JU Student Death: হস্টেলের বারান্দায় টবে গাঁজার চাষ হতো, ধৃত পড়ুয়াদের মোবাইল ঘেঁটে উদ্ধার ছবি
JU Student Death: পুলিস আবাসনের অন্য এক মহিলা জানান, ওদের দেওয়ালের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন ওখানে কী চলে। কিচেনে গেলে পর্দা দিয়ে রান্না করতে হয়। তা না হলে এত বাজেবাজে কথা বলবে যে সহ্য করা যায় না। যে কোনও মহিলা হলেই হবে
পিয়ালি মিত্র: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। হস্টেলের বারান্দার টবে চাষ হতো গাঁজার। অভিযুক্তদের মোবাইল পরীক্ষা করে পাওয়া গিয়েছে সেই ছবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যুর পর হস্টেলের আবাসিকদের মোবাইল থেকে সেই ছবি মুছে ফেলা হয়। সেই ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। এমনটাই খবর পুলিস সূত্রে।
আরও পড়ুন-ল্যান্ডিং নয়, চন্দ্রাভিযানের সবচেয়ে জটিল অংশ ছিল এটাই...
ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে হস্টেলে থাকা বহু পড়ুয়ার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেইসব মোবাইল থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ডিলিট করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখেন তদন্তকারীরা। সেই ডেটা এক্সট্রাকশন করতে গিয়েই দেখা গিয়েছে হস্টেলের বারান্দার টবে গাঁজার চাষ হচ্ছে। এমনটাই দাবি পুলিস সূত্রে।
এদিকে, তদন্ত উঠে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেটি হল হস্টেলের জানালায় দাঁড়িয়ে অশ্রাব্য ভাষায় প্রায়ই গালিগালাজ করে পডুয়ারা। কুত্সিত অঙ্গভঙ্গীও করা হয়। হস্টেলের পাশে থাকা পুলিস আবাসনের আবাসিকরা জানালেন তাদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা। জি ২৪ ঘণ্টাকে এক মহিলা জানালেন, হয়তো ঘরে লাইট জ্বালালাম। তার পরেই ওরা গালিগালাজ আরম্ভ করে। এমন কথাবার্তা ওদিক থেকে আসে যে আমরা মা ও স্বামী বসে থাকতে পারেন না। ওইসব কথা শোনার পর মায়ের দিকে তাকাতে পারি না। এতটা খারাপ ভাষায় কথা বলে যে ভাবতেই পারবেন না। সামনের বাড়ির কাকীমা বলেছেন এনিয়ে তারা আগে বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছেন। তবে আমরা এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত যাব বলেও ভেবেছি।
মেইন হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর তদন্তে উঠে এসেছে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে জানলায় দাঁড়িয়ে গালিগালাজ দিতে বাধ্য করা হতো। এনিয়ে ওই মহিলা বলেন, জোর করে কাউকে গালিগালাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছিল কিনা বলতে পারব না। কেউ এতটাই বোকা নয় যে আমার জানালার সামনে দাঁড়িয়ে গালাগালি করবে। তবে মনে হতো একটাই ভাষা যেন মুখস্তের মতো বলছে।
পুলিস আবাসনের অন্য এক মহিলা জানান, ওদের দেওয়ালের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন ওখানে কী চলে। কিচেনে গেলে পর্দা দিয়ে রান্না করতে হয়। তা না হলে এত বাজেবাজে কথা বলবে যে সহ্য করা যায় না। যে কোনও মহিলা হলেই হবে। বাচ্চা হতে পারে, বয়স্ক হতেও পারে। মেয়ে দেখলেই ওসব করবে। ছাদে তো উঠতেই পারি না। এনিয়ে থানায় ফোন করেছি আগে। একবার ওরা এমন পটকা ছুড়েছিল যে পর্দাটা জ্বলছিল। প্রায়ই লাইট অফ করে দিয়ে সবাই মিলে চিত্কার করে। মহিলারা কে কোন রংয়ের পোশাক পরে আছে তা উল্লেখ করে গালিগালাজ করে।
পুলিসের তদন্ত উঠে এসেছে প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে ৬১ নম্বর রুমের জানালায় দাঁড়িয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে বলা হয়েছিল। উল্টো দিকে আবাসন থাকায় তিনি ওই কাজ করতে পারছিলেন না। অবশেষে দাদাদের চাপে পড়ে তা করতে হয়েছিল। পুলিস আবাসনের আবাসিকদের অনেকের বক্তব্য, উল্টোদিকের হস্টেল থেকে এত গালিগালাজ করা হয় যে তারা জানালা খুলতে পারেন না। বুধবার সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা যখন পুলিস আবাসনে যান তখন তাদেরও হস্টেল থেকে কটূক্তি করতে ছাড়ল না আবাসিকরা। পুলিস আবাসন জেনেও যে ধরনের কটূক্তি করা হতো। এতে স্পষ্ট যে কী ধরনের দৌরাত্ম হস্টেলে চলতো।
অন্যদিকে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ জানিয়ে দিলেন মেইন হস্টেলে সিসিটিভি বসবে। তিনি বলেন, টেকনোলজিক্য়াল রেস্ট্রিকশন বা তার একটা বাধ্যবাধকতা থেকে থাকে। এ ব্যাপারে বলবে টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা। আমি শুধু ইনিশিয়েট করতে পারি। সব হোস্টেলেই সিসিটিভি বসবে।