। রেশন দুর্নীতি মামলায় নাম উঠে আসা ৩ সংস্থা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই সিএ। এমনকি, ওই ৩টি সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ার পরও একইভাবে টাকার লেনদেন চালাতেন সেই সিএ। কার নির্দেশে কাজ করতেন সেই সিএ? কে ওই ৩ সংস্থাকে অচল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন? উত্তর খুঁজছে ইডি। ইডির নজরে বেশ কিছু বড় বড় চালকল, গমকল মালিকও। ইডি সূত্রে খবর, রেশনের গম, চাল খোলা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করতেন এই সব চালকল, গমকল মালিকরা। তারপর সেই টাকা সরাসরি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে পাঠাতেন তাঁরা।


তদন্তকারী সংস্থার প্রাথমিক অনুমান, ২০/৪০ : ৬০/৮০ শতাংশ রেশিওতে মিলেই রেশন ভাগ করা হত। সেখান থেকে রেশন পাঠানো হত ডিস্ট্রিবিউটারের কাছে। পাঠানোর আগে অফিশিয়াল কাগজপত্রে সরকারি স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হত। দেগঙ্গায় একটি মিল থেকে উদ্ধার হয়েছে ১০৯টি সরকারি স্ট্যাম্প। ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনশিয়াল কমোডিটিস সাপ্লাই করপোরেশন লিমিটেড, চিফ ইন্সপেক্টর, ডিসি (ফুড অ্যান্ড সাপ্লাই) উত্তর ২৪ পরগনা, ব্লক এক্সটেনশন অফিসার অ্যান্ড ইনসপেকটর অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটি, পারচেজ অফিসার উত্তর ২৪ পরগনা, ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার থেকে সাব ইনসপেকটর (ফুড অ্যান্ড সাপ্লাই)- সব সরকারি স্ট্যাম্প-ই মিলেছে!


আরও পড়ুন, Mamata Banerjee: 'কেঁচো খুঁড়লে কিন্তু সাপ বেরোবে', সিঙ্গুর ইস্যুতে মমতার নিশানায় শুভেন্দু!



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)