সুতপা সেন: 'কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই অভিযুক্ত হয়ে গেল? কাদের দ্বারা, আপনাদের দ্বারা! অভিযোগ প্রমাণের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল করে দিচ্ছেন? অভিযোগটা আগে দেখুন, সত্যি কিনা।' নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এভাবেই দলীয় সাংসদ নুসরত জাহানের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। নুসরতের সুরেই মিডিয়াকে দুষলেন তৃণমূল নেত্রী!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মমতা বলেন, 'নুসরতের মামলা নুসরত বলবে, নুসরত লড়বে। কিন্তু কোনও মালিক যদি কিছু করে, তার জন্য আপনাকে কেন ইডি-সিবিআই ডাকবে? ইডি, সিবিআই যা বলল এক তরফা! নুসরত যদি কোথাও ডিরেক্টর হয়ে থাকে, তাহলে সেরকম ডিরেক্টর তো অনেক আছে অনেক লেভেলে!' প্রশ্ন তোলেন, 'যারা সরাসরি চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত, চিটফান্ডের মালিকের সঙ্গে বিদেশে ঘুরতে গিয়েছিল, চিটফান্ডের সব তথ্য থাকা সত্ত্বেও তাদের কেন ডাকা হয় না? একই আইনে একরকম বিরোধীদের জন্য, আর আরেকরকম অন্যদের জন্য, এটা কী করে হয়?' তোপ দাগেন, 'বিজেপি নেতারা ২০-২২-২৫ জন করে কেন্দ্রীয় পুলিস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কত কেন্দ্রীয় পুলিসকে অপব্যবহার করা হচ্ছে!'


প্রসঙ্গত, নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪ সালে নুসরতের সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেয়। প্রায় ২৪ কোটি টাকা নিয়েছে সেই সংস্থা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একটি ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সহ বেশ কিছু চাকুরীজীবী। তাঁদের বলা হয়েছিল,৩ বছরের মধ্যে রাজারহাট হিডকোর কাছে প্রত্যেককে থ্রি-বিএইচকে করে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। কিন্তু ২০২৩ সাল অর্ধেক কেটে যাওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত ফ্ল্যাট পাননি কেউই। উলটে সেই টাকা দিয়ে নুসরত জাহান নিজে পাম অ্যাভিনিউতে ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। 


এই ঘটনায় আলিপুর কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। আদালতের নির্দেশে গড়িয়াহাট থানায় দায়ের হয়েছে এফআইআরও। নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ইডিরও দ্বারস্থ হয়েছেন প্রতারিত ব্যক্তিরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। এদিকে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে নুসরত দাবি করেন, এই কোম্পানি থেকে ২০১৭-র ১ মার্চ আমি রিজাইন করি। আমার বাড়ি দুর্নীতির টাকা দিয়ে কেনা নয়। এই কোম্পানি থেকে আমি লোন নিই। ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা লোন নিই। ২০১৭-র ৬ মে সুদ সহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরৎ দিই এই কোম্পানিতে। সব ব্যাংক ডিটেইলস ও রেকর্ড আছে। কোম্পানি কীভাবে চলত, কী করত, তার আমি কিছুই জানি না।'


এখানেই প্রশ্ন উঠছে, আমানতকারীদের টাকায় ফ্ল্যাট না বানিয়ে নুসরতকে কেন লোন? নুসরত-ই বা কেন ব্যাংক থেকে লোন না নিয়ে কোম্পানি থেকে লোন নিলেন?  ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। এই সময়কালের মধ্যে কোম্পানি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে, সেই টাকার বিনিময়ে ফ্ল্যাট দিতে তথা প্রতিশ্রুতি পালনে যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়, তার সম্পূর্ণ দায় এড়াতে পারেন না নুসরত। দায়ের একটা অংশ তাঁকে নিতেও হবে। পাশাপাশি, ফ্ল্যাট বানিয়ে দেওয়ার নামে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে, সেই কাজ না করে অন্য কাউকে লোন দেওয়াটা 'ডাইভারশন অফ ফান্ডে'র মধ্যে পড়ে। যা কিনা ফিনান্সিয়াল ক্রাইম! 


আরও পড়ুন, Nusrat Jahan: 'ডাইভারশন অফ ফান্ড' ফিনান্সিয়াল ক্রাইম! দায় এড়াতে পারেন না নুসরত...


Nusrat Jahan: দুর্নীতি ইস্যুতে প্রশ্নবাণে বেসামাল নুসরত! মিডিয়াকে দুষে ৭ মিনিটেই ছাড়লেন প্রেস ক্লাব



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)