নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার রাজ্যের আবাসন ও দমকলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দিনভর নাটকের পর এখন তিনি নিজেই দল ছাড়বেন, নাকি দল তাঁকে বহিষ্কার করবে, তা নিয়ে এখন বাংলার সব রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে! কারণ, আবাসন ও দমকলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর মেয়র পদ থেকেও তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ মতো ইতিমধ্যেই তুলে নেওয়া হয়েছে মেয়রের জন্য বরাদ্দ থাকা সরকারি গাড়ি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অবর্তমানে যাবতীয় কাজের দেখভালের দায়িত্ব থাকবে কলকাতা পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদের উপর। অতয়েব, এই মুহূর্তে শোভন চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র তৃণমূলের একজন দলীয় কর্মী। শোভন চট্টোপাধ্যায় যে দুটি মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাতেন, অর্থাত্, আবাসন ও দমকল মন্ত্রকের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে রাজ্যেরই পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাতে।


এ দিন সকাল ১০টা ৪০ নাগাদ বিধানসভায় পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী নিজের ঘরে ঢোকার ৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মিনিট দশেকের আলোচনায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে বিস্তর ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর নবান্নে দমকল দফতরের অনুষ্ঠানে ফের পাশাপাশি দেখা যায় দুজনকে। সেখানেও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ নবান্নে নিজের ঘরে যান শোভন চট্টোপাধ্যায় আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি গৌতম স্যানালের হাতে নিজের ইস্তফাপত্র তুলে দেন তিনি। ৪টে ২০ মিনিট নাগাদ নবান্ন ছেড়ে বেরিয়ে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়।


দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদানীং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্মে খুবই অসন্তুষ্ট ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা, বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক— সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত জীবনের নানা টানাপোড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনকেও অমসৃণ করে তুলেছিল। এককালে মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তাই শেষমেশ মন্ত্রীত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হল। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভের মুখে এখন কলকাতার মেয়র পদও খোয়াতে বসেছেন তিনি।


এ দিকে নাম না করে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপিতে স্বাগত জানালেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এক প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “কেউ আমাদের দলে আসতে চাইলে, অবশ্যই আসতে পারেন। আমাদের তো কোনও বাধা নেই। তবে সব কিছু খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”


এ বার প্রশ্ন উঠছে, সমস্ত পদ খুইয়ে একজন সাধারণ তৃণমূল কর্মী হিসেবেই কি দলে থাকবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? নাকি তাঁকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হবে? দল বদলে এ বার কি মুকুল রায়ের পথে পা বাড়াবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও কিছুটা সময় অপক্ষা করতেই হবে।