Kolkata Earthquake Special: ধূলিসাৎ হতে পারে ৭০% বাড়ি, ১ মিনিট ভূমিকম্পেই `ধ্বংসস্তূপ` হতে পারে কলকাতা
কোন জোনে কলকাতা? শহরের কোন কোন এলাকা সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক?
কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: আফগানিস্থানে ভয়াল ভূমিকম্পের পর স্বস্তিতে থাকার কথা নয় এই শহরের। কলকাতার মাটির নীচের হাল কেমন জানেন আপনি? ভূমিকম্পে টিঁকবে তো কলকাতা? উত্তর বলছে, বউবাজার কাণ্ড-ই ছিল এর পূর্বাভাস। ট্রেলার মাত্র।
কলকাতা কতটা ভূমিকম্পপ্রবণ?
ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, কলকাতা আগে ছিল জোন-২ তালিকায়। অর্থাৎ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা কম। ২০১২-র পর থেকে কলকাতা জোন-৩-এর তালিকাভুক্ত। অর্থাৎ বছরে ২-১টা ভূমিকম্প হতেই পারে। আমাদের দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দিল্লি, হরিয়ানা ও পঞ্জাব জোন-৪-এর আওতায়। আর আন্দামান হল জোন-৫।
এবার প্রশ্ন, মাটির নীচে ঝটকা হলে কলকাতার কী হবে?
পলিমাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে কলকাতা। গঙ্গার নীচ দিয়ে রয়েছে ফল্ট লাইন। যার নাম ইওসিনহিঞ্জ। এই লাইন মুর্শিদাবাদ পেরিয়ে ঢুকেছে বাংলাদেশে। তাই উত্তর-পূর্ব ভারত, সিকিম, মায়ানমার-ভারত সীমান্ত বা বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্প হলে এই ফল্ট লাইন ধরেই কলকাতাতেও কম্পন অনুভূত হয়।
কম্পন হলে কলকাতার মাটির নীচে কী হতে পারে?
গঙ্গার পলির স্তর জমে জমে তৈরি হয়েছে কলকাতার জমি। ভূগর্ভে কোথাও কোথাও ৪০০০ মিটার পর্যন্তও রয়েছে পলিরাশির গভীরতা। এখন যুগ যুগ ধরে বহুতল, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, ব্রিজ নির্মাণের ফলে ভূপৃষ্ঠের ভারসাম্যের ক্ষতি হয়েই চলেছে। কলকাতার মাটির সবচেয়ে উপরের স্তরের নাম কালীঘাট পলিরাশি। এর গভীরতা ৪০ মিটার। এর নীচে যদি লাগাতার কম্পন চলে, তাহলে কালীঘাট পলিরাশির নীচের স্তরে থাকা বালি, কাঁকড়, নুড়ির স্তরে শূন্যস্থান তৈরি হয়। এই স্তর ভঙ্গুর। যা প্রায় ৯৬ মিটার পর্যন্ত গভীর।
এখন কলকাতা শহরের পুরোটাই প্রায় কংক্রিটের চাদরে মোড়া। তাই যখন মাটি শুকিয়ে যায়, পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে জল শোষণ করে নেয় মাটি। ফলে সূক্ষ্ম পলিরাশি জলের সঙ্গে ভেসে বাইরে বেড়িয়ে আসে। তাই ফাঁপা হয়ে যায় মাটির তলা। ফলে উপরের কোনও নির্মাণ বা গাছগাছালি - যে কোনও কম্পনেই উপড়ে পড়তে পারে বা তাতে ফাটল ধরতে পারে। তাই কলকাতার জন্য ছোট মানের কোনও ভূমিকম্প ১ মিনিট স্থায়ী হলেই শহরের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা আছে।
ভূমিকম্প হলে ক্ষতির দিক থেকে কলকাতার সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা হচ্ছে শ্যামবাজার, সল্টলেক, রাজারহাট, ওয়েলিংটন, বউবাজার, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক, পার্ক সার্কাস, খিদিরপুর, কলেজস্ট্রিট, ঠাকুরপুকুর। অন্যদিকে মাঝারি ক্ষতির অঞ্চল তারাতলা, বেহালা, গড়িয়া। তাই নগরায়ন বা কলকাতা বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বা হোলিস্টিক ডেভলপমেন্ট প্ল্যান প্রয়োজন। এমনটাই বলছেন ভূবিজ্ঞানী পৃথ্বীশ রায় থেকে ভূমিরূপ বিশেষজ্ঞ সুজীব কর।
আরও পড়ুন, Afghanistan Earthquake: চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন, আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়াল