Municipal Election 2022: পুরভোট স্থগিতের `ক্ষমতা` কার? `অস্পষ্ট` ২৯ বছর পরেও! উষ্মাপ্রকাশ আদালতের
Municipal Election: কমিশন আজ হলফনামা পেশ করে জানায় যে প্রার্থী, তাঁর এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট সহ সব ভোটকর্মীদের ডবল ডোজ ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যে কোভিডের (Covid 19) সংক্রমণ গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে ২২ জানুয়ারি ৪ পুরনিগমের ভোট (Municipal Election) স্থগিতের দাবি উঠেছে। অন্ততপক্ষে ১ মাস ভোট পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে আবেদন জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata High Court)। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানিতে আজ হলফনামা জমা দিয়ে ভোট ব্যবস্থার হালহকিত আদালতকে জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। তবে শুনানি শেষ হলেও, এখনও আদালত রায় ঘোষণা করেনি। পরে ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে অর্ডার। ওদিকে, রাজ্য না কমিশন, কে পুরভোট স্থগিত করার নির্দেশ দিতে পারে? পুরভোট স্থগিত করার 'ক্ষমতা' সংক্রান্ত ইস্যুতে আদালতের 'উষ্মা'র মুখে পড়তে হল দুপক্ষকেই।
আজকে পুর নির্বাচন মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি আনন্দ কুমার মুখার্জির ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিপর্বে হলফনামা পেশ করে কমিশন আদালতকে জানায় যে, আসন্ন ৪টি পুরসভার বুথের সংখ্যা ২,৩৮৩। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৮৮৬। মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬৬ জন। ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে এমন ৩০ শতাংশ ভোট কর্মী রিজার্ভ রাখা আছে। প্রার্থী, তাঁর এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট সহ সব ভোটকর্মীদের ডবল ডোজ ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আনুমানিক এক-একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ৪৫০ থেকে ১২০০-র মত ভোটার আছেন। ভোটাররা ভোট দেবেন 'ব্যাচ' হিসেবে। মাত্র একজন ভোটারকেই পোলিং অফিসারের সামনে দাঁড়াতে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব (Social Distancing) বাধ্যতামূলক। ভোটগ্রহণের অন্তিম ১ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে কনটেইনমেন্ট জোনের (Containment Zone) ভোটার ভোট দিতে পারবেন। করোনা আক্রান্ত (Covid Positive) রোগীরাও সেই সময়ই ভোট দিতে পারবেন। সেইজন্য ওই সময় ভোট কর্মীরা পিপিই কিট (PPE) পরে থাকবেন। আর এই পুরো বিষয়টি নিয়ে কমিশন গণমাধ্যমে প্রচার চালাবে।
প্রসঙ্গত, এদিন আদালতে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ভোট পিছনোর পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেন,"পশ্চিমবঙ্গ সংক্রমণে ১ ম স্থানে রয়েছে। তাই নির্বাচন পেছানো উচিত। দেশের প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের অক্সিজেন নিয়ে সতর্ক করেছে। আমরা বলছি শুধু ১ মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক।" অন্যদিকে এই দাবির প্রেক্ষিতে কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, "আইনে বলা আছে, রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে। তাই যদি ভোট পিছতে হয়, তাহলে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ভোট পিছিয়ে দিতে পারে না।"
যার প্রেক্ষিতে আবার আদালত প্রশ্ন ছোঁড়ে যে, "তাহলে কি রাজ্যের ক্ষমতা বেশি?" উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী সম্রাট সেন জানান,"কমিশন দিনক্ষণ ঠিক করবে। রাজ্য সুপারিশ করতে পারে।" উল্লেখ্য, ভোটের দিনক্ষণ কে স্থির করে? কার 'ক্ষমতা' রয়েছে পুরভোট স্থগিত করার? এই নিয়ে সওয়াল-পাল্টা সওয়ালের সময়ই আদালতের 'উষ্মা'-র মুখে পড়ে রাজ্য ও কমিশন উভয়পক্ষ-ই। উষ্মাপ্রকাশ করে আদালত বলে যে, "আপনারা বলছেন রাজ্য সুপারিশ করবে। কিন্তু কমিশন বলছে, রাজ্য দিনক্ষণ ঠিক করবে। এটা আশ্চর্যের যে এই আইন চালুর ২৯ বছর পরে আদালতে রাজ্য এবং কমিশন দু'ধরনের বক্তব্য বলছেন।"
যার প্রেক্ষিতে কমিশন আবার পাল্টা আদালতকে জানায় যে, "ভোট পিছনোর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের জন্য রাজ্যের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারাই এই পরিস্থিতিটা দেখছে। কমিশনের ক্ষমতা নেই ঘোষিত নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার। যদি না রাজ্য বিপর্যয় ঘোষণা করে। একমাত্র রাজ্য বিপর্যয় ঘোষণা করে নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। কমিশন পারে না। আইনে সেই সুযোগ নেই।"
আরও পড়ুন, পুণ্যস্নানের আগেই 'বিপত্তি' গঙ্গাসাগরে, 'এয়ারলিফ্ট' করা হল ২ জনকে