নিয়োগ দুর্নীতিতে নয়া মোড়, সিবিআই নজরে এবার পার্থর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া!
পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের শ্যালকের কন্যা সেই সুপারিশ পাঠাতেন পর্ণা বসুকে। পর্ণ বসু সেই সুপারিশের চিঠি পাঠাতেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে।
বিক্রম দাস: বিকাশভবনে কার মাধ্যমে পৌঁছত সুপারিশ? সিবিআই-এর নজরে এবার পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের শ্যালকের কন্যা! কেন? কারণ, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের শ্যালকের কন্যা বিকাশভবনেই ফ্লোর ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সিবিআই সূত্রে খবর পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের শ্যালকের কন্যা সেই সুপারিশ পাঠাতেন পর্ণা বসুকে। পর্ণ বসু সেই সুপারিশের চিঠি পাঠাতেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে। সুবীরেশ ভট্টাচার্য সেই অনুযায়ী অয়ন শীলের মাধ্যমে ওএমআর শিটে কারচুপি করতেন। সিবিআই তদন্ত আরও উঠে এসেছে, ২০১৫ সালে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মাধ্যমেই নাইসা শুধু ওএমআর শিট নয়, পরীক্ষাকেন্দ্র নির্বাচন থেকে টাইপ টেস্ট এবং সেন্ট্রাল কমিশনকে রেজাল্ট বিতরণেরও দায়িত্বের বরাতও পায়।
প্রসঙ্গত, ২৩ মার্চ আদালতে ঢোকার মুখে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় দাবি করেন, 'অনেকে সুপারিশ করেছে! আমাকে অনেকে তদ্বির করেছে। কিন্তু তাদের বলেছি কিছু করতে পারব না, আমি নিয়োগকর্তা নই। এ ব্যাপারে সাহায্য তো দূরের কথা কোনও কাজ বেআইনি করতে পারব না।' এরপর আদালতে বিচারকেরও কাছে '৫ মিনিটের' জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনে বলার সুযোগ পেয়েও তিনি দাবি করেন, 'আমার বিশ্বাস সত্য একদিন সামনে আসবে।'
ওদিকে, সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে ওএমআর শিটে নম্বর কারচুপির জন্য নাইসা কর্তা নীলাদ্রির সঙ্গে এসএসসি-র প্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছিল। নাইসা-র তরফে ওএমআর শিট মূল্যায়নের পর তা পাঠানো হত এসএসসি-র অফিসে। সেখানে নম্বর কারচুপিতে সাহায্য করতেন এসএসসি-র কর্মী পর্ণা বসু। এই কারচুপি যাতে ধরা না পড়ে, তার জন্য ওএমআর শিট ফের ফেরত পাঠানো হত মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসা-র কাছে। সেখানে আসল ডেটা শিটেও বদলে যেত নম্বর।
কাদের নম্বর ম্যানিপুলেট করা হবে, তার তালিকা নীলাদ্রির হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মিলেছে। এসএসসির এক কর্তার নম্বর থেকে তালিকা নীলাদ্রির কাছে পৌঁছয়। প্রথমে মোবাইলে পাঠানো হত তালিকা। পরে নীলাদ্রি তাঁর সংস্থার লোক পাঠিয়ে তালিকার হার্ড কপি সংগ্রহ করতেন। এমনকি প্রাপ্ত মেসেজ পাঠানো হত তাঁর সংস্থার কর্মীকেও। যাঁরা সার্ভারে নম্বর নথিভুক্তর কাজ করতেন বলে দাবি তদন্তকারী অফিসারদের।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ভবিষ্যতে তদন্ত হতে পারে তা আগেভাগে বুঝেই জাল বিছিয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। গাজিয়াবাদের ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার বাঙালি অফিসার নীলাদ্রি দাসকে পেয়ে চাকরি বিক্রির চক্রের কাজ আরও সহজ হয়েছিল। সুবীরেশ-নীলাদ্রি আঁতাঁতেই চলছিল কোটি কোটি টাকায় চাকরি কেনাবেচা। যার উল্লেখ চার্জশিটেও করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন, Udayan Guha: 'পিন্ডি দান শুনেছি, মৃত বাবার পিন্ডি চটকাচ্ছেন উদয়ন!'