নিজস্ব প্রতিবেদন : জ্বর নিয়ে ভর্তি হতে আসা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল মেডিকেল কলেজ চত্বরে। মৃত্যুর পর রাস্তার উপরই দেহ পড়ে রইল ঘন্টা দুয়েক। আতঙ্কে ধারেকাছে ঘেঁষলেন না কেউ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজ্যের কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ। সেখানেই সুপারের অফিসের পাশে ইডেন বিল্ডিংয়ের নীচে রাস্তায় পড়ে রইল একটি দেহ। প্রায়  ঘন্টা দুয়েক পড়েছিল দেহটি। এভাবে দেহ পড়ে থাকাকে কেন্দ্র করে এদিন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। রটে যায়, নোভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। তাঁর দেহ পড়ে আছে রাস্তায়। ভয়ে, আতঙ্কে কাউকেই সেই দেহের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে প্রায় ঘন্টা দুয়েক পড়েছিল দেহটি। তারপর মৃতের ছেলে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁর বাবাকে। একটি শববাহী  গাড়ির ব্যবস্থা করে দেহ হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে চলে যান তিনি।


স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এইভাবে একটি দেহ এতক্ষণ পড়ে রইল! কেউ কেন এলেন না? পুলিস কেন বিষয়টি দেখল না? কর্তৃপক্ষই বা কেন চুপ করে রইলেন? এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, ওই বৃদ্ধকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে আনা হয়েছিল কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসএসবি ব্লকের ফিভার ক্লিনিকে। সেখানে তাঁকে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী ২ নম্বর গেটের পাশে এমার্জেন্সি থেকে ভর্তি টিকিট করতে। কিন্তু স্ট্রেচার বা ট্রলি না পেয়ে এরপর কোলে করে করেই বাবাকে নিয়ে ছেলে এমার্জেন্সির দিকে হাঁটা শুরু করেন। বারবার মাটিতে নামাচ্ছিলেন, ফের কোলে তুলছিলেন। এভাবে কোনওমতে এমার্জেন্সিতে পৌঁছান। সেখান থেকে বাবাকে ভর্তির টিকিট করেন। ফের সেখান থেকে বাবাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করেন। নির্দেশ অনুযায়ী গ্রিন বিল্ডিং নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবাকে। 


এদিকে কিছুটা পথ যাওয়ার পরই সুপারের অফিস এবং ইডেন বিল্ডিংয়ের ঠিক মাঝখানে একটা জায়গায় রাস্তার উপর বাবাকে কোল থেকে নামান ছেলে। তখনই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। এরপর প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ওখানেই পড়ে থাকে দেহ। মৃতের ছেলে বলেন, "কিছু করার নেই। একবার এখানে, একবার ওখানে করতে গিয়ে বাবার মৃত্যু হয়ে গেল। চিকিৎসা-ই শুরু করা গেল না। কী করব?এখন-ই দেহ নিয়ে বাড়ি যেতে হবে।" কিন্তু কোথা থেকে এসেছেন? ভর্তি করেছেন কিনা? করোনা আক্রান্ত? এসব কোনও প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি মৃতের ছেলের কাছ থেকে।


যদিও এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, "দেখাতে এসেছিলেন হয়তো। কিন্তু ভর্তি হননি। আমরা নিশ্চিত। ফলে আমরা জানতে পারছি না ঘটনাটা ঠিক কী? কোথা থেকে ওই বৃদ্ধ মানুষটিকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার খোঁজ করার চেষ্টা করেছিলাম। আমরা এমার্জেন্সির টিকিট পরীক্ষা করে দেখি কারা কারা টিকিট কেটেছিলেন এবং ভর্তি রয়েছেন। তাঁরা ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন কিনা সেই খবরও নেওয়া হয়। সবই মিলে গিয়েছে। অর্থাৎ এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি যে, কেউ ভর্তি হয়েছেন, তারপর তাঁকে গ্রিন বিল্ডিংয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এমনটা কিন্তু ঘটেনি। ফলে আমরা ওই রোগীর ঠিকানা, নাম জানতে পারছি না। এভাবে দেহ নিয়ে চলে যাওয়াটা সেই পরিবার ঠিক কাজ করেননি।"


আরও পড়ুন, রাজ্যে নতুন করে ২১টি কনটেইনমেন্ট জোন চিহ্নিত, তালিকায় এবার উত্তর দিনাজপুরও