কলকাতা: 'বছর চারেক পর'... জুলাই তিন, এই কবিতাই ফেসবুকের দেওয়ালে এঁকেছিলেন সৃজা, অবশ্যই স্বরচিত। এগারো জুলাই হুবহু সেই লেখনীই ফেসবুকের দেওয়ালে 'কপি টু কপি', যাকে বলে একেবারে টুকে দেওয়া। এতো বেশ ভালো কথাই, শিল্পীর সৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে দেওয়ালে দেওয়ালে, মননে মননে, চেতনায় চেতনায়। গণ্ডগোলটা বাঁধল একটা ছোট্ট জায়গায়, সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তার নাম পরিবর্তনে। খোলসা করে বললে যাক, শিল্প চুরি, কবিতা চুরি। হ্যাঁ, এটাই হল। অকৃজ্ঞতার চূড়ান্ত বললেও কম বলা হয়। কোনও শিল্প থেকে কিছু নিলে অনুমতি নেওয়া, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এসব শিখিয়ে দিতে হয় না, সৃষ্টিশীল আর প্রগতিশীলদের এইটুকু বোধবুদ্ধি থাকেই। তবে ফেসবুকের এই 'কবিতা চোর' যে শুধু অকৃতজ্ঞ তা বললে কম বলা হয়। এতোটা উপযাজকের মত কথাগুলো বলতে হচ্ছে, কারণ, চোর চুরি করে ধরা পড়ে যাওয়ার পর কবিকে নিয়েই শুরু করল 'নোংরামি'। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


সৃজা ঘোষ। এখন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের গণজ্ঞাপন ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর ছাত্রী। স্নাতকতা শেষ করেছেন শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ থেকে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতিদের মধ্যে সৃজা ঘোষ বরাবরই মেধার ভিত্তিতে প্রথম সারির অধিকারী। আর সবথেকে ভালোগুণের মধ্যে সৃজার হাতের কারুকাজ, অবশ্যই লেখাশৈলী। কবিতা প্রেম, ছোট বেলা থেকেই বালীর কবির। সেঅর্থে কোনও বড় প্রকাশনা না থাকলেও ফেসবুকের মত একটা ভার্সেটাইল প্ল্যাটফর্মে সৃজার কলম চলছে লাশকাটা ঘরের ডোমের মতই। প্রতিবাদের ভাষা যেমন ছিল তেমন প্রেমেও বসন্তের সুবাস ছিল ওর লেখনীতে। মর্মাহত কবি এই ঘটনার পর বলছেন, "সত্যি কথা বলব? কিচ্ছু বলতে ভাল লাগছে না, বলেই বা কী হবে? এরা বদলায় না, খারাপ লাগা একটাই, শিল্পটাও নোংরা করে দিচ্ছে"।


এভাবে রোজ শিল্পের চুরি, গাজোয়ারি করে শিল্পীকে নিয়েই ফেসবুকে নোংরামো! সৃজার ছবি দিয়েই তৈরি করা হয়েছে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, সেখানে সৃজার পদবীও পরিবর্তন করা হয়েছে, যা দেখে মর্মাহত লেখিকা। ক্ষুরধার লেখনীর স্রষ্ঠার মনে এখন, 'প্রতিদিন চুরি যায় মূল্যবোধের সোনা, আমাদের স্বপ্ন, আমাদের চেতনা', নচিকেতার এই সুর। আর হাজারো হাজারো প্রশ্ন, "এই চুরির কি কোনও কেস ডায়েরি হবে না? চোর কি শাস্তি পাবে না? নোবেল খোয়ার নিষ্পত্তি এখনও হল না, অন্তত আরও লেখাকে স-স্বত্তায় বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাও কী কেউ করবে না?