ভাঁড়ে মা ভবানী রাজ্যে দুর্গাপুজোয় মমতার ৭০ কোটির খয়রাতি ঘোষণায় উঠছে প্রশ্ন
গতবার প্রতিটি দুর্গাপুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেড়েই চলেছে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ। কেন্দ্রে যখন চালু হয়ে গিয়েছে সপ্তম বেতন কমিশন তখন রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে চলছে দীর্ঘ টালবাহানা। খোদ মুখ্যমন্ত্রীও বারবার বলেছেন, দেনা শোধ করতে করতে অবস্থা নাজেহাল রাজ্যের। এমতাবস্থায় দুর্গাপুজোর জন্য কল্পতরু হয়ে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা। বিদ্যুতের বিলে মিলবে ২৫ শতাংশ ছাড়। মহিলা পরিচালিত পুজোগুলি পাবে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা। আর পুর পরিষেবার জন্য একটা টাকাও দিতে হবে না ক্লাবগুলিকে।
গতবার প্রতিটি দুর্গাপুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এবার এক লপ্তে তা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন,'আমি জানি, আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে, মন্দা চলছে, তথৈবচ অবস্থা। কিন্তু পুজো তো করতে হবে। এবার আপনাদের জন্য ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করছি। মহিলাদের পুজোয় অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে দেবে পুলিস। অর্থমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, কলকাতা পুলিশ কমিশনার ও ডিজির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হলে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে খসবে ৭০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে মমতা ঘোষণা করেছেন, পুর পরিষেবা, দমকলের জন্যেও টাকা দিতে হবে না। ফলে রাজ্যের কোষাগারে এক টাকাও আসবে না। কিন্তু পুর পরিষেবা দেওয়ার জন্য খরচ করতে হবে পুরসভাকে।বিদ্যুতের বিলে ছাড় দেওয়া হবে ২৫ শতাংশ। এতে ধাক্কা খাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কার্নিভ্যালের খরচ। সেটাও করে থাকে রাজ্য সরকারই।
রাজ্যের মাথায় দেনা ২ লক্ষ ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ। প্রতিবছর ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হয় রাজ্যকে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ লাগু হলে অতিরিক্ত খরচ হবে ১২ হাজার কোটি টাকা। সাড়ে ৩ বছর ধরে তা ঝুলে রয়েছে। এর সঙ্গে বকেয়া রয়েছে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা। অনেকেই বলছেন, কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন রাজ্যে শিল্পসংস্থাকে প্রণোদনা ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু পুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক সাহায্য-সহ নানা সুযোগসুবিধা দিয়ে কী লাভ?
আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ভিআইপি গেট তুলে দিতে পরামর্শ মমতার, বললেন মানুষের ভোগান্তি বাড়ে