`সৌজন্য রক্ষা`য় মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা
৩০ মে দিল্লিতে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভোটের প্রচারে পরস্পরকে লক্ষ্য করে গোলা ছুড়েছেন। ফল ঘোষণার পর সৌজন্যের রাজনীতি মেনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তাঁর কাছে আমন্ত্রণপত্র এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে দিল্লিতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি।
৩০ মে দিল্লিতে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। দেরি হলেও আমন্ত্রণ গ্রহণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,''আমার কাছে আমন্ত্রণপত্র এসেছে। আজকেই পাঠাচ্ছে। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। সবাই মিলে ঠিক করেছি, আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণ, আমরা চেষ্টা করব সেখানে থাকার। কালকের মধ্যেই পৌঁছতে হবে''।
এটা কি বরফ গলার ইঙ্গিত নাকি রাজনৈতিক বার্তা? এমন জল্পনা খারিজ করে দিয়েছেন খোদ মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,''সাংবিধানিক সৌজন্যতা রাখছি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার চেষ্টা করছি''।
নির্বাচনী প্রচারে গোটা দেশের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছিল মোদী-মমতার বাকযুদ্ধ।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'স্টিকার দিদি', 'স্পিডব্রেকার দিদি' বলে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পাল্টা নরেন্দ্র মোদীকে 'এক্সপায়ারি বাবু' বলে বিঁধেছিলেন মমতা। নরেন্দ্র মোদীকে মাটি-কাঁকর মিশ্রিত রসগোল্লা খাওয়াবেন বলেও আক্রমণ করেছিলেন। তার পাল্টা আবার মোদী বলেছিলেন, বাংলার মাটিতে বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষ জন্মেছেন। এমন মাটির মিষ্টি তাঁর কাছে সৌভাগ্য। শেষবেলায় আবার 'জয় শ্রী রাম' নিয়েও জমে উঠেছিল দুজনের তরজা। নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, এরাজ্যে 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি দিলে জেলে পুরছেন মমতা। দুর্গাপুজো, স্কুলে সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন মোদী-শাহ। তার পাল্টা মমতা আবার প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন, বাংলায় কি দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো হচ্ছে না!
গোটা প্রচারপর্বে মমতা দাবি করে এসেছেন, আর নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় ফিরছেন না। বাংলাই কেন্দ্রে সরকার গঠনে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে। মোদী দাবি করেন, বাংলাই তাঁকে তিনশো আসন পার করিয়ে দেবে। মিলে গিয়েছে মোদীর কথা। বিজেপি প্রথমবার তিনশোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আর বাংলায় দিদির দলকে ধাক্কা দিয়ে ১৮জন সাংসদ দিল্লি পাঠাচ্ছে গেরুয়া বাহিনী। বাংলায় এখন মমতার মূল প্রতিপক্ষ যে বিজেপি তা জনাদেশেই স্পষ্ট। ২০২১ সালকে টার্গেট করেছে পদ্মশিবির। আর বিজেপি ও নবান্নের মাঝে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মমতাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যের পরিচয় দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। ভোটের তাপ-উত্তাপ দূরে সরিয়ে আমন্ত্রণ রক্ষা করে সৌজন্য দেখালেন মমতাও।
আরও পড়ুন- নজিরবিহীন! তিন দিনে ৩ জন পুলিস সুপার বিধাননগরে, রাজ্য পুলিসে ব্যাপক রদবদল