কলকাতা, সৌরভ পাল: ব্যস্ত কলকাতার একমুঠো অন্যছবি। কারোর অফিসে যাওয়ার তাড়া, কেউ স্কুল ফেরত বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অটো ওয়ালারা অনবরত হেঁকে যাচ্ছেন, হাতিবাগান, হাতিবাগান...। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে 'রক্তপাত নয়, রক্তদান'। মাইক হাতে এক মধ্য বয়স্ক মানুষ, সঙ্গে আরও অনেকে। রাখি বন্ধন উৎসব চলছে, তবে একেবারে অন্য ভঙ্গিতে।    


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

'রক্ষা বন্ধনের মোড়কে রক্ত কবচের মেসেজ', রাখি বন্ধন উৎসবে অভিনব উদ্যোগ মেডিক্যাল ব্যাঙ্কের। 'রক্তপাত নয়, রক্তদান', এই বার্তাই মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ডি আশিসের নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল টিম। শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনের কাছেই তাদের মেডিক্যাল টিম নিয়ে উপস্থিত হয়েছে মেডিক্যাল ব্যাঙ্ক। মাইকের আওয়াজ যতদূর পৌঁছে যাচ্ছে, কান পাতলে শোনা যাচ্ছে একটাই কথা, "সম্প্রীতির উৎসবে সামিল করুন নিজেকে। একজন হিন্দু রক্ত দিতে পারেন একজন মুসলমানকে। আর একজন মুসলমানও রক্ত দিতে পারেন একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে। রক্তের কোনও জাত-ধর্ম নেই"। এই বার্তা যেমন শোভাবাজার চত্বরে গম গম করছে, তেমনই রক্ত দেওয়ার আগে নিজের ব্লাড গ্রুপ জেনে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও পথচলতি মানুষকে একই ভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে মেডিক্যাল ব্যাঙ্ক।  


সারিবদ্ধ মানুষের হাতে হাতে একটা রাখি মেডিক্যাল ব্যাঙ্কের কর্মীরা পরিয়ে দিচ্ছেন, যেখানে 'রক্তের রঙে' স্পষ্ট লেখা, 'রক্তপাত নয়, রক্তদান'। সঙ্গে রয়েছে সম্প্রীতি ও ভালোবাসাও। উল্লেখ্য, এই রাখি তৈরি করেছেন কুমোরটুলির শোলা শিল্পীরা। রাখি বন্ধন উৎসবে সামিল পথচলতি মানুষের মুখ মিষ্টির জন্য লাড্ডুর ব্যবস্থাও রেখেছে মেডিক্যাল ব্যাঙ্ক। আর এই অভিনব উদ্যোগে সুশৃঙ্খল ভাবেই অংশগ্রহণ করছেন পথচলতি মানুষ। এক মিনিট সময় অতিবাহিত করেই যাতে আম জনতা জেনে নিতে পারেন তাদের রক্তের গ্রুপ, রয়েছে সেই ব্যবস্থাও।          


মেডিক্যাল ব্যাঙ্কের কর্ণধার ডি আশিস জানাচ্ছেন, "রক্তপাত নয়, রক্তদান করেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষকে বাঁচাতে হবে। সারা বিশ্ব জুড়ে যে ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেখানে রক্তদানই পারে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করতে। সম্প্রীতির সংজ্ঞাই হল রক্ত। রক্তের কোনও জাতি-ধর্ম থাকে না। রক্ত আসলে প্রতীকী। আমাদের মনে হয় সব মানুষের জন্যই এটা জানা খুবই প্রয়োজনীয়, তার ব্লাড গ্রুপ কী। মূলত শোভাবাজার অঞ্চলের মানুষকে নিয়েই আমাদের এই উদ্যোগ। তবে পথ চলতি মানুষও এতে সামিল হয়েছেন। ৩০০ জন মানুষ আমাদের ডাকে সারা দিয়েছেন"। এর সঙ্গেই দীর্ঘ তিন দশক ধরে রক্তদান আন্দোলনের কর্মী ডি আশিস জানাচ্ছেন, "বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করেই রক্ত নেওয়া হচ্ছে এবং পথ চলতি মানুষকে তার ব্লাড গ্রুপ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ যে সর্বতোভাবে এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন, এতে আমরা খুশি"।