কালীঘাট: ফেসবুকের সবথেকে সুন্দর দেওয়াল লিখন দেখেই এই লেখাটা লিখতে বসা। স্ট্যাটাস! দেখো আমি কত বড়, এটা দেখানো নয়, বরং এটা বোঝানো, দেখানো, দেখো আমি কী ভাবছি। দেওয়াল লিখনে সৃজার একটা ছোট্ট লাইন, যেখানে রাজনীতি আর রাজ্য নিয়ে সব থেকে সুন্দর বাক্যটা লেখা ছিল। "১৯ মে রাজ্যের সবথেকে উষ্ণতম দিন"। সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি, কখনও হাওয়া আর ঝাপটা, তারপর আবার শান্ত আবহাওয়া, তারপর আবার 'টিপ টিপ বর্ষা পানি'। ১৯ মে রাজ্যের তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ, আর সর্বনিন্ম, দুটোই। 'সর্বোচ্চ ২১১ আর সর্ব নিন্ম ৩২'। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কালীঘাটে তখন উৎসব। আর আলিমুদ্দিনে তখন 'শববাহী সিপিএম'কে নিয়ে শোকের কান্নায় ক্লান্ত 'কমরেড'। বাংলায় কমিউনিজিমের ধারকদের শেষ অধ্যায় রচনা হয়ে গিয়েছে, নতুন সূর্যোদয় শুরু হয়ে গিয়েছে 'নিউ কমিউনিজমের'। ভিক্টরি। কালীঘাটের হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটে টালির বাড়ির বাইরে তখন লোকারণ্য। এত মানুষ আজানিয়া এর আগে কখনও দেখেনি। কয়েকদিন আগেই তো দোল খেলেছিল ছোট্ট আজানিয়া। লাল, হলুদ, সবুজ, গোলাপি আরও কত রং দিয়ে ভূত হয়েছিল ও আর ওর আদরের ঠাকুমা। আজও একরকম। তাহলে কী আজ আরও একটা দোল? কিন্তু সবাই শুধু সবুজাবৃত কেন? আজানিয়ার মনে হচ্ছিল, একটা একটা গোটা গাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোষাকগুলো আলাদা রঙের কিন্তু মাথা থেকে মুখ সব সবুজ, ঠিক যেমন গাছের গোঁড়ার রঙ কখনও সবুজ কখনও ধূসর কিন্তু আগাটা একেবারে সবুজ। সবাই ঠাকুমার নামে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করছে। আর হাতের আঙুল দুটোকে ভি-এর মত দেখতে করে ক্যামেরার সামনে ছবি তুলছে। আজানিয়া তো কিছুতেই বুঝতে পারছিল না। পিছন থেকে ঠাকুমা এলেন, বললেন, 'এই দেখো, ওইরকম নয়, এমন করে। আঙুল দুটোকে একে অপরের থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখবে। এটাকে বলে ভিক্টরি সাইন'। আনাজিয়া তাই করলেন। ঠাকুমার থেকে আজানিয়া শিখলেন এটা ভিক্টরি সাইন, জয়ের পর এমনটা দেখাতে হয়। আদপে ওই ছোট্ট আজানিয়া পড়ে ফেলল জয়ের প্রথম অধ্যায়ের পাঠ। জয় হওয়া মানে অমনটা দেখাতে হয় আর জয়ের নেতা মানে ঠাকুমা। 


কালীঘাটের অনেক ছবি অনেক মুহূর্তগুলোর মধ্যে এইটাই বোধহয় শ্রেষ্ঠ ছবিটি হয়ে থেকে গেল। ভাইপো অভিষেকের মেয়ে আজানিয়া। আর সম্পর্কে ঠাকুমা রাজ্যের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী যিনি দু'বার বাংলার মসনদে, একমাত্র 'নেত্রী' যিনি স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে বাংলায় একক পার্টির সরকার গড়ার নজির করে রাখালেন। আর গোটা ইতিহাসই সাক্ষ্মী থাকল নাতনিকে ঠাকুমার 'ভিক্টরি' শেখার পাঠশালার। আজ আজানিয়া কিছুই বোঝার মত না, খুবই ছোট ও। কিন্তু আজ থেকে কয়েকটা দিন সময় পর যখন অনেকের থেকে 'প্রবীন' হবে ও, সেদিন 'ভিক্টরি' শেখার পালাটাই হবে ওর জয়ের প্রথম স্বাদ পাওয়ার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা। তারপর জীবনের প্রতিটা জয়েই আজানিয়ার কাছে 'ভিক্টরি' থাকবে মিথ। সেই মিথ, যা বাংলার মুখে মুখে ঘুরবে, 'তৃণমূল ২১১ বাম ৩২'।