Kuntal Ghosh: সায়নীকে টাকা দেওয়া প্রসঙ্গেই কুন্তলের মুখে এক বলিউড অভিনেত্রী ও টলিউড অভিনেতার নাম!
কুন্তল জানিয়েছেন, তাঁর একটি পানশালা উদ্বোধনের জন্য বলিউডের এক অভিনেত্রীকে তিনি তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। সেই বলিউড অভিনেত্রীকে কেন ডাকা হচ্ছে না? টলিউডের এক অভিনেতাও অনুষ্ঠানের জন্য টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি কুন্তলের।
পিয়ালি মিত্র: সায়নীকে কোনও ফ্ল্যাট কিনে দেননি বা সুবিধা পাইয়ে দেননি। সায়নীর সঙ্গে কোনও টাকার লেনদেন হয়নি, প্রকাশ্যে এমন দাবি করলেও ঘনিষ্ট মহলে টাকার লেনদেন কথা স্বীকার করেছেন কুন্তল। তাঁর দাবি, ২০২১ সালের অগস্টে সায়নীর সঙ্গে আলাপ হয়। তারপর কুন্তলের পুজো সহ চারটি সমাজসেবামূলক কাজে উদ্বোধন বাবদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেন তিনি। পিআর-এরের মাধ্যমে সেই টাকা দেওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে কালীঘাটের একটি বস্ত্র বিতারণ অনুষ্ঠানও ছিল। সেই বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের জন্য ৩০ হাজার টাকা দেন কুন্তল। তবে সায়নী নন, ঘনিষ্ঠ মহলে কুন্তল জানিয়েছেন, তাঁর একটি পানশালা উদ্বোধনের জন্য বলিউডের এক অভিনেত্রীকে তিনি তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। যদিও সেই প্রোগ্রাম হয়নি। কিন্তু টাকাও ফেরত পাননি তিনি। তাই সেই বলিউড অভিনেত্রীকে কেন ডাকা হচ্ছে না? কোন অজ্ঞাত কারণে ডাকা হচ্ছে না? প্রশ্ন তোলেন কুন্তল। টলিউডের এক অভিনেতাও অনুষ্ঠানের জন্য টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি কুন্তলের।
ইডির নজরে সায়নীর নামে গল্ফগ্রিনের দুটি ফ্ল্যাট। কারণ, ৮০ লক্ষ টাকা দামের ফ্ল্যাটের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ৬০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন বলে দাবি সায়নীর। বাকি ২০ লাখ টাকা সেভিংস ভেঙে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সায়নী। যদিও তদন্তকারীদের অনুমান বুকিং বাবদ যে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়, তা কুন্তলের থেকে পেয়েছিলেন তিনি। তবে তা অস্বীকার করেছেন সায়নী। তাঁর দাবি, বাকি ২০ লক্ষ টাকা তাঁর এবং পরিবারের জমানো টাকা থেকে দিয়েছিলেন। এখন সায়নীর এই দাবি কতটা সত্য তা নিশ্চিত হতে ব্যাঙ্ক ঋণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি, কে ঋণ শোধ করছে, ব্যাঙ্কের ঋণ ছাড়া অন্য কারও ঋণ নিলে থাকলে তার প্রমাণ্য নথি, সেভিংস ভেঙে টাকা দিয়েছেন বলে যে দাবি করছেন সেই সংক্রান্ত সব নথি জমা দিতে বলা হয় সায়নী ঘোষকে। ৫ জুলাইয়ের মধ্যে সেই নথি জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে ৫৩০ পাতার নথি ইডি দফতরে পাঠিয়ে দেন সায়নী।
কিন্তু, সায়নী ঘোষের পাঠানো সেই নথিতে সন্তুষ্ট নয় ইডি। কারণ, ইডির বক্তব্য সেই নথি অসম্পূর্ণ। ইডি সূত্রে খবর, সায়নী নিজের নামে কেনা ফ্ল্যাটের তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু জমা দেননি মায়ের নামে কেনা ফ্ল্য়াটের লেনদেনের নথি। এছাড়া আরও একটি ফ্ল্যাটের নথি দেননি। পাশাপাশি কলোনি ল্যান্ড নামে অন্য একটি সম্পত্তি বিক্রির নথিও দেননি। ওই সম্পত্তির নথিও চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। চিঠি দিয়ে সায়নী জানিয়েছেন, বাকি নথি তিনি পরে জমা দেবেন। কিন্তু এই নিয়ে ইডি আধিকারিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
ইডি সূত্রে খবর সায়নী ঘোষ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য় মিলেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই সায়নী ঘোষকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সায়নীকে ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে বেশকিছু প্রশ্ন উঠে আসে। সেই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে চাই নথি। তাই সেইসব তথ্যপ্রমাণ দিতে বলা হয় সায়নীকে। কিন্তু তিনি যে নথি পাঠিয়েছেন তাতেও বেশকিছু অসংগতি রয়েছে বলে দাবি ইডির।
আরও পড়ুন, WB Panchayat Election 2023: বাংলার ভোটে লে থেকে এয়ারলিফটে বাহিনী, নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত কমিশনের