কলকাতা: 'ধর্মের দাবানলে ভালোবাসার বৃষ্টি। শান্ত হও বসিরহাট, শান্ত হও বাদুড়িয়া'। 'হিংসা নয়, শান্তি চাই', কবিতায় বার্তা দিলেন নাগরিক কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। কবি লিখলেন, 'উটকো কিছু মিথ্যে মানুষ, ঘরভাঙানো লোক/ভালবাসার সামনে তাদের শাস্তি দেওয়া হোক'। শ্রীজাতর কলম ফের আরও একবার গর্জে উঠল ধর্মের নামে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়া সেইসব স্বার্থান্বেষী মানুষের বিরুদ্ধে। 'বসিরহাট-বাদুড়িয়ার' অগ্নিগর্ভ অবস্থার অবসান চেয়ে শান্তির বার্তাই ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে পোস্টারের মত এঁটে যাচ্ছে আরও একবার, আর তাতে লেখা থাকছে কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাইন, 'দাঙ্গা যাদের ধর্ম তারা আমার পড়শি নয়'।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি সরগরম বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ড নিয়ে। গত শনিবার ১৭ বছরের এক কিশোরের একটি বিতর্কিত পোস্ট নিয়েই শুর হয়েছিল বিবাদ। ফেসবুকের ওই বিতর্কিত পোস্ট থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন গ্রামে। 'ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করেছে', এই অভিযোগেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। আসতে আসতে পরিস্থিতির অবনতি শুরু হয়। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় লুটপাঠ। ভাঙচুর হয় অসংখ্য দোকানপাট। ঘরছাড়া হয় বহু মানুষ। উত্তেজিত জনতা জ্বালিয়ে দেয় পুলিসের গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তড়িঘড়ি নামানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। আজ ৬ দিন পর পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে বলে দাবি রাজ্য প্রশাসনের। 


এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তার জন্য ভুল ভাবে ফেসবুকের ব্যবহারকেই দায়ী করেছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইচ্ছে করে অশান্তি তৈরি করা হচ্ছে, এমনও অভিযোগ ছিল তাঁর। শান্তি ফিরিয়ে আনতে শান্তিরক্ষা বাহিনী গড়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও রকম 'গুজবে' যেন নতুন করে অশান্তি না ছড়িয়ে পড়ে সেই জন্য তৎপর হয়েছে রাজ্য পুলিসও। এমন অবস্থায় সমাজের প্রগতিশীলদের এগিয়ে আসা রাজ্যের 'অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে' হিমশৈলের মত কাজ করবে বলেই মনে করছে বুদ্ধিজীবী মহল। 


উল্লেখ্য, এর আগেও রাজনীতি এবং নানান সামাজিক বিষয়ে নিজের কথা কবিতায় ব্যক্ত করেছেন কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্ম দিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি, অরাজকতার বিরুদ্ধে কথা বলে খুনের হুমকি পর্যন্ত পেয়েছেন কবি শ্রীজাত। তবে তিনি থেমে থাকেননি। কখনই বিশ্রাম নেয়নি তাঁর কলম। অক্লান্ত, অবিরাম প্রতিবাদে আজও তিনি তফাৎ গড়েন শিরদাঁড়ায়।