ব্যক্তিগত কম্পিউটারে গোয়েন্দা নজরদারি নির্দেশিকার প্রত্যাহারের দাবি মমতার
ব্যক্তিগত তথ্য ও ব্যবসায়িক তথ্য কি দিয়ে দেবেন? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর।
কমলিকা সেনগুপ্ত
ব্যক্তিগত কম্পিউটারে নজরদারি চালাতে দেশের ১০টি গোয়েন্দা সংস্থাকে সম্মতি দিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সকালেই গর্জে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধেয় অ্যালেন পার্কে ক্রিসমাসের অনুষ্ঠানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, অবিলম্বে এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করতে হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কম্পিউটারের ওপরে নজরদারি চালাতে পারবে আইবি, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো, এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট, সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্স, ডাইরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইনটেলিজেন্স, সিবিআই, এনআইএ, র, ডাইরেক্টরেট অব সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স, দিল্লির পুলিস কমিশনার যে কারও কম্পিউটারের ওপরে নজরদারি চালাতে পারে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ''আমি চিন্তিত। সাধারণের কম্পিউটারে নজরদারি চালানো হবে। ব্যক্তিগত তথ্য ও ব্যবসায়িক তথ্য কি দিয়ে দেবেন? কারও কি ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকবে না?''
এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা ঘিরে তুমুল বিতণ্ডা শুরু হয় রাজ্যসভায়। চেঁচামেচি শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। জেটলির দাবি, ২০০৯ সালে মনমোহন সিং জমানার নির্দেশিকাটি ফের জারি করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে খেলছে কংগ্রেস। অযথা তিলকে তাল করছে তারা। জেটলির দাবি মিথ্যা বলে পাল্টা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,''অরুণ জেটলি ঠিক বলছেন না। ২০০৯ সালে আলাদা পরিস্থিতি ছিল। আমরা এখন পরাধীন হচ্ছি''।
এদিন আবার তৃণমূলের অফিসিয়াল টুইটারে একটি বিবৃতি দিয়ে ২০০৯ ও ২০১৮ সালের নির্দেশিকার মধ্যে ফারাক তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নজরদারি চালাতে পারতেন। তবে স্বরাষ্ট্রসচিবের অনুমতিক্রমে আইজি পর্যায়ের আধিকারিকদের সেই অধিকার ছিল। কিন্তু নতুন নির্দেশিকায় ১০টি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সেই অধিকার দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই এমনটা করা হয়েছে। আইনটি তৈরি হয়েছিল ২০০৯ সালে মনমোহন সিং জমানায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নজরদারির অনুমতি দেবেন স্বরাষ্ট্রসচিব।
এদিন কেন্দ্রকে বিঁধেছেন সিপিএম জেনারেল সেক্রেটারি সীতারাম ইয়েচুরিও। তাঁর প্রশ্ন, দেশের মানুষদের সঙ্গে কি সরকার অপরাধীর মতো আচরণ করবে! ইয়েচুরি টুইট করেছেন, দেশের প্রত্যেকটি মানুষের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করার ব্যবস্থা একেবারেই অসাংবিধানিক। একটা কথা বলাই যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা নিয়ে আগামী কয়েকদিন উত্তাল হতে চলেছে দেশের রাজনীতি।
আরও পড়ুন- রথযাত্রার কী দরকার? প্রশ্ন ফারুখের, নবান্নে মমতার সঙ্গে সাক্ষাত্