কলকাতা: তৃণমূল সুপ্রিম তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তাঁরই দলের একদা সৈনিক সাংবাদিক তথা সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ। নারদকাণ্ডকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবি সাসপেন্ডেড তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের। নারদ স্টিং কাণ্ডে কুণালের 'প্রাক্তন সতীর্থ'দের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষের বিস্ফোরক দাবি, "তদন্তকে প্রভাবিত করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের হাতে তদন্ত যেন না যায় সেই জন্য চেষ্টা করছেন তিনি। সরকারি কোষাগারের অপব্যবহার করেছেন। তদন্তের আগেই দোষীদের নির্দোষ বলেছেন। কখনও বলছেন জাল ভিডিও, কখনও বলছেন অনুদান। যদি তিনি এভাবেই করতে থাকেন তাহলে সিবিআইয়ের উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে তারপর তদন্ত করা।"       


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

১২ জন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআর, তারই প্রতিবাদে আইনি ব্যবস্থা সহ পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের 'তকমা' লাগিয়ে নারদকাণ্ড নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে চাইছে রাজ্য তৃণমূল। দলের এমন অবস্থানে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্লজ্জ দ্বিচারিতা করছেন। ২০০১ সালে যখন বঙ্গারু লক্ষণ টাকা নিয়েছিলেন এবং এফআইআর হয়েছিল তখনও তো দোষ প্রমাণিত হয়নি, তখন উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দুর্নীতির কথা বলে ছেড়ে চলে এসেছিলেন কেন? কেন তখন ইস্তফা দিয়েছিলেন? আজকে মনে হচ্ছে এফআইআর মানে দোষ প্রমাণিত নয়। উনি দ্বিচারিতা করছেন।"  


কুণাল ঘোষের দাবি, তাঁর সঙ্গে দ্বিচারিতা হয়েছে। দল এবং দলের সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে দ্বিচারিতা করেছেন। ১২ জন তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এফআইআরের পর তৃণমূল যে অবস্থান নিয়েছে এবং নিচ্ছে, তাকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, "এখন উনি বলছেন রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। আমার বেলায় কী হয়েছিল? উনি নির্লজ্জ দ্বিচারিতা করছেন। যাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকে প্রভাবশালী। আমার দাবি তাদের প্রত্যেককে অবিলম্বে গ্রেফতার করে কাস্টডিতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে।"  
  
কুণাল ঘোষ আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'সরকারি কোষাগারের অপব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত করার' অভিযোগ এনেছেন।  


সাসপেন্ডেড তৃণমূল তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের এই বিস্ফোরক দাবির বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তৃণমূলের কোনও নেতাই। এমনকি কুণাল ঘোষের এই দাবিকে নস্যাৎ করার মত সাহস নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে এগিয়ে আসেননি কোনও তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী বা সাংসদ।  


গতকাল নারদকাণ্ড নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কথা বলেছেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু আধিকারী। নারদকাণ্ড নিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "অনেক কিছুই বলতে পারি, দলের বারণ আছে"। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর এই বক্তব্য বেশ ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। নারদ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব বাম-কংগ্রেস-বিজেপি। এবার দলের নেতা, সাসপেন্ডেড তৃণমূল সাংসদের বিস্ফোরক দাবিতে আরও অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।