COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভোটের আগে প্রথমবার ২৪ ঘণ্টার স্টুডিওতে


 


২৪ঘণ্টা- ভোটের দিন ঘোষণার দিনই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা কেন?


মুখ্যমন্ত্রী- প্রার্থী তালিকা আগেই তৈরি ছিল, ১৫ দিন আগেই প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম।  আজ প্রার্থী তালিকা ঘোষণার কারণ, শুক্রবার মা দুর্গার বার, কেউ কেউ বলে এটা শিবের নার, আবার মা সন্তোষীরও বার। আবার জুম্মাবারও। তাই আজকে ঘোষণা করা হল। আমরা কাজ ফেলে রাখি না। আমাদের ইস্তাহারও তৈরি। আগামী সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে।


 


২৪ঘণ্টা- গ্রামে গ্রামে জোট হচ্ছে। এই জোট নিয়ে আপনার কী মতামত?


মুখ্যমন্ত্রী- কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রন্টের একটা অলিখিত বোঝাপড়া অনেকদিন থেকেই চলছে। এটা আমি প্রথম সবার সামনে এনেছিলাম। কংগ্রেস আসলে তরমুজের মতো। বাইরে সবুজ, ভিতরে লাল। আমরাও কংগ্রেসের সঙ্গে আগে জোটে গিয়েছি। কিন্তু ওরা গোঁজ প্রার্থী দিয়ে আমাদের হারিয়ে দিয়েছে।


 


২৪ঘণ্টা- সোনিয়ার সঙ্গে কি জোট নিয়ে কোনও কথা হয়েছে?


মুখ্যমন্ত্রী- না না। কেন কথা হবে? আমরা একাই লড়ব।


 


২৪ঘণ্টা- ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচন। চোখ কি দিল্লিতে থাকবে?


মুখ্যমন্ত্রী- আমার মাথায় এখন কিছু নেই। আমি শুধু বাংলাকে নিয়ে ভাবতে চাই। আমি ছোট জায়গায় থাকতে ভালোবাসি। ২০১৯-এ কী হবে তা এখন থেকে কে বলতে পারে।


 


২৪ঘণ্টা- বাইচুংকে প্রার্থী করলেন। এটা মাস্টার স্ট্রোক না মাস্টার ব্লান্ডার? এখজন দুঁদে পলিটিশিয়ানের বিরুদ্ধে বাইচুংয়ের মতো একজন আনকোরা ফুটবলারকে দেওয়াটা কি ঠিক হল?


মুখ্যমন্ত্রী- বাইচুং পলিটিক্সে নতুন কিন্তু আনকোরা নয়। ওকে ভেবে চিন্তেই প্রার্থী করা হয়েছে। ও অন্য অনেক দুঁদে পলিটিশিয়ানের থেকে বেশি ট্রান্সপারেন্ট। ও জাতি-ধর্ম সমস্ত মানুষের সিম্বল।


 


২৪ঘণ্টা- অনুপ দা-কে বাদ দিলেন কেন?


মুখ্যমন্ত্রী- ওকে বাদ দিইনি। উনি ঠিকঠাক দায়িত্বপালন করতে পারছিলেন না।


 


২৪ঘণ্টা- মিঠুন দা কি যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন?


মুখ্যমন্ত্রী- উনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।


 


২৪ঘণ্টা- প্রার্থীর তালিকায় তারকার সমাবেশ...


মুখ্যমন্ত্রী-  শুধু তারকাই নয়, আমি সব স্তরের লোকেদেরই প্রার্থী করেছি। ইয়াং জেনারেশন সবসময়ই বেশি কাজ করে। দেবকে যখনই ডাকি, তখনই চলে আসে। মুনমুন, সন্ধ্যা ওরা তো সারাদিনই পার্লামেন্টে থাকে।


 


২৪ঘণ্টা- সিবিআই রোজ কাউকে না কাউকে ডেকে পাঠাচ্ছে।


মুখ্যমন্ত্রী- কিন্তু প্রমাণ করতে পেরেছে কি কিছু? সারদা নিয়ে বাংলার গায়ে কালি লেপা হয়েছে, বাংলার গায়ে কলঙ্ক ছেটানো হয়েছে। আমি এর বদলা নিয়ে ছাড়ব। আমি যেখানে তোলাবাজি দেখি, সেখানেই ব্যবস্থা নিই। এগুলোর বিচার হবেই।


 


২৪ঘণ্টা- সেই জন্যই কি মদন মিত্রকে টিকিট দেওয়া হল?


