অয়ন ঘোষাল: নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে ১৪ দিনের হেফাজতে পেয়েছে ইডি। ২০১৪ টেট-এর ৩২৫ জন চাকরীপ্রার্থীর নাম প্রকাশ্যে আনে ধৃত তাপস মন্ডল। ইডির কাছে বয়ানে তাপস দাবি করে, সুজয় ভদ্রের মাধ্যমে ওই তালিকা তিনি পাঠান তত্কালীন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। এমনই বহু অভিযোগ উঠছে কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে। ইডি হেফাজতে গিয়ে সেই সুজয়কৃষ্ণ মুখ কিছু তুলতে চাইছেন না। এমনটাই খবর ইডি সূত্রে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-'সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশেই পার্থকে ১০ লক্ষ টাকা দেন কুন্তল'!


বুধবার আদালত থেকে রাত ৯ টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আনা হয় সুজয় কৃষ্ণকে। দেওয়া হয় রাতের খাবার। কিন্তু সেই খাবারের বিশেষ কিছুই মুখে তুলতে চাননি কাকু। এমনটাই খবর ইডি সূত্রে। সুজয় কৃষ্ণর বয়সজনিত বেশকিছু শারীরিক অসুস্থতা আগে থেকেই রয়েছে। কয়েকমাস আগে তাঁর হৃদযন্ত্রে ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খুব বেশি সময় ঠিক ভাবে খাওয়া দাওয়া না করলে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে কাকুর। সে কথা মাথায় রেখে ইডি অফিসাররা তাঁকে নানা ভাবে বোঝানোর এবং সঠিক খাওয়া দাওয়ার অনুরোধ করছেন। ইডির আশঙ্কা, হেফাজতের ১৪ দিনের মধ্যে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে এভাবে গোঁ ধরে থাকলে তাকে সঠিকভাবে জেরা করাই যাবে না। ফুরিয়ে যাবে ইডি হেফাজতের মেয়াদ। তাকে পাঠানো হতে পারে জেল হেফাজতে। তখন তার পেট থেকে কথা বের করতে অসুবিধা হতে পারে। তাই বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাকে সঠিকভাবেই খাওয়া দাওয়া করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ইডি।


সুজয় ভদ্র ইডির কাছে দাবি করেন, ২০২১ সালের আগে তিনি মানিককে চিনতেন না। কিন্তু মানিকের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলের Whatspp চ্যাট ঘেটে ইডি দেখে ২০১৮ সাল থেকে সুজয় মানিকের যোগাযোগ রয়েছে। টেট ২০১৪ প্রার্থীদের মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড মানিকের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান সুজয়। রাহুল বেরা নামে একজনের নামে ছবি ও অ্যাডমিট কার্ড-সহ ডক্যুমেন্ট যেগুলো নিয়োগ দুর্নীতি সঙ্গে যুক্ত সেগুলো উড়িয়ে দেওয়া হয়। 


এই নথির ওড়ানোর উদ্দ্যশ্যে ছিল তদন্তকে ব্যহত করা। যে তদন্তে নাম উঠে এসেছে সাংবিধানিক পদে থাকা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এবং কয়েকশো কোটি টাকার দুর্নীতি যুক্ত বলে দাবি। কাকুর মোবাইলেই কি লুকিয়ে সূত্র? মুছে দেওয়া বহু উদ্ধার ইডির। মোবাইলের তথ্য সামনে রেখে জেরা সুজয়কে। মেজাজ হারিয়ে তদন্তকারীদের উপর চোটপাট সুজয়ের। খবর ইডি সূত্রে। 


টালির চালের মুদির দোকান থেকে কালীঘাটের কাকুর রকেট গতিতে উত্থান। নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা রিয়েল এস্টেটে খাটান সুজয় ভদ্র। কালীঘাটের কাকুর আরও একটি কোম্পানির হদিশ। ২০১০ সালে কোম্পানি খুলে মোটা টাকার লেনদেন। কালো টাকা সাদা করতেই আচমকা কোম্পানি বন্ধ? তদন্তে ইডি। বিরোধী নেতা শুভেন্দুর দাবি, কালীঘাটের কাকুর হাত দিয়ে তৃণমূল যুবার রেজিস্ট্রেশন। বেহালায় টাকা জমা হত, সেই টাকা পাঠানো হত কালীঘাটে। আর মাত্র একটা ধাপ, কান টানলেই এবার মাথা আসবে।


'সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কথামতো পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১০ লক্ষ টাকা দেন কুন্তল ঘোষ',আদালতে বিস্ফোরক দাবি করলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখন ইডির হেজাজতে তৃণমূলের সাসপেন্ডেড যুবনেতা কুন্তল ঘোষ।  তাঁর মুখেই প্রথম 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। গতকাল, মঙ্গলবার  সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র আধিকারিকরা। এবং শেষপর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় সুজয় কৃষ্ণকে!


ইডি সূত্রের খবর, জেরায় বেশ কয়েকটি প্রশ্নে সুজয়কৃষ্ণের জবাব সন্তোষজনক নয়। বেশ কয়েকটি প্রশ্নে আবার জবাব এড়িয়েও গিয়েছেন তিনি। এদিন ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতের আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি জামিনের আবেদন করেন। সেই আবেদন অবশ্য খারিজ হয়ে গিয়েছে। সুজয়কে ১৪ দিনের ইডি  হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)