নিজস্ব প্রতিবেদন: রুল বুক ভেঙেছেন রাজীব কুমার। সেই  অভিযোগে এবার আইপিএস রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল ট্রেনিং (DOPT)। নজরে রাখা হচ্ছে গোটা বিষয়টাই। এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে পি নাড্ডা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমার একজন আইপিএস অফিসার। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, কোনও আইপিএস অফিসার যখন রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত থাকেন, তখন তাঁরা স্টেট ক্যাডারের আওতায় চলে যান। সেক্ষেত্রে তাঁরা রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। তখনই জে পি নাড্ডা বলেন, ডিওপিটি ব্যবস্থা নিতে পারে।


উল্লেখ্য, এই ডিওপিটি বা কার্মিক এবং প্রশিক্ষণ বিভাগের অধীনে আইএস, আইপিএস, আইএফএস, সিএসএস-দের প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। আইপিএসদের নিয়োগের সময় প্রশিক্ষণ দেয় ডিওপিটি। নাড্ডা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনও আইপিএস অফিসার কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের ধরনায় থাকতে পারেন না। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা ধরনা মঞ্চে উপস্থিত থেকে সার্ভিস রুল লঙ্ঘন করেছেন রাজীব কুমার। এই কারণেই কলকাতা পুলিস কমিশনারের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে ডিওপিটি।



এর আগে সিবিআইয়ের আবেদন গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-ও কলকাতা পুলিস কমিশনারের উদ্দেশে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, "যদি কলকাতার পুলিস কমিশনার স্বপ্নেও তথ্যপ্রমাণ নষ্টের কল্পনা করে থাকেন, তাহলে তার প্রমাণ আদালতের সামনে পেশ করুন। তাঁর বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেব যে সারা জীবন পস্তাবেন।"


প্রসঙ্গত, ডিএসপি তথাগত বর্ধনের নেতৃত্বে সিবিআই অফিসারদের ৪০ জনের একটি দল রবিবার সন্ধ্যায় চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যায়। সিপির বাসভবনে ঢোকার মুখেই তাদের আটকায় কলকাতা পুলিস। রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েন সিবিআই অফিসাররা। রাস্তার উপরই দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। কলকাতা পুলিস কর্তাদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতি বেঁধে যায় সিবিআই আধিকারিকদের। এরপর তথাগত বর্ধন সহ সিবিআই অফিসারদের আটক করে টেনে হিঁচড়ে শেক্সপীয়ার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।


আরও পড়ুন, সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টরকে পালটা প্রতারণা মামলায় নোটিস কলকাতা পুলিসের


এদিকে সিপির বাসভবনে সিবিআই হানার খবর পেতেই লাউডন স্ট্রিটে ছুটে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপির বাসভবনেই কলকাতা পুলিস ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক সারেন তিনি। বৈঠকের পর সিপির বাসভবনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সত্যাগ্রহের ডাক দেন। রবিবার রাত থেকেই ধরনায় বসার কথা জানান তিনি। এরপর সিপির বাসভবন থেকেই সোজা মেট্রো চ্যানেলে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে ধরনায় বসেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পরই নিজের বাসভবন থেকে শেক্সপীয়ার থানায় যান রাজীব কুমার। তারপর থানা থেকে সোজা মেট্রো চ্যানেলে এসে ধরনা মঞ্চে যোগ দেন রাজীব কুমার।


পুলিস প্রশাসনের একজন শীর্ষ কর্তা হয়ে এভাবে ধরনা মঞ্চে যোগ দেওয়াতেই রাজীব কুমার তাঁর চাকরির নিয়ম ভেঙেছেন বলে অভিযোগ। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বারই দাবি করেছেন, এটা একটা অরাজনৈতিক মঞ্চ। এদিনও ধরনা মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশেই দেখা যায় রাজীব কুমারকে। ধরনা মঞ্চ থেকেই পুলিস পদক প্রদান করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে একে একে পদকগুলি তুলে দিতে দেখা যায় কলকাতা পুলিস কমিশনারকে।



পাশাপাশি রবিশঙ্কর প্রসাদ এদিন আরও বলেন, "দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তে বাধা দিচ্ছেন। ২০১৬ নির্বাচনের আগে রাজীব কুমারকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়েছিল। তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নির্বাচনের পরই আমি আবার তাঁকে ফিরিয়ে আনব।"