Honeytrap: পাক `বাবা-মেয়ে`র হানিট্র্যাপ! গুপ্তচরবৃত্তি বিহারের যুবকের, গ্রেফতার কলকাতায়
ওই যুবকের মাধ্যমে একাধিক প্রি-অ্যাক্টিভেটেড ভারতীয় সিম কার্ড জোগাড় করে নেয় ওই মহিলা ও তার `বাবা`। ওই যুবককে দিয়ে তাঁর ফোনে `নোটক্যাম` বলে একটি অ্যাপ ইনস্টল করায় `বাবা-মেয়ে` যুগল। এই `নোটক্যাম` অ্যাপের বৈশিষ্ট্য হল, এই অ্যাপে কোনও ছবি তুললে সেই ছবির নির্দিষ্ট লোকেশন, তার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশও উঠে যায়।
পিয়ালি মিত্র: পাকিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিহারের বাসিন্দা এক যুবককে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিস। ধৃতের নাম ভক্তবংশী ঝাঁ। বিহারের দ্বারভাঙার বাসিন্দা ওই যুবক। দিল্লিতে একটি নামী ক্যুরিয়র সংস্থায় কর্মরত ছিলেন ওই যুবক। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে কর্মরত অবস্থাতেই গত অক্টোবরে ফেসবুকে আরুষি শর্মা নামে এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় ওই যুবকের। মহিলা জানায়, পাঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা সে। এরপর দুজনের মধ্যে কথা শুরু হয়।
অভিযোগ, ওই যুবককে হানিট্র্যাপে ফেলে আরুষি শর্মা নামের ওই মহিলা। দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সেক্স চ্যাটও হয়। এরপরই ওই মহিলার 'বাবা'র পরিচয় দিয়ে আরেকজন কথা বলতে শুরু করে। কথা বলতে শুরু করার পর ওই যুবকের মাধ্যমে একাধিক প্রি-অ্যাক্টিভেটেড ভারতীয় সিম কার্ড জোগাড় করে নেয় ওই মহিলা ও তার 'বাবা'। যে সিমকার্ডগুলির ওটিপি আসত যুবকের কাছে। যুবক সেই ওটিপি তাদের শেয়ার করে। এরপর তাদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপেও কথা বলা শুরু হয়।
এর কিছুদিন পর ওই মহিলা যুবককে বলে যে, তার বোন ডিফেন্স করেসপনডেন্ট। বোনকে ডিফেন্স করেসপনডেন্ট বলে পরিচয় দিয়ে সেনা ছাউনির ছবি চেয়ে পাঠায় ওই মহিলা। বলে যে, তার বোনের দরকার লাগবে। এখন এই ছবি তোলার জন্য বিহারের বাসিন্দা ওই যুবককে দিয়ে তাঁর ফোনে 'নোটক্যাম' বলে একটি অ্যাপ ইনস্টল করায় 'বাবা-মেয়ে' যুগল। এখন এই 'নোটক্যাম' অ্যাপের বৈশিষ্ট্য হল, এই অ্যাপে কোনও ছবি তুললে সেই ছবির নির্দিষ্ট লোকেশন, তার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশও উঠে যায়। এভাবে দিল্লির বিভিন্ন সেনা ছাউনির ছবি ও তথ্য ওই যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় 'বাবা-মেয়ে' যুগল।
এরপর ওই যুবক বদলি হয়ে কলকাতায় চলে আসে। ৩ মাস ধরে কলকাতাতেই রয়েছে সে। কলকাতায় রিপন স্ট্রিটে থাকত ওই যুবক। কলকাতায় আসার পর কলকাতার সেনাবাহিনীর দফতরের ছবিও পাঠায় ওই যুবক। শেষে মিলিটারি ইনটেলিজেন্স থেকে পাওয়া তথ্যর ভিত্তিতে ওই যুবককে তলব করে কলকাতা এসটিএফ। তারপরই তাকে গ্রেফতার করে। অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে মামলা রুজু করে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধৃত যুবকের মোবাইল থেকে উদ্ধার হয়েছে সেক্স চ্যাট সহ নানা ছবি। মিলেছে হানিট্র্যাপে পড়ার প্রমাণও।
তদন্তে জানা গিয়েছে, 'বাবা-মেয়ে' পরিচয় দেওয়া দুজনেই PIO বা পাক ইনটেলিজেন্ট অফিসার। হানিট্র্যাপের মাধ্যমে পাক ইনটেলিজেন্ট অফিসার 'বাবা- মেয়ে' যুগল জালে ফেলে বিহারের যুবককে। তারপর জিপিএস বেসড অ্যাপের মাধ্যমে তোলা দিল্লির প্রতিরক্ষা দফতর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসের ছবি যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় তারা। নোটক্যাম অ্যাপের মাধ্যমে তোলা যেসব ছবি ওই যুবক পাঠাত. সেগুলি নির্দিষ্ট করে কোথায় অবস্থিত, তার আশেপাশে কী কী রয়েছে সেই যাবতীয় তথ্যও পেয়ে যেত অভিযুক্তরা।
আরও পড়ুন, Jadavpur University: যাদবপুরে আসবে ইসরোর প্রতিনিধি দল, তৃতীয় নোটিস শিশু সুরক্ষা কমিশনের