`বাবা বেঁচে থাকুক ওদের মধ্যে`, পরিবারের বাধার মুখেও মরণোত্তর অঙ্গদানে অবিচল মেয়ে
২টি কিডনি, লিভার ও কর্নিয়া পাচ্ছেন এসএসকেএম-এর গ্রহীতারা-ই। দুটি কিডনির মধ্যে একটি পাচ্ছেন ২৯ বছরের এক যুবতী। আর অপরটি পাচ্ছেন ৩৭ বছরের এক যুবক। অন্যদিকে লিভার পাচ্ছেন ৬১ বছরের প্রৌঢ়।
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: দুর্ঘটনা অসময়ে কেড়েছে বাবাকে। কিন্তু মেয়ে চায় বাবা বেঁচে থাকুক। বেঁচে থাকুক সবার মধ্যে। আর তাই পরিবারের তরফে নানান বাধার সম্মুখীন হয়েও ব্রেইন ডেথের পর বাবার মরণোত্তর অঙ্গদানে অবিচল রইল ২০ বছরের মেয়ে।
কাঁকিনাড়ার বাদামতলা বাসিন্দা ছিলেন ৫৪ বছরের হেমন্ত শূর। ২১ মার্চ পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন পেশায় মাছ ব্যবসায়ী হেমন্ত শূর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নৈহাটি হাসাপাতালে। তারপর সেখান থেকে কল্যাণী জেএনএম-এ। এরপর সেখান থেকে যাদবপুর কেপিসি ঘুরে ২১ তারিখ রাতেই পিজি ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয় হেমন্তবাবুকে। প্রথম কদিন অবস্থার নতুন করে অবনতি না হলেও, ২৫ তারিখের পর থেকে অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। এরপরই ২৭ তারিখে চিকিত্সকেরা হেমন্ত শূরের ব্রেইন ডেথ ঘোষণা করেন।
চিকিত্সকেরা হেমন্তবাবুর ব্রেইন ডেথ ঘোষণা করার পরই তাঁর ২০ বছরের মেয়ে শ্রেণা শূর এবং স্ত্রী রাখি শূর মিলে সিদ্ধান্ত নেন দেহ দাহ না করে মরণোত্তর অঙ্গদানের। যাতে সমাজের আরও কয়েকজন মানুষ সুস্থ জীবন পান। আর উলটোদিকে হেমন্তবাবু আরও মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকতে পারেন। স্ত্রী ও মেয়ে ছাড়াও হেমন্তবাবুর ৫ বছরের একটি ছোট ছেলেও আছে।
স্ত্রী ও মেয়ের সম্মতি মেলার পরই এদিন হেমন্ত শূরের মরণোত্তর অঙ্গদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। হেমন্ত শূরের ২টি কিডনি, লিভার ও কর্নিয়া পাচ্ছেন এসএসকেএম-এর গ্রহীতারা-ই। দুটি কিডনির মধ্যে একটি পাচ্ছেন ২৯ বছরের এক যুবতী। আর অপরটি পাচ্ছেন ৩৭ বছরের এক যুবক। অন্যদিকে লিভার পাচ্ছেন ৬১ বছরের প্রৌঢ়।
আরও পড়ুন, বাড়ায় ক্যানসারের ঝুঁকি! বাংলায় বিপজ্জনক নোটিফায়াবেল ডিজিজের তালিকায় নয়া ২ রোগ