`গ্রামে ইন্টারনেট নেই...ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটাই যে ভেঙে যাবে`, করোনার মধ্যে কলেজে এসেই পরীক্ষা দিল আবদুস
গ্রামে ইন্টারনেট তো দূরের কথা, দিনের অর্ধেক সময় তো কারেন্ট-ই থাকে না।
শ্রেয়সী গাঙ্গুলি : করোনা আছে। কিন্তু স্বপ্নটাও যে আছে। পরীক্ষা না দিলে স্বপ্নটাই যে ভেঙে যাবে। এদিকে পরীক্ষা নাকি হবে অনলাইনে! কিন্তু গ্রামে যে অর্ধেক সময় বিদ্যুতই থাকে না! তাহলে পরীক্ষা কীভাবে দেবে সে? এই সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিলে আবদুস সামির। অবশেষে পাশে দাঁড়িয়েছে কলেজ। করোনা আবহে কলেজে এসেই তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ।
বিহারের পুর্ণিয়ার ছেলে আবদুস সামি। কলকাতার এজেসি কলেজের কমার্সের ফাইনাল সেমেস্টারের ছাত্র সে। বাবা লোহার রদ্দি জিনিস বেচে সংসার চালায়। মা বাড়িতেই থাকে। বাড়িতে এর আগে কেউ কলেজের দোরগোড়া পর্যন্ত যায়নি। সেই বাড়ির ছেলে আবদুস সামি স্বপ্ন দেখে ইউপিএসসি দেওয়ার। কিন্তু সব স্বপ্ন-ই ধুয়ে মুছে যেতে বসেছিল অনলাইনে পরীক্ষার নিদানে।
কারণ আবদুস সামির কথায়, গ্রামে ইন্টারনেট তো দূরের কথা, দিনের অর্ধেক সময় তো কারেন্ট-ই থাকে না। বন্যায় সব ভেসে গিয়েছে। এদিকে মোবাইলে পরীক্ষা দেওয়াও তো আর সম্ভব নয়। এখন এবছর পরীক্ষা না দিলে যে বাবা, মা যে তার উপর ভীষণ রেগে যেত তা নয়, কিন্তু ওর স্বপ্ন চুরমার হয়ে যেত। এই পরিস্থিতিতেই তখন কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে আবদুস সামি। এগিয়ে আসে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আবদুস সামির পরীক্ষা দেওয়ার সব ব্যবস্থা তারা করবে বলে আশ্বাস দেয়।
শেষপর্যন্ত আজ কলেজে বসেই ফাইনাল সেমেস্টারের পরীক্ষা দিল আবদুস সামি। 'করোনার সংক্রমণ?' আবদুসের কথায়, "আমরা বড্ড গরিব। পরীক্ষা না দিলে যে আমার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটাই ভেঙে যাবে।"
আরও পড়ুন, 'দলিতদের উপর আক্রমণ... আবার দলিতদের বাড়িতে খাওয়া হয়!' তীব্র শ্লেষে বিজেপিকে বিঁধলেন মমতা