কাউন্সিলরদের গলদেই জটিল শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি! বিস্ফোরক মেয়র পরিষদ অতীন ঘোষ
শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, পরিত্যক্ত জমি। উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতায় পরিত্যক্ত জমি, পুকুর, নর্দমার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
দেবারতি ঘোষ: তিন মাস আগে দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে ডেঙ্গি মোকাবিলার প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছিলেন ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ অতীন ঘোষ। কিন্তু সেই বৈঠকের পরেও বর্তমান শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সার্বিক সচেতনতার অভাব ছিল। আর সেই কারণেই এই পরিস্থিতি। কাউন্সিলরদের যে গলদ রয়েছে, তা স্বীকার করে নিলেন অতীন ঘোষ। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুললেন বিরোধীদলের কাউন্সিলরাও কেন সচেতন নয়, তা নিয়েও। যদিও পুরসভার ডেঙ্গি নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠকে ডাক না পাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিরোধী কাউন্সিলর সজল ঘোষ। সজল ঘোষের কথায়, 'উনি কাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন? বিরোধী কাউন্সিলর তো আছি মাত্র ৫-৬ জন। আমাদের ডাকা হয়েছে কোনওদিন। মেয়র কতবার নাগরিক কনভেনশন করেছেন। আমার ওয়ার্ডে কি ডেঙ্গি হয় না? নাকি ওখানে তৃণমূল নেই, সবাই বিজেপি করেন!'
প্রসঙ্গত, শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, পরিত্যক্ত জমি। উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতায় পরিত্যক্ত জমি, পুকুর, নর্দমার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর এবার তাই পরিত্যক্ত জমি নিয়েই রাজ্য সরকার কড়া কোনও আইন তৈরি করুক। এমনটাই চাইছে পুরসভা। যে প্রসঙ্গে অতীন ঘোষ বলেন, সরকারকে খালি জমি রাখার ক্ষেত্রে কড়া আইন প্রণয়ন করতে হবে। একথা রাজ্য সরকারকে জানাব। যদিও সজল ঘোষের কথায়, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন খালি জমি পুরসভা পরিষ্কার করতে পারে। তাতে জরিমানা ধার্য করতে পারে। শাস্তিও দিতে পারে। এছাড়া কিছু করার নেই। এমনটাই কটাক্ষ করেছেন তিনি।
পুরসভার সমীক্ষা রিপোর্ট-
মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত ৬০৫২
দক্ষিণ কলকাতা (বরো ৮-১৪) -- ৪৬২৭ জন (৭৬.৫%)
উত্তর কলকাতা (বরো ১-৭) -- ১৩৭১ জন(২২.৬%)
জোকা ও গার্ডেনরিচ (বরো ১৫ -১৬) -- ৫৪ জন (.৯%)
ডেঙ্গির জীবাণুবাহী ইডিস ইজিপটাই মশার পছন্দের আঁতুড়ঘর --
উত্তর কলকাতা
ফাঁকা জমি -- ৩৮৩ টি (৯.৯%)
নির্মীয়মান বাড়ি -- ১৬৮৪ টি (৩৭%)
পুকুর -- ৪৩৩ টি (২২.৫%)
নর্দমা -- ১৫৪৫ টি (১২%)
পাতকুয়ো -- ১৭৬৬ (১৫%)
দক্ষিণ কলকাতা
ফাঁকা জমি -- ৩০৩৮ টি (৭৮.৮%)
নির্মীয়মান বাড়ি -- ২৮৪৪ টি (৬৩%)
পুকুর -- ১৪৯০ টি (৭৭.৫%)
নর্দমা -- ১১২০৬ টি (৮৮%)
পাতকুয়ো -- ১০০৪৭ টি (৮৫%)
শহরে ডেঙ্গি ছাড়াও ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মানুষ। ডেঙ্গি আক্রান্তের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই এবার নতুন স্ট্রেইন ডেঙ্গ-থ্রি-তে আক্রান্ত বলে দাবি পুরসভার। যার চিকিৎসার প্রোটোকল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বা রাজ্য সরকারের কাছে না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।