মুখ্যমন্ত্রী- মদনকে ১৫ মাস ধরে জেলে রাখা হয়েছে, ওকে কেন জামিন দিচ্ছে না, এই হিসেব আমি বুঝতে পারছি না। ও আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিল অনুষ্ঠানে। ও কীকরে জানবে কে কোথায় কীকরে টাকা তুলছে। মদন মিত্র মন্ত্রী হয়েছে ২০১১ সালে। চিটফান্ড তো শুরু হয়েছে ২০০০ সালে। সেই সময় তো বামফ্রন্ট সরকার ছিল। তারা কিছু করেনি কেন? সিপিএমের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। ওদের এত টাকা এল কীকরে? মদন যদি সত্যি অন্যায় করে থাকে, তবে ব্যবস্থা নিক। এটা তদন্তের নামে প্রহসন হচ্ছে। সিপিএম বিজেপির গোপন বোঝাপড়ার একটা ট্র্যাডিশন এটা আগেও ছিল, এখনও চলছে।


 


২৪ঘণ্টা- ভাগ মমতা ভাগ শুনে কেমন লেগেছিল?


মুখ্যমন্ত্রী- খুব খারাপ লেগেছিল। অপমানিত, লাঞ্ছিত বোধ করেছিলাম।


 


২৪ঘণ্টা- দল সংখ্যায় বেড়েছে, আয়তনে বেড়েছে। কিন্তু তবুও নিচুতলায় তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ দেখা যাচ্ছে।


মুখ্যমন্ত্রী- ওগুলো তো আপনারাই তৈরি করছেন। দুটো ক্লাবে ক্লাবে লড়াই হচ্ছে। লোকে বলছে তৃণমূলের সংঘর্ষ। যেমন বাড়ির বউয়ে বউয়ে ঝগড়া হলে, আপনারা তো ওটাকেও বলে দিচ্ছেন তৃণমূলের সংঘর্ষ। আজকাল তো অনেকেই তৃণমূলের নেতা হয়ে যাচ্ছে। যারা অন্যায় করেছে, তাদের আমি শাস্তি দিয়েছি। আরাবুলকে জেলে রেখেছিলাম। দীপক হালদারকে গ্রেফতার করেছিলাম। শম্ভুনাথ কাউকেও জেলে পাঠিয়েছিলাম। সিপিএমের আমলে ওদের কজন ধরা পড়ত? আজও আমাদের লোকই বেশি খুন হয়। আমি বলেছিলাম বদলা নয় বদল চাই। আমি আমার কথা রাখছি। কিন্তু তবু আমাদের লাগাতার বদনাম করা হচ্ছে। একটু একটু করে এর বদলা নেব।


 


২৪ঘণ্টা- অসহিষ্ণুতা আজ এতটাই বেড়ে গিয়েছে, মাত্‌সান্যয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে...


মুখ্যমন্ত্রী- যেমন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা রয়েছে, তেমন ভাষার অসহিষ্ণুতাও রয়েছে। কাউকে নিচু করতে না পেরে হেনস্থা করে। শাহরুখ সলমন গুলাম আলিকে অপমান। কেউ ক্ষমতায় এসে ভাবে যা খুশি তাই করবে। অনেক এজেন্সি আছে যারা মানুষকে জুজু দেখায়।


২৪ঘণ্টা- তৃণমূলকে বেশি ভালোবাসেন নাকি বাংলাকে?


মুখ্যমন্ত্রী- আমি মানুষকে বেশি ভালোবাসি। মানুষের জন্য কাজ করি।


 


২৪ঘণ্টা- আপনি তো শিল্পীও..


মুখ্যমন্ত্রী- ছবি আঁকা নিয়েও তো অনেকে অনেক কথা বলল। আমার লেখার প্রচুর খাতা আছে। আমি মুখ্যমন্ত্রী বেতনও নিই না। সংসদের পেনশনও নিই না। আমার রোজকার বইয়ের রয়্যালটি থেকে হয়। আমি সার্কিট হাউজে টাকা দিই। চায়ের টাকা দিই। ছবি বিক্রির টাকা মুখ্যমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডে দিই।


 


২৪ঘণ্টা- আমরা মমতা ব্যানার্জিকে চিনি। যিনি  দিদিকে জানা যায় না। দিদিকে আমরা মাঝে মাঝে দেখি সবাইকেই বকাঝকা করেন। এই দিদিটা কে?


মুখ্যমন্ত্রী- আমি খুব একটা বকাঝকা করি না। তবে কেউ কোনও দুষ্টুমি করলে বকতে হয়। সকালে ৯ থেকে ১০ কিমি হাটি। সকালে ক্রশ ট্রেনারে হাঁটি। আমি সবরকম রান্না করতে পারি। দিল্লিতে সাংসদ থাকাকালীন রেঁধে খাওয়াতাম। এখন বৌমাদের রেসিপি বলে দিই। রাজনীতির থেকে এগুলোই ভালো লাগে।


 


২৪ঘণ্টা- বিরোধীরা বলছে, রাজ্য আর্থিক সংকটে ভুগছে। তবুও ক্লাবগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।


 


মুখ্যমন্ত্রী- সরকারের আর্থিক কাজে আমি সন্তুষ্ট। গরীব ক্লাবগুলোকে টাকা দিলে ক্ষতি কী? ক্লাবে টাকা দিতে কত বাজেট লাগে? ওরাও তো হোপ ৮৬ করেছিল।  ৪ বছরে ৬৮লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামীদিনে আরও ২ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে।  বাংলায় শিল্পায়নের অনেক সম্ভাবনা আছে। জমি ব্যাঙ্ক আছে। স্পষ্ট জমি নীতি আছে। একদিনে শিল্প হয় না। এবারের বিশ্ব বাংলা সম্মেলনে আড়াই লক্ষ টাকার প্রস্তাব এসেছে। শিল্পস্থাপনের নিয়ম কানুন অনেক শিথিস করেছি। ধান উত্‌পাদনে আমরা এক নম্বরে রয়েছি। সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে ধান কিনেছি। ৭ কোটি মানুষকে ২ টাকা কিলো দরে চাল দিয়েছি। কৃষি বাজারটা আমি নিজেই দেখাশোনা করি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম মূল্যবৃদ্ধি পশ্চিমবঙ্গে। শুধু জঙ্গলমহল নয়, গোটা বাংলা হাসছে। সিঙ্গুর নিয়ে জমি অধিগ্রহণ বিল আমরা করেছি। যদিও সুপ্রিমকোর্টে ওটা বিচারাধীন। কৃষকদের জমি ফেরত দেবই। সেটা আটকে রয়েছে কোর্টের রায়ের জন্য। আমরা জমি ফেরতের আইন এনেছিলাম। সেই আইন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। অনিচ্ছুক পরিবারদের চাল, টাকা দিচ্ছি।


 


 


২৪ঘণ্টা- টাটার সঙ্গে কথা হয়েছে? টাটাদের সঙ্গে কোর্টের বাইরে সমঝতা করতে রাজি?


মুখ্যমন্ত্রী- টাটাদের আমি শত্রু বলে মনে করি না। সবার সঙ্গেই বসতে রাজি। আমার কাছে কেউই শত্রু নয়। আমার কারও সঙ্গে কথা বলতেই আপত্তি নেই। আমার জমি নীতিতে কোনও বদল আসবে না। টাটাদের ৪০০ একর জমি ফেরত দিতে হবে। আমি অন্য প্যাকেজ দিতে পারি, কিন্তু SEZ নয়। যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার থেকে সরব না।


 


২৪ঘণ্টা- ৫ বছরে কোনও কাজ বাকি রইল কি?


মুখ্যমন্ত্রী- যা কাজ হয়েছে তা অনেক হয়েছে। ৬ মাস তো আমার ফাইল খুঁজতেই চলে গিয়েছে। গোড়ায় কর্মীমহল থেকে বাধাও পেয়েছি। সেই বাধা ঠেলেই এগোতে হয়েছে। তারপরে যা করেছি, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। গ্রেটার আন্দোলন নিয়ে রেলকে তোপ। অনেক আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত্‌ ছিল। তাহলে ৩জনকে প্রাণ দিতে হত না।


 


২৪ঘণ্টা- মুকুল রায়ের সঙ্গে সাময়িক বিচ্ছেদ কেন হয়েছিল?


মুখ্যমন্ত্রী-মুকুলকে বিজেপি খুব বিরক্ত করেছিল। ওরা ওকে হ্যারাস করেছিল। বিজেপি ওকে এমন মানসিক চাপ দিয়েছিল যে ও দূরত্ব বাড়াতে বাধ্য হয়েছিল। আমাদের তরফ থেকে কোনও দূরত্ব রাড়েনি। আমি ওকে আগলেই রেখেছিলাম।


 


২৪ঘণ্টা- ২৯৪টা সিট। তৃণমূল কটা পাবে?


মুখ্যমন্ত্রী- সেটা পাবলিক সিদ্ধান্ত নেবে। আমি তো আর জনগণের অ্যাস্ট্রোলজার নই। আমি তো চাইব ২৯৪টা সিটই। বাকিটা পাবলিকের সিদ্ধান্ত। আমি সবসময় মাথা উঁচু করেই চলি। মাথা একজনের কাছেই নিচু করি। সেটা জনগণের কাছে। জনগণের ক্ষতি হয়, এমন কোনও কাজ আমি করব না। কারণ, জনগণের পরিবারই আমার পরিবার।


 


(সব লাইভ আপডেট দিলেন ঝুমুর দাস এবং সুশ্বেতা ব্রহ্মচারী)