রাজ্যে ফ্যাক্টর যখন `নোটা`
এবারের নির্বাচনে রাজ্যে বিরোধীরা কার্যত তৃণমূল ঝরে উড়ে গেছে। ২১১টি আসনে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছেন মমতা অ্যান্ড কোম্পানি। শোচনীয় হার হয়েছে জোটের। গতকাল নির্বচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই এই নিয়ে চায়ের কাপে তুফান তুলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর তার মাঝেই সকলের অলক্ষ্যে একটি রেকর্ড গড়ে ফেলল নোটা। তুলে দিল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-
ওয়েব ডেক্স : এবারের নির্বাচনে রাজ্যে বিরোধীরা কার্যত তৃণমূল ঝরে উড়ে গেছে। ২১১টি আসনে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছেন মমতা অ্যান্ড কোম্পানি। শোচনীয় হার হয়েছে জোটের। গতকাল নির্বচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই এই নিয়ে চায়ের কাপে তুফান তুলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর তার মাঝেই সকলের অলক্ষ্যে একটি রেকর্ড গড়ে ফেলল নোটা। তুলে দিল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-
নোটা না ভোটের অধিকার?
মেখলিগঞ্জ থেকে মুরারই। রাজ্যের ২৯৪টি আসনে মানুষ দিলেন ভোট। পাশাপাশি সোখানে ভোটারা জানালেন তাঁদের আপত্তিও। তবে, এতো হেওয়ারই ছিল। তাহলে কেনও এই নোটা নিয়ে এত মাতামাতি?
নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, রাজ্যে ২৯৪টি আসনে এবার নোটায় বোতাম টিপেছেন ৮ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৫জন। শতাংশের নিরিখে যা মোট প্রদেও ভোটের প্রায় ১.৫ শতাংশ। তবে, তার থেকেও বড় চমক রয়েছে এখনও। রাজ্যে ২৪টি এমন আসন রয়েছে যেখানে জয়-পরাজয়ের ব্যবধানকে পিছনে ফেলেছে নোটার সংখ্যা।
এরমধ্যে, কালচিনিতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ১,৫২২ ব্যবধানে এবারের ভোটে জিতেছেন। আর সেখানে নোটায় ভোটদানের সংখ্যা ৪,৫২৪। নাগরাকাটাতেও এই ব্যবধানের চেহারাটা একই। রায়দিঘিতে ফটোফিনিশে হেরেছেন বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে হার জিতের ব্যবধানের থেকে অনেকটাই বেশি নোটার সংখ্যা। তবে, এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র বড়জোড়া। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী ছিলেন সোহম চক্রবর্তী। এখানে তিনি বাম প্রার্থীর কাছে ৬১৬ ভোটে হেরেছেন। কিন্তু, এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৪,২৩৫টি ভোট। মজার ব্যাপার হল, এই ২৪টি আসনই কিন্তু, গ্রামীণ বাংলায়। যেখানে মানুষের ভোটদানে উত্সাহ থাকে শহরের থেকে বেশি।
এবার প্রশ্ন হল এই না ভোট, হ্যাঁ হলে ২৪টি আসনে ফলাফল বদলাত কী? এই বিতর্ক চলতে পারে। বাস্তব বলে এই না-ভোটের প্রত্যক্ষ প্রভাব নির্বাচনে তেমন নেই। সংবিধান অনুসারে হ্যাঁ-ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া ব্যক্তিই কোনও কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। না-ভোট, মোট ভোটের পঞ্চাশ শতাংশ হলেও ভোটের ফলে তা প্রভাব ফেলে না। অর্থাত্, নোটার বলে একযোগে সব প্রার্থীকে বাতিল করার ক্ষমতা নেই ভোটারের হাতে। কিন্তু, দিন দিন নোটার বাড়তে থাকা হার তুলছে প্রশ্ন। কেনও ধীরে ধীরে রাজনীতিকদের প্রতি অনাস্থা বাড়ছে মানুষের? ভাবছেন কী আইন প্রণেতারা?
এ তো গেল নাহয় রাজ্যের কথা। দেশের ক্ষেত্রেও চেহারাটা অনেকটা একই। অসম, কেরল, তামিলনাড়ুত ও পুডুচেরিতে নোটায় ভোট দিয়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। নির্বাচন কমিশনের সমীক্ষা বলছে ওই চার রাজ্যে নোটায় ভোটদানের সংখ্যা ৮ লাখ ৮০৩। যা আবারও মোট ভোটারের ১.৫ শতাংশের কাছাকাছি।