Ashok Bhattacharya: আমাদের হাতে একটাও বিধায়ক নেই, সরকার ফেলে দেব, এত ভয় তৃণমূলের!
অশোক ভট্টাচার্য বলেন, শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন অনন্ত মহারাজ। মঞ্চ থেকে নেমেই বললেন তিনি পৃথক কোচবিহার রাজ্যের পক্ষে। কেন্দ্র তার ব্যবস্থা করে দেবে। ওই অনুষ্ঠানে অনীক থাপাও ছিলেন। তিনিও পৃথক রাজ্যের দাবিদার। তাদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করছেন
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে শিলিগুড়ি মডেলের প্রবক্তা ও বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। বিতর্কটি উস্কে দিয়েছে তৃণমূলের মুখপত্র জাগোবাংলা। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে বাংলা ভাগ ও সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করতে বিজেপির সঙ্গে গোপন বৈঠক হয়েছে অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে। সেই বৈঠকে ছিলেন অশোক ভট্টাচার্য ও দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা, শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ-সহ বিজেপির নেতারা। আরও দাবি করা হয় সিপিএমকে বিজেপি জানিয়েছে এই রাজ্যের সরকার তাঁরা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ফেলে দেবেন এবং তাদেরকে সঙ্গে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এবার জি ২৪ ঘণ্টার আপনার রায় অনুষ্ঠানে এসে ওই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করলেন অশোক ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন-এনসিসি-কে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করছে রাজ্য? তুঙ্গে বিতর্ক
তৃণমূলের ওই অভিযোগ নিয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, সোমবার সকালে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা-র হয়ে একজন আমাকে ফোন করে বলেন, রাজু বিস্তা আসছেন। আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন। স্ত্রী প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সেইসময় কয়েকজন কথা বলছিলাম। ওই ফোন পেয়ে আমি রাজুকে আসতে বললাম। উনি এসেছিলেন। আমাকে দীপবলির শুভেচ্ছা জানালেন। আর বললেন, বৌদির প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য আপনি কার্ড পাঠিয়েছিলেন। ওই দিন আসতে পারবেন না। ওকেও দীপবলির শুভেচ্ছা জানালাম। চা খেয়ে যেতে বললাম। রাজুর সঙ্গে ওর দলের ৮-৯ জন ছিলেন। আর জনা দশেক সাংবাদিক ছিলেন। মিনিট পনের পরেও ওরা চলে যায়।
ওই সাক্ষাতকারের পরের দিন একটি সাংবাদপত্রে আর একটি সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি খবর চাপা হয়েছে। এরপর একটি চ্যানেলে বলা হল দেওয়ালির রাতে গোপন বৈঠক হয়েছে। রাতের বেলায় জানলা দিয়ে আলো আসছে? ওই কয়েক মিনিটের কথাবার্তায় রাজু আমাকে জিজ্ঞাসা করল, এখন রাজ্যের পরিস্থিতি কেমন। আমি বলেছিলাম, এখন বাংলায় বিজেপির অবস্থা খারাপ, তৃণমূলের অবস্থাও খারাপ। ও জিজ্ঞাসা করলে কে ভালো আছে। আমি বলেছিলাম, বামেরা এগিয়ে যাচ্ছে। রাজনীতির কথা বলতে ওই টুকুই। এর মধ্যেই আমার বিরুদ্ধে সরকার ভাঙার চক্রান্তের অভিযোগ উঠে গেল। আরে আমাদের হাতে একটাও বিধায়ক নেই। দূরবীন দিয়ে আমাদের দেখতে হয়। তার পরেও তৃণমূল কংগ্রসের আমাদেরকে এত ভয়? সিপিএম সরকার ফেলে দেবে? হ্যাঁ, সরকার আমরা ভোটের মাধ্যমে ফেলব। আমাদের লক্ষ্য তৃণমূলকে হঠানো, বিজেপিকেও হঠানো। পশ্চিমবঙ্গে এটা হবেই।
তৃণমূল মুখপত্র বলা হয়েছে, সিপিএম-বিজেপির ওই চক্রান্তের প্রতিবাদে আন্দোলেন নামছে তৃণমূল। এনিয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন অনন্ত মহারাজ। মঞ্চ থেকে নেমেই বললেন তিনি পৃথক কোচবিহার রাজ্যের পক্ষে। কেন্দ্র তার ব্যবস্থা করে দেবে। ওই অনুষ্ঠানে অনীক থাপাও ছিলেন। তিনিও পৃথক রাজ্যের দাবিদার। তাদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করছেন। এই অনন্ত মহারাজ একবার মমতার সঙ্গে থাকছেন। একবার অমিত শাহর সঙ্গে থাকছেন। এরা বাংলাকে অখণ্ড রাখবে? আমরা বাংলার অখণ্ডতার জন্য রক্ত দিয়েছি। উত্তরবঙ্গের মানুষের কিছু দাবি রয়েছে, কিছু আবেগ রয়েছে। তাদের প্রতি আরও নজর দেওয়া দরকার। উত্তরবঙ্গকে আলাদা করতে হবে যারা বলছেন তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকছেন। অনন্ত মহারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের একটি কমিটির চেয়ারম্যান। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলা ভাগ ও সরকার ফেলতে চাইছি। সেই গোপন বৈঠক আমার সাংবাদিকদের সামনে করলাম! যে কোনও বিরোধী দলের প্রতিনিধির জন্য় দরজা খুলে রাখা শিলিগুড়ির একটা সংস্কৃতি।