কলকাতা: "এক পুরুষে হয় না! ওর চাই আরও আরও পুরুষ! এক একটা করে সম্পর্ক, আর সব রস নিঙরে নিয়ে একটা তেতো হওয়া লেবুর মত করে পুরুষকে ছুঁড়ে ফেলা, এটাই ওর স্বভাব"। অভিযোগের তির কলকাতার এক পুরুষ মডেলের দিকে। আর যিনি অভিযোগ করছেন তিনি কলকাতারই এক মেকআপ আর্টিস্ট। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি ৬ মাসের সম্পর্কে ইতি টানতেই হল অপলককে (নাম পরিবর্তিত)। আয়ান (নাম পরিবর্তিত) তাঁর সেই স্বপ্নের পুরুষ ছিল, যার হাত ধরে 'হাজার হাজার সূর্যাস্তের' সাক্ষী থেকেছেন অপলক। দীঘার সমুদ্র সৈকতে কতবার নিজেকে নদী করে দিয়েছেন অপলকের শরীরী গর্ভে। আসমুদ্রহিমাচল সব এক করে সমাজের বয়ে যাওয়া স্রোতের উল্টেদিকেই প্রেমের ভেলা ভাসিয়েছিলেন অপলক। এরপর ভাঙন! এক নয়, একাধিক পুরুষের সঙ্গেই সম্পর্ক, হাতে নাতে ধরা পড়তেই অস্বীকার। ঢুকে পরল পরিবারও। আর স্রোতের প্রতিকূলে নৌকা এগোল না। অপলকের মা আয়ানকে বলে, "আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও, একটা ভাল মেয়ে দেখে বিয়ে করে নাও"। টুটি টিপে শেষ হল প্রেম। "সমকামী প্রেম"। তবে সমাজের জন্য নয়, প্রতারণার জন্য। (সচেতনতাই ভালবাসার মূল সুর)


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



এখন প্রশ্ন এটাই, প্রেমে প্রতারণার তো হাজার হাজার, লাখো লাখো উদাহরণ আছে, তাহলে এই ঘটনা কেন খবরের শিরোনামে? এল তার এক এবং অভিন্ন কারণ, সমকাম এবং প্রতারণা, সঙ্গে অবশ্যই আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব প্রেম দিবস। কলকাতা আজই সাক্ষ্মী থাকল এমন এক ঘটনার যা এই দিনটার নাম বদলে 'প্রতারণা দিবস' করে দিল অবলীলায়! অন্তত অপলকের কাছে তো তাই!  সেই একই কায়দা, 'প্রেমের প্রতিশ্রুতি আর তারপর মনের ইচ্ছে মত সহবাস...'। আয়ানের ক্ষেত্রে অবশ্য অভিযোগটা আরও গুরুতর। "মিষ্টি কথা বলতে পারা ছেলেটা, ভালো গান গাইতে পারা ছেলেটা আসলে একজন ধুরন্দর প্রতারক। আমার টাকায় তিন তিনবার দীঘা ঘোরা। জামা, জুতো, হেড ফোন উপহার আর সময় অসময়ে টাকা নেওয়া, এসবের সব প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে", মডেল আয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ মেকআপ আর্টিস্ট অপলকের। এই বিষয়ে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথাও ভাবছেন অভিযোগকারী।   


 



অপলকের মোবাইল আজও অক্ষত আয়ানের সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো। ঘুমের দেশে যাওয়ার আগে কোটি কোটিবার বলা 'আমি তোমাকে ভালবাসি' আজও অক্ষত মমির মতই। আয়ানকে (নাম পরিবর্তিত) গোটা বিষয় জানিয়ে টেক্সট করা হলেও তার কোনও উত্তর তিনি দেননি। ২৪ ঘণ্টা ডট কম তাকে ফোন করে সমস্ত বিষয়টায় তার মত জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেও কোনও কথা বলেননি। এক বার নয়, তিন তিন বার তাকে ফোন করা হলে তিনি প্রত্যেকবারই কল রিসিভ করে কোনও কথা বলেননি। 


 



এই বিষয়ে আইনজীবী ভাস্কর মজুমদারের মত, যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাহলে, "ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রজু হতে পারে, আর দোষ প্রমাণিত হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানাও হতে পারে অভিযুক্তের"। আইনজীবী ভাস্কর মজুমদার এর সঙ্গেই যুক্ত করেন এই ধরনের ঘটনায় পুলিস অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৬ ধারায়ও মামলা করতে পারেন, এমনকি ৩৭৭ ধারায় লাগু করা হতে পারে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য এই সব ধারাই জামিন অযোগ্য ধারা।