ওয়েব ডেস্ক: ঘটি-বাঙাল, উত্তর-দক্ষিণের মতই এ লড়াই চিরকালীন। তবুও শহর আর শহরতলির দ্বন্দ্বে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিয়েছিল মেট্রো রেল। বলা ভাল, দুই বিপরীত মেরুকে খানিকটা হলেও কাছাকাছি এনেছিল। আর তাই ভিড়ে ঠাসা মেট্রোয় শহুরে অফিসযাত্রীর পাশে স্বাচ্ছ্যন্দেই জায়গা মিলেছিল শহরতলির দোকানীর। কিন্তু ছন্দটা কাটলই। সৌজন্যে সেই মেট্রো রেল।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন রেলমন্ত্রী। টালিগঞ্জ থেকে নিউগড়িয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হল মেট্রো রেল চলাচল। শহরের প্রাণকেন্দ্র ছাড়িয়ে মেট্রোয় যাতায়াত নিত্যসঙ্গী হল শহরতলিরও। অফিস যাত্রী থেকে শুরু করে বড়বাজারে মাল কিনতে আসতে দোকানি, কলেজ পড়ুয়া থেকে সিনেমা দেখতে আসা যুবক-যুবতী। কম সময়ে, কম ভাড়ায় কলকাতায়।


সংঘাতের শুরুটা সেই সময় থেকেই। অফিস টাইমে ভিড়ঠাসা মেট্রো মহানায়ক উত্তমকুমার, রবীন্দ্র সরোবর, যতীন দাস পৌছতে বিপত্তি। বসার জায়গা তো দূর অস্ত, ভিড় থিকথিক ট্রেনে পা রাখারই যে জো নেই। কবি সুভাষ, কবি নজরুল, গীতাঞ্জলি থেকে মেট্রোর কামরায় ইতিমধ্যেই জায়গা নিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।


এভাবেই চলছিল রোজনামচা। ছন্দটা কাটলই। শহরতলির মেট্রোয় পড়ল কোপ। অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য দাবি মেনে মহানায়ক উত্তমকুমারে নতুন প্ল্যাটফর্ম। দমদম পর্যন্ত চালু হচ্ছে এগারোটি নতুন ট্রেন। বাইশটি পরিষেবা।


দিন ও রাতের ব্যস্ত সময়ে ছ মিনিটের ব্যবধানে চলে মেট্রো। কবি সুভাষ থেকে উত্তমকুমার পর্যন্ত পৌছতে সময় লাগে প্রায় পনেরো মিনিট। অর্থাত্ দশটায় যে ট্রেন কবি সুভাষ থেকে ছাড়ছে সেটি উত্তমকুমারে পৌছচ্ছে দশটা ষোলোয়। ঠিক পরের ট্রেন দশটা ছয়ে। উত্তমকুমারে পৌছবে দশটা একুশে। অর্থাত উত্তমকুমার থেকে মেট্রো চালাতে হলে দশটা ষোলো থেকে একুশের মধ্যে কোনও সময়ে চালাতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব। তাই কোপ পড়বে শহরতলির মেট্রোয়। অবশ্য এবিষয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের যুক্তিও রয়েছে।


কিন্তু ভবী এতে ভোলবার নয়। তাই শহর ও শহরতলির চিরাচরিত সেই দ্বন্দ্ব মেটবারও নয়। শহরতলির মেট্রো চলাচলে কোপ পড়ছে। শুধু তো গড়িয়া, বাঘাযতীন নয়। মেট্রোর ওপর নির্ভরশীল নরেন্দ্রপুর, সোনারপুর, বারুইপুর সহ দক্ষিণ শহরতলির অসংখ্য মানুষ। এই দিকটা যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনই মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে নতুন পরিষেবায় সুবিধা হবে টালিগঞ্জ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। উপকৃত হবেন গল্ফ গ্রিন, আনোয়ার শাহ, টালিগঞ্জ, কবরডাঙা, বেহালা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ।