অর্নবাংশু নিয়োগী: মন্ত্রীকন্যা পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে সরিয়ে স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন শিলিগুডির ববিতা সরকার। মন্ত্রীকন্যার চাকরি যাওয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। এবার চাকরি যাচ্ছে সেই ববিতা সরকারেরই। কেন? তিনি নাকি অ্যাকাডেমিক স্কোরের ক্ষেত্রে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। অঙ্কিতার কাছ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন ববিতা। সেই টাকাও এখন ফেরত দিতে হবে ববিতাকে। ফলে মঙ্গলবার এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডে এক বড় ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-কীভাবে চাকরি পেলেন ববিতা? হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের সওয়াল রাজ্যের


মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন ববিতা সরকার তাঁর একাডেমিক স্কোর নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় চাকরি পাওয়া উচিত অনামিকা রায়ের। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ববিতা জানিয়েছেন ১১ লাখ টাকা কালই তিনি ফেরত দিয়ে দেবেন। বাকী টাকা তিনf দেবেন।


পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে যান ববিতা সরকার। তাঁর অভিযোগ ছিল মেধা তালিকায় নীচে থাকা সত্বেও তাঁকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চাকরি চলে যায় অঙ্কিতা অধিকারীর এবার তাঁর মাইনের টাকা ফেরতও দিতে হয়। ওই জায়গায় নিয়োগ করা হয় ববিতা সরকারকে। এবার দেখা যাচ্ছে ববিতা তাঁর অ্যাকাডেমিক স্কোর নিয়ে ভু তথ্য দিয়েছিলেন। তাই সেই চাকরি এবার বাবিতার হাত ঘুর যাচ্ছে অনামিকা রায় নামে একজনের কাছে। 


চাকরি যাওয়ার নির্দেশ নিয়ে ববিতা বলেন, বিষয়টি এতদিন আমিও বুঝতে পারিনি। কমিশন ভুল করে ২ নম্বর বেশি দিয়েছিল। অনেকে এতদিন চাকরি করেছেন। তারা কেউ কারও নম্বর জানে না। আমরা শুধু একটি তালিকা পেয়েছিলাম। সেই লিস্ট অনুযায়ী আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমার কেসেই বলা হয় কে কত নম্বর পেয়েছে তা প্রকাশ করা হোক। যদি নাইন টেনের বিষয়টি দেখেন তাহলে আমার নম্বর ঠিকিই রয়েছে। আর যদি ইনেভশ্রেন ও টুয়েলভ দেখি তাহলে আমার ২ নম্বর বেশি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমি আমার আইনজীবীকে জানাই। কেন এটা কমিশন করেছে তা বুঝতে পারছি না। ওই ২ নম্বর কম হলে আমরা র্যাঙ্ক পিছিয়ে যায়। আমার লড়াইয়ের আর বাস্তবতা থাকে না।  আমি লড়াই করেছিলাম এসএসসিতে অনিময়মের বিরুদ্ধে। চাকরির দাবি আমি করিনি।


আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়ে কী বললেন অনামিকা রায়? ন্যায়ের জয় হয়ই। কোনও না কোনও সময় ন্যায়বিচার পাব এমনটাই আশাবাদী ছিলাম। ববিতা সরকার যখন চাকরিতে যোগ দেন তখন আমি জানতাম না ওই অ্য়্াকাডেমিক স্কোরে ভুল রয়েছে। ডিসেম্বর মাসে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ববিতা সরকারের অ্য়াকাডেমিক স্কোরে ভুল আছে। তাঁর স্কোর থেকে ২ নম্বর কমে গেল তাঁর র্যাঙ্ক অনেকটাই কমে যায়। 


উল্লেখ্য, ববিতা নন, চাকরির প্রকৃত দাবিদার তিনিই। এই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন অনামিকা রায়। অনামিকার দাবি, ফর্ম পূরণের সময় ববিতা লিখেছিলেন যে তিনি স্নাতক স্তরে  ৮০০ র মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন, এবং শতাংশের হিসাবে ৬০ শতাংশ পেয়েছেন। যদি হিসাব করে দেখা যাচ্ছে যে শতাংশের হিসাবে এটি ৬০ শতাংশের কম। অনামিকার আরও দাবি, কেউ যদি ৬০ শতাংশ বা তার বেশি পান তাহলে তিনি ৮ নম্বর পাবেন। আর কেউ যদি ৪৫ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পান তাহলে তিনি ৬ নম্বর পাবেন। তাহলে হিসাব অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রের ববিতার প্রাপ্য নম্বর ৩৩ এর পরিবর্তে ৩১ হওয়া উচিত।  মোট নম্বরও ৭৭ এর পরিবর্তে ৭৫ হওয়া উচিত।


অনামিকার দাবি, প্রাথমিকভাবে যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশিত হয়েছিল সেখানে ববিতা সরকার ক্রমতালিকায় ২০ নম্বরে ছিলেন এবং অনামিকা ছিলেন ২১ নম্বরে। পরে মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নাম বেআইনিভাবে ১ নম্বরে ঢোকানোর পর,  ববিতা ২১ এবং অনামিকা ২২ নম্বরে চলে যান বলে দাবি মামলায়। এই মামলা চলাকালীন অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে পাওয়া প্রায় ১৬ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)