Sujay Krishna Bhadra: ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার `কালীঘাটের কাকু`, বুধবার পেশ আদালতে
ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালীঘাটের কাকুকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার তাঁকে সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি উত্তর দেননি। ইডি-র দাবি সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানা কালীঘাটের কাকুর। কিন্তু তথ্য গোপন করার জন্য উত্তর না দিয়ে মেজাজ হারান তিনি।
অয়ন ঘোষাল: দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার কালীঘাটের কাকু সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তে অসহযোগিতা, বয়ানে অসঙ্গতি, তথ্য গোপনের চেষ্টা, তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে।
ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালীঘাটের কাকুকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার তাঁকে সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি উত্তর দেননি।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'কাকু হল, জেঠু হল, এবার হয়তো পিসির সময় আসছে'; ফের বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
ইডি-র দাবি সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানা কালীঘাটের কাকুর। কিন্তু তথ্য গোপন করার জন্য উত্তর না দিয়ে মেজাজ হারান তিনি।
কুন্তল ঘোষের কাছে থেকে টাকা নিয়ে, সেই টাকা কোথায় পাঠাতেন? কার নির্দেশে চাকরি দুর্নীতির এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা নিতেন তিনি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি ‘কালিঘাটের কাকু’।
গত ২০ মে তাঁর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে যে তিনটি কোম্পানির নথি পেয়েছে ইডি, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যে কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্টে প্রচুর কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে দাবি ইডি। সেটা করেছেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। সেই নিয়েও কোনও উত্তর দেননি ‘কালীঘাটের কাকু’।
বিগত কয়েক বছরে তার সম্পত্তির বৃদ্ধির উপরেও নজর রয়েছে ইডি-র। সেই বিষয়ে অসহযোগিতার অভিযোগ কাকুর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও দেড় হাজার পাতার নথি, ও ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং তথ্য পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডি-র। সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কোনও সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন কালীঘাটের কাকু।
আরও পড়ুন: Lakshman Seth: সত্তর পেরিয়ে ফের বিয়ের পিঁড়িতে প্রাক্তন বাম সাংসদ লক্ষণ শেঠ
জিজ্ঞাসাবাদে যখন লাগাতার অসহযোগিতা করছেন কালীঘাটের কাকু, ঠিক তখন তার কাছে থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন এবং এর আগেই গ্রেফতার হওয়া আর এক তৃণমূল নেতার মোবাইল ফোন অন করা হয়। সেখান দেখা যায়, সেই তৃণমূল নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হয়েছে কালীঘাটের কাকুর। সেখানে সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনও উত্তর দেননি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র।
সকাল ১০ টা নাগাদ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মেডিক্যাল করানো হবে। যদি সেই মেডিক্যাল বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে হয়, তাহলে ১১ টার মধ্যে আবার ফিরিয়ে আনা হবে সিজিও তে। অথবা বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের ডাক্তার সিজিও-তে এসে রুটিন মেডিক্যাল পরীক্ষা করে ফিট ফর কোর্ট প্রোডাকশন সার্টিফিকেট দিয়ে যাবেন।
এরপর দুপুরে ১ টা পর্যন্ত জেরা করা হবে তাঁকে। দুপুর ২ টোয় ব্যাঙ্কশাল বিশেষ ইডি সিবিআই আদালতে পেশ করা হবে তাঁকে। সেখানে ১৪ দিন, অর্থাৎ পূর্ণ সময়ে হেফাজতের আর্জি জানাবেন ইডি-র আইনজীবী।
কেন গ্রেফতার কাকু?
২০ মে বাড়ি সহ ১৬ জায়গায় ম্যারাথন তল্লাশিতে একাধিক এমন নথি মেলে, যা কাকুর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকা ৩ কোম্পানির মাধ্যমে আর্থিক তছরুপের প্রমাণ দেয়। এরপর সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের তৃতীয় মোবাইল ফোন ইডি বাজেয়াপ্ত করে। তার আগে সিবিআই ২টি ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল। ৩টি ফোনে প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে ইডি এই ৩ কোম্পানি, যাদের নাম ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড, আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড এবং নয়নিকা এন্ট্রারপ্রাইজ-এর একাধিক বড় স্তরের কর্মীর সঙ্গে কথা বলে এবং নথি তৈরি করতে থাকে। এই নথিগুলি মঙ্গলাবার প্রশ্ন আকারে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র-র সামনে রাখা হয়। প্রথমে বিভ্রান্তিকর ও ভুল উত্তর, এবং পরে বিকেলের দিকে উত্তর এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন ‘কালিঘাটের কাকু’। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গিয়েছে।