১৫ মাস আগেই থানায় বসে ভুয়ো IAS মুচলেকা দেবাঞ্জনের, নীরব পুলিস!
`জাল IAS`, ২০২০ সালেই মুচলেকায় স্বীকার করে দেবাঞ্জন।
সঞ্জয় ভদ্র: পুলিস যদি একটু সতর্ক হত। প্রশাসন যদি একটু তৎপর হত। তবে এক বছর আগেই হয়ত আটকানো যেত আজকের এই ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড। অনেকদিন আগেই হয়ত জেলে জায়গা হত প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের। Zee ২৪ ঘণ্টার হাতে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে, তা অন্তত এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কী সেই তথ্য?
জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের ইলেক্টনিক্স কমপ্লেক্স থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সরকারি চাকরির নামে ভুয়ো নিয়োগপত্র পাঠানোর অভিযোগ দায়ের করেন অরূপ দাস নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ পেয়ে দেবাঞ্জন দেবকে থানায় তুলে নিয়ে আসে পুলিস৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ প্রকাশ্যে আসে তার কুকীর্তি৷ পুলিস সূত্রেই ‘গুণধর’ ছেলের কার্যকলাপের কথা জানতে পারেন, তাঁর বাবা-মাও৷
আরও পড়ুন: ভুয়ো IAS-এর পর, মানবাধিকার কমিশনের নামে প্রতারণা, বাঁশদ্রোণী থানায় অভিযোগ দায়ের
এমনকি এও জানা গিয়েছে, ইলেক্টনিক্স কমপ্লেক্স থানায় বসেই ওইদিন পুলিসকে একটি মুচলেকা দেন দেবাঞ্জন দেব। যেখানে তিনি স্বীকার করেন যে, I&CA দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে অরূপ দাসকে ভুয়ো নিয়োগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। জাল সরকারি স্ট্যাম্প, জাল সই ব্যবহার করে ওই চিঠি তৈরি করেছেন। এমনকি তিনি কোনও IAS অফিসারও নন। পুরোটাই জাল!
অভিযোগ, সব জেনেও কিছুই করেনি পুলিস। কার্যত নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে প্রশাসন। জালিয়াতির কথা জেলেও দেবাঞ্জনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়নি৷ উদ্ধার করা হয়নি জাল সরকারি স্ট্যাম্প ও অন্যান্য সামগ্রী৷ সব জানার পরেও পুলিসের কি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা উচিত ছিল না?
আরও পড়ুন: পুলিসের নজরে দেবাঞ্জনের Whatsapp, ডিলিট করা চ্যাট পুনরুদ্ধার, মিলল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
এই বিষয়ে আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা বলেন, ‘এক্ষেত্রে মুচলেকা দিয়ে যখন একজন স্বীকার করে নিচ্ছে যে, তিনি জালিয়াতি করেছেন৷ প্রতারণা করেছেন৷ তখন কোনও অভিযোগকারী না থাকলেও, পুলিসের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা উচিত ছিল৷ অন্তত সুপ্রিম কোর্টও তেমনটাই বলেছে৷’
তবে এক্ষেত্রে কেন চুপ থাকল পুলিস? কেন সেদিনই দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? তাহলে তো আজকের ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের নায়ককে, সেদিনই শায়েস্তা করা যেত৷ প্রশ্নের মুখে পুলিসের ভূমিকা।