মোক্যাম্বোর মাতব্বরি
অপরিচ্ছন্ন জামাকাপড়। চেহারায় আভিযাত্যের ছাপ না থাকায় রেস্তোরাঁয় ঢুকতে বাধা। খোদ শহর কলকাতার এ ঘটনায় সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়। তীর্যক আক্রমণ। তারপরেও অবিচল রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। তাহলে কি পোশাকই মানুষের পরিচয়? উঠছে প্রশ্ন। নিশানায় কলকাতার অভিযাত পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ। কী সেই ঘটনা?
ওয়েব ডেস্ক: অপরিচ্ছন্ন জামাকাপড়। চেহারায় আভিযাত্যের ছাপ না থাকায় রেস্তোরাঁয় ঢুকতে বাধা। খোদ শহর কলকাতার এ ঘটনায় সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়। তীর্যক আক্রমণ। তারপরেও অবিচল রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। তাহলে কি পোশাকই মানুষের পরিচয়? উঠছে প্রশ্ন। নিশানায় কলকাতার অভিযাত পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ। কী সেই ঘটনা?
আরও পড়ুন- জয়পুরিয়া কলেজে অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি
পোশাক খুব নোংরা এবং অনুপযুক্ত হওয়ায় শুক্রবার রাতে বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত এক মহিলার গাড়ি চালককে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে দেয়নি মোক্যাম্বো কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় হতবাক ওই মহিলা তিতিবিরক্ত হয়ে ফিরে যান এবং নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন সোস্যাল মিডিয়ায়। তারপর?
সোস্যাল মিডিয়ার হাত ধরে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল সেই খবর। প্রতিবাদে গর্জে উঠল মহানগর। মোক্যাম্বোর বিরুদ্ধে ঝড় উঠল ফেসবুকে। এ ধরনের অমানবিক চমক দেওয়ার আগে অন্তত একবার ভাবা উচিত্ ছিল। কেউ লিখলেন - এবার পুজোয়ে বয়কট মোক্যাম্বো। অনেকেই লিখেছেন, ব্রিটিশরা চলে গেলেও মোক্যাম্বোর মত কিছু সম্পদ এ শহরে রেখে গিয়েছে। তার রেশ ধরেই কেউ কেউ লিখেছেন, কলকাতা নয়। মোক্যাম্বোর মত রেস্তোরাঁর লন্ডনে থাকা উচিত্।
মোক্যাম্বোর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গাত্মক সমালোচনাতেও ছয়লাপ সোস্যাল মিডিয়া। লেখা হয়েছে- মোক্যাম্বো সম্ভবত খুশি হল, কিন্তু জনগন এবার খুব দুঃখ পেল। একজন লিখেছেন- এবার পুজোতে মোকাম্বোতে বারমুডা আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে খেতে যাবো। কেউ লিখলেন, বড়লোকদের কি গরীবদের থেকে একটা হাত বেশি থাকে?
এত সমালোচনা, এত প্রতিবাদের পরেও চুপ করে থাকেনি মোক্যাম্বো। উল্টে তাদের বিস্ফোরক সাফাই, আমরা রাস্তার লোকেদের ঢুকতে দিই না। এখানেই থেমে না থেকে জনৈক এক মহিলার ফেসবুক পোস্টের জবাবে তারা লিখেছে- আমরা কলকাতার অন্যতম সেরা রেস্তোরাঁ। সেটা খতিয়ে দেখতে নিজেই একবার ঘুরে দেখে যেতে পারেন। তবে কেতাদুরস্ত পোশাক পরে আসতে হবে এবং অবশ্যই বড়লোক হতে হবে। ইংরেজিতে কথা বললেই আমরা আপনাকে স্বাগত জানাব। কেবল দরিদ্ররাই ভারতীয় ভাষায় কথা বলে যা আমাদের না পসন্দ। কারণ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললে আমাদের রেস্তোরাঁর পরিবেশ দূষিত হয়, আমাদের অতিথিরাও অস্বস্তিতে পড়েন।
মোক্যাম্বোর এই সাফাই যেন জমে থাকা ক্ষোভের বারুদে অগ্নিসংযোগ করে, আক্রমণ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। কেউ লিখলেন- জন্মের পর থেকেই কেউ ইংরেজি বলতে শেখে না। কেউ লিখলেন, মোক্যাম্বোর ওয়েটার হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করার চেয়ে গাড়ি চালিয়ে দিনগুজরান করা অনেক সম্মানের। আরেকজনের মন্তব্য- মোক্যাম্বো রেস্তোরাঁ কলকাতাকে লন্ডন ভাবছে তাই ইংরেজি না জানলে আর বড়লোকের মত দেখতে না হলে ভিতরে ঢুকতে দেবে না।
আরও পড়ুন- বাড়ির কাছে এসেও বাড়ি থেকে দূরে মদন মিত্র, কিন্তু হঠাত্ কেন এই সিদ্ধান্ত বদল?
সোস্যাল মিডিয়াজুড়ে এত বিদ্রুপ, এত সমালোচনায় চাপের মুখে মত বদল মোক্যাম্বো কর্তৃপক্ষের। তাদের দাবি, ফেসবুকে মোক্যাম্বোর পেজটি ভুয়ো। সাফাইয়ে মোক্যাম্বো কর্তৃপক্ষ এখন যাই বলুক, শুক্রবারের ঘটনা যে বাংলার রাজধানীকে আরও একবার কলঙ্কিত করল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি খোদ বাংলাতেই অস্তিত্ব সঙ্কটে বাংলা?