আগে যা এখনও তাই। একেবারে বাম আমলের ফোটোকপি। মাঝে মাঝেই আগের জমানার থেকেও বেপরোয়া। পালাবদলের পরও অরাজনৈতিক শিক্ষাঙ্গনের ধারণাটা এ রাজ্যে অনেকটা সোনার পাথরবাটির মতো।      জঙ্গি ছাত্র আন্দোলনই হোক বা পছন্দের লোককে পদে বসিয়ে দেওয়া। শিক্ষায় রাজনৈতিক দখলদারির অভিযোগ বাম আমলে ছিল ভুরিভুরি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আশির দশকের মাঝামাঝি এসএফআই-এর দাদাগিরিতে দীর্ঘদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেননি উপাচার্য সন্তোষ ভট্টাচার্য। শাসকদলের জামা গায়ে না দিলে স্কুল-কলেজে মাস্টারি পাওয়া দুষ্কর - মুখে মুখে শোনা যেত এ কথা। রাজনীতির গ্রাস থেকে শিক্ষার মুক্তি। বিধানসভা ভোটের আগে-পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় বারবার শোনা গেছে এই প্রতিশ্রুতি। দু-হাজার এগারোয় তৃণমূলের নির্বাচনী ইশতাহারে বলা হয়েছিল, শিক্ষায় দলীয় রাজনীতির অনুপ্রবেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বনাশ করেছে সিপিএম। শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি স্তরে নেতিবাচক প্রক্রিয়াগুলি বদল করে ইতিবাচক পথে আনা প্রয়োজন। নিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।


অরাজনৈতিক শিক্ষা ব্যবস্থার দু-একটা নমুনা দেখা যাক-


গত বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার পলাশিপাড়ায় তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।


স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল ছিলেন তৃণমূলের শিক্ষা সেলের দায়িত্বে।


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিত চক্রবর্তী শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।


শাসকদলের ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসানো হয়েছে বলেও
বারবার অভিযোগ উঠেছে।


রায়গঞ্জে অধ্যক্ষ নিগ্রহ


কয়েনের উল্টো দিকে আবার এই ছবি। শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বেলাগাম দাদাগিরি। বিরোধী দলের সমর্থক ছাত্রছাত্রীদের ওপর আক্রমণ তো নেহাতই মামুলি ব্যাপার। মহিলা অধ্যাপককে রেপ করিয়ে দেওয়ার হুমকি, অধ্যক্ষ-উপাচার্যদের পেটানোর লাইসেন্সও এখন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পকেটে।


এই কি অরাজনৈতিক শিক্ষাঙ্গনের নমুনা?


উত্তরটা যে না, তা সকলেরই জানা। তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি পূরণে ষোলো আনা ব্যর্থ সেটা কালীঘাটও জানে। কিন্তু, উপায় কী? কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল হাতে থাকলে এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বজায় রাখতে অনেক সুবিধা। আজ যে কলেজের দাদা, কাল সেই তো এলাকার দাদা! সুতরাং চলছে-চলবে। আর ক্রমশ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাবে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা! আলোয় ফেরার চেষ্টাটা এখনই
শুরু করা খুব জরুরি।