সাংবাদিকতায় মানবিকতার পাঠ: পথশিশুদের নিয়ে পুজো পরিক্রমা
এই দিন পথশিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন জামা। নতুন জামা পরে ওরাও ঠাকুর দেখতে ভিড় জমাবে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে।
সুদীপ দে: বছর সাতেক আগে দুঃস্থ পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর এক মানবিক সংকল্প নিয়ে পথচলা শুর করেন একদল মানুষ। লক্ষ্য ছোঁয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সংখ্যাটা নেহাতই হাতে গোনা! এদের একদল ভাবি সাংবাদিক আর কয়েকজন সাংবাদিক গড়ার কারিগর।
বিগত সাত বছরের মতো এ বছরেও মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের উদ্যোগে আগামী ১৪ অক্টোবর, রবিবার, মহাপঞ্চমীর দিন আয়োজিত হবে পুজো পরিক্রমা। কলকাতা তথা বাংলার নানা প্রান্তের দুঃস্থ পথশিশুদের সঙ্গে নিয়ে উত্সবে সামিল হওয়ার জন্যই প্রতি বছর এই বিশেষ পুজো পরিক্রমার আয়োজন করা হয়।
এই দিন পথশিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন জামা। নতুন জামা পরে ওরাও ঠাকুর দেখতে ভিড় জমাবে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, সকলেই একজোটে অর্থ সংগ্রহ করে এই শিশুদের নতুন জামা কিনে দেওয়া, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসে করে ঘোরানো থেকে শুরু করে বিশেষ এই পুজো পরিক্রমার যাবতীয় খরচ জোগান। গোটা আয়োজনটাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে। মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের এই আন্তরিক উদ্যোগ এ বার অষ্টম বর্ষে পদার্পণ করল। এই বছরের পুজো পরিক্রমায় অংশ নিচ্ছে রাজাবাজার, খান্না, মানিকতলা এলাকা সববাসকারী সত্তরেরও বেশি শিশু। সারা বছর দারিদ্র, অনাহারের সঙ্গে লড়াই করতে করতে যে সব শিশুদের শৈশবটাই অকালে হারিয়ে যায়, তাদের সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলাই এই পুজো পরিক্রমার মূল উদ্যেশ্য।
মহাপঞ্চমীর দিন সকাল ১০টায় কলেজ একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন জামা-কাপড়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশুকল্যান মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা। উপস্থিত থাকবেন আলমবাজার রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সারদা আত্মস্থানন্দ, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা।
এই দিন সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে পরিক্রমা। দমদম, সল্টলেক ও নিউটাউনের নির্বাচিত কয়েকটি পুজো মন্ডপ ঘুরে দেখবে এই কচিকাচার দল। নিউটাউন এএ ব্লকের প্রথম বর্ষের পুজোর উদ্বোধন হবে এই শিশুদের হাত ধরেই। এর পর সেখানেই খাওয়া-দাওয়া সেরে যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়া হবে ওই শিশুদের।
এই ছাত্রছাত্রীরা মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে সাংবাদিকতার পাঠ নিচ্ছেন। একই সঙ্গে সমাজকে মানবিকতার এক অনন্য শিক্ষা দিচ্ছেন তাঁরা। তাই এই শিশুদের বিশেষ পুজো পরিক্রমা উপহার দিয়েই থমকে যাবে না মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রচেষ্টা। এই শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টায় সারা বছর ধরে আরও বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা রয়েছে। অপেক্ষা শুধু সময়ের, অপেক্ষা শুধু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে আমার-আপনার এগিয়ে আসার।