স্মার্টফোনের টানে `ভোকাট্টা` চাঁদিয়াল, পেটকাটি
কমলিকা সেনগুপ্ত
অনেকদিন পর বিশ্বকর্মা পুজোয় ছুটি পেলাম। অফিসের সাপ্তাহিক ছুটি আর বিশ্বকর্মা পুজো একইদিনে পড়ে গিয়েছে এবছর। সকালে উঠেই নস্ট্যালজিক হয়ে পড়লাম। হঠাৎ মনে গেল ২০ বছর আগে সেদিনগুলির কথা। বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই পড়াশুনো লাটে উঠে যেত। এই দিনটায় ছাদের ওঠার অনুমতি মিলত। দাদারা দল বেঁধে ঘুড়ি ওড়াত। আমরা দেখতাম, কার ঘুড়ি কতটা উপরে উঠেছে। লাটাই ধরতাম। অনেক সময় দাদারা ঘুড়ি উড়িয়ে হাতে ধরিয়ে দিতেন। ঘুড়ি কেটে যাওয়ার পর সমস্বরে ভোকট্টা... সেই থ্রিলটা ছিল একেবারে অন্যরকম। বাবা-কাকা-দাদাদের সঙ্গে গোটা দিন কেটে যেত চাঁদিয়াল, পেটকাটিদের সঙ্গে।
আজ ভাবলাম ছাদে যাব। বাসা বদলেছে। বাড়ির জায়গায় এখন ফ্ল্যাট। ভাবলাম আর কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখব ঘুড়ি ও লাটাই নিয়ে ছাদে উঠছে খুদেরা। আবার দেখব ছেলেবেলার সেই ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা। আমার মতোই অপেক্ষায় আশেপাশের ফ্ল্যাটের ছাদগুলি। এমন সময়েই হঠাত্ নজরে পড়ল কয়েকজনকে। কিন্তু ঘুড়ি তো নেই! হাতে স্মার্টফোন। সবাই ব্যস্ত ভার্চুয়াল খেলায়। নীল তিমির খেলায় প্রাণ হারিয়েছে অনেকে। কিন্তু সে তো শুধু একটা খেলা। নীল তিমি তো বরং স্মার্টফোনটাই। মুঠোফোনের গ্রাসেই তো হারিয়ে গেছে শৈশব। হারিয়ে গেছে নানা রঙের ঘুড়িতে রঙিন শরতের আকাশ। আমি একা। আমার মতো একা ছাদ। শৈশবের স্মৃতিতে আবার ডুব দিলাম। ওই তো একদল হাসিখুশি খুদে সমস্বরে চেঁচাচ্ছে ভোকট্টা...