বিক্রম দাস: গার্ডেনরিচে ছাত্রভোটের ঝামেলায় পড়ে খুন হন সাব ইনস্পেক্টর তাপস চৌধুরী। ওই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জামিনে ফেরার। সন্দেশখালিতে সদ্য দুষ্কৃতীদের ধরতে গিয়ে প্রাণ খোয়ালেন গ্রামীণ পুলিস কর্মী। জখম এএসআই। সমাজবিরোধীদের হাত থেকে বাঁচতে টেবিলের তলায় ফাইল নিয়ে পিঠ বাঁচাতেও দেখা গিয়েছে পুলিসকে। সেই রাজ্যের পুলিস কর্তারাই হয়ে উঠলেন 'বিপ্লবী'। দিল্লির পুলিস কর্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে হোয়াটসঅ্যাপে টেটাস দিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। যেমন তেমন নয়, একেবারে পাশে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের ডাক।                    


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১৩ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি গার্ডেনরিচের হরিমোহন কলেজে ছাত্রভোটের অশান্তি থামাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এসআই তাপস চৌধুরীর। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ১৫ নম্বর বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে চেয়ারম্যান সাব ওরফে মুন্না এখন জামিনে মুক্ত। ৬ বছর কাটলেও মামলার বিচার চলছে। এমনকি চেয়ারম্যান সাবের বিরুদ্ধে পুলিসই প্রত্যক্ষদর্শী হতে নারাজ। আশ্চর্য শোনালেও একেবারে খাঁটি সত্যি। সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিসের ইনস্পেক্টর অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাবকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। তিনি পারেননি। আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী, তিনিও পুলিস কর্মী। পারেননি সনাক্ত করতে। আজ্ঞে হ্যাঁ, সহকর্মীর খুনিদের ধরিয়ে দিতে পারছে না পুলিসই।    



আচ্ছা পশ্চিমবঙ্গই তো দেখেছে পুলিস ফাইল নিয়ে লুকিয়ে পড়ছে টেবিলের তলায়। কখনও টালিগঞ্জ থানার ভিতরে ঢুকে পুলিসকেই মারধর করা হয়েছে। রাস্তার মধ্যে পুলিসকে চড় মেরেছেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন প্রায়ই ঘটছে বাংলায়। এই তো সেদিন সন্দেশখালিতে দুষ্কৃতীদের ধরতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ভিলেজ পুলিস কর্মী। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম এএসআই। তখনও বিবেক জাগেনি রাজ্যের পুলিস কর্তাদের। কখন বিবেক জাগল?


দিল্লিতে তিসহাজারি আদালতে পুলিসকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। আদালতে গাড়ি রাখা নিয়ে পুলিস ও আইনজীবীদের মধ্যে বাঁধে সংঘর্ষ। আহত হয়েছেন দুপক্ষের ২৮ জন। ওই ঘটনাতেই দিল্লি পুলিসের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পুলিস কর্মীরা। আর সেই বিক্ষোভের পুলিস কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন বঙ্গের পুলিস কর্তারা। বিবেক জেগে উঠেছে তাঁদের। আচ্ছা তাপস চৌধুরীর জন্য বিবেক জাগল না কেন? আচ্ছা সাংসদের হাতে নিগৃহীত সহকর্মীর জন্য বিবেক জাগল না কেন? তাও তো দিল্লি পুলিস প্রতিবাদটুকু করেছে। প্রতিবাদ করতে পেরেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কী হয়েছে? ওই তো হোয়াটসঅ্যাপ টেটাসে দিল্লি পুলিসের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের পুলিস কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, সাম্যের অধিকার। শোনার অধিকার। সমান বিচারের অধিকার চাই। তিসহাজারির পুলিস কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর এটাই আদর্শ সময়। 



তা তাপস চৌধুরীর পরিবারের পাশে কবে দাঁড়াবেন? কবে সুবিচার পাবে ওনার বিদেহী আত্মা? কবে দাঁড়াবেন সন্দেশখালির গ্রামীণ পুলিস কর্মীর পাশে? আদর্শ সময় কবে আসবে? নাকি দিল্লি পুলিসের পাশে দাঁড়িয়েই 'সিংহম' হবেন? প্রশ্ন, প্রশ্ন আর প্রশ্ন।    


আরও পড়ুন- লাল টকটকে আপেল, কাশ্মীরের ৫ শ্রমিক হত্যায় প্রশ্ন তুলে কবিতা লিখলেন মমতা