ওয়েব ডেস্ক: সিঙ্গুর নিয়ে দলের পলিটব্যুরো বিবৃতির সঙ্গে একমত নন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শীর্ষ আদালতের রায়ের পরে পলিটব্যুরো কার্যত অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভুলের কথা স্বীকার করে নেয়। কিন্তু, সেপথে হাঁটতে নারাজ সূর্যকান্ত।দলীয় মুখপত্রে তিনি লিখেছেন, কিছু ক্রটি বিচ্যুতি ঘটলেও ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু, গোটা অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ভুল ছিল বলে মনে করেন না তিনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সিঙ্গুর ছিল বুদ্ধদেব ভট্টচার্যের স্বপ্ন। সপ্তমবার ক্ষমতায় এসেই যেখানে টাটাদের গাড়ি কারখানার গড়ার কথা ঘোষণা করে বামফ্রন্ট।  কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের  লড়াইয়ে সে স্বপ্ন বাস্তব হয়নি।  উল্টে ৩৪ বছরের রাজ্যপাট হারিয়ে মাসুল গুনতে হয়েছে বামেদের। কফিনে শেষ পেরেক পুঁতেছে শীর্ষ আদালতের রায়।  সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে..বাম আমলে জমি অধিগ্রহণ ছিল বেআইনি। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে CPM পলিটব্যুরো। বিবৃতিতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার ভুল কার্যত স্বীকার করে নেন ইয়েচুরিরা।


আরও পড়ুন- সিঙ্গুর নিয়ে সাফাই দিল সিপিএম পলিটব্যুরো


একদিকে  শীর্ষ আদালতের রায়, তার ওপর পলিটব্যুরোর বিবৃতি। বেশি করে কোণঠাসা করে দেয় রাজ্য ব্রিগেডকে।  সাংবাদিক সম্মেলনে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়  বিমান বসুদের। এবার কলম ধরলেন CPM রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র নিজে। দলীয় মুখপত্রে সিঙ্গুর নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণে পলিটব্যুরোর ভিন্ন সুর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের গলায়। অধিগ্রহণ ভুল মানতে নারাজ তিনি।  তাঁর দাবি, আমরা বুঝেছিলাম, শিল্পায়ন মানে বৃহত্‍, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্পের আনুপাতিক ভারসাম্য ও সমন্বয় বজায় রেখে এগোনো। কোনও একটাকে বাদ দিয়ে কেবল  আরেকটাকে নিয়ে এগোনো যায় না। অযথা সময় নষ্ট না করেও কৃষিজমির মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলিতে সতর্কতার সঙ্গে খেয়াল রেখে, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার খুঁটিনাটি প্রত্যেকটি বিষয়ে সচেতন থেকে অগ্রসর হওয়া। এসবের মধ্যে কোথাও কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটেনি বা ঘটবে না, এমন দাবি করা অসম্ভব।



সিঙ্গুর মামলা ক্লোজড চ্যাপ্টার বলতেও নারাজ CPM রাজ্য সম্পাদক। এখনও কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় দুই বিচারপতি সিঙ্গুরের জমি নিয়ে মোট ৯টি বিষয়কে বিবেচনার জন্য নির্ধারণ করে। বিচারপতিদের মোট ২০৪ পৃষ্ঠার রায়ের ৭২-৭৩ পৃষ্ঠায় এই বিষয়গুলিকে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, এই ৯টি বিষয়ের মধ্যে মাত্র ৩টি বিষয়ে দুই বিচারপতি সহমত হয়েছেন। ২০৪ পৃষ্ঠার রায়ে মতৈক্যের অংশ মাত্র দেড় পৃষ্ঠার মতন(১০৫-১০৬ পৃষ্ঠা)। এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের সুযোগও রাখা হয়েছে।


আরও পড়ুন- সিঙ্গুরে কারখানার গেটে পাহারা বসাচ্ছে কৃষিজমি রক্ষা কমিটি


শেষপর্যন্ত জমি কতটা ফেরত পাওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র।  তৃণমূল সরকারের সিঙ্গুর উত্‍সবকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। সিঙ্গুরের সব মামলার জল কোথা থেকে কোথায় গড়ায় তার তোয়াক্কা না করেই মুখ্যমন্ত্রী এখন উত্‍সবের আয়োজন করেছেন।


বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়ে সাফল্য না পাওয়ার পর একইভাবে বিবৃতি জারি করে পলিটব্যুরো। আসন সমঝোতা করার জন্য কার্যত প্রকাশ্যে কাঠগড়ায় তোলা হয় CPM রাজ্য কমিটিকে। সেই রেশ এখনও চলছে। তারইমধ্যেহঠাত্‍ করে সিঙ্গুর নিয়ে ফের একবার পলিটব্যুরো বিবৃতি  নতুন করে প্রশ্ন তুলছে দলের অন্দরেই